ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন করে আরও ২৯ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। মারা গেছেন আরও এক নারী। এর আগে গত চার দিনে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৪৭ জন। এ দিয়ে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২৭৬ জনে। রোগীদের অধিকাংশই ঈশ্বরদী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ইডিজেড) শ্রমিক।

আরও পড়ুনপাবনার ঈশ্বরদীতে ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতি, এক নারীর মৃত্যু০২ জুন ২০২৫

ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে মারা যান মাহফুজা খাতুন (২৯) নামের এক নারী। তিনি ইপিজেড কর্মী ও উপজেলা সদরের পিয়ারাখালী জামতলা এলাকার সাগর হোসেনের স্ত্রী। এর আগে গতকাল সোমবার রাতে কনা খাতুন (২৫) নাকে এক নারীর মৃত্যু হয়। তিনিও ইপিজেড কর্মী ছিলেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.

মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত মাহফুজা বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। ডায়রিয়ার সঙ্গে তাঁর প্রচণ্ড বমি হচ্ছিল। বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তিনি মারা যান।

পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গতকাল বিকেল থেকে ঢাকা থেকে আসা রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইইডিসিআর) ছয় সদস্যর একটি প্রতিনিধিদল কাজ শুরু করেছে। প্রতিনিধিদলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক এ এইচ এম মোস্তাফা কামাল। প্রতিনিধিদলটি ইপিজেডসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন ও নমুনা সংগ্রহ করছে বলে জানা গেছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রোগীরা হাসপাতালে আসতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর পর নতুন রোগী হাসপাতালে আসছেন। অনেকে আবার চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। সর্বশেষ আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আরও ২৯ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৫ জন নারী। এ দিয়ে মোট রোগী ভর্তি হলো ২৭৬ জন। এর বাইরে উপজেলা সদরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ইপিজেড হাসপাতালে রোগীরা চিকিৎসা নিয়েছেন। এসব হাসপাতাল থেকে অনেক রোগীর অবস্থার অবনতির পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আলী এহসান বলেন, পরিস্থিতি আগের তুলনায় স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

আইইইডিসিআর–এর প্রতিনিধিদল পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও নমুনা সংগ্রহ করছেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পানিবাহিত কোনো জীবাণু থেকে ডায়রিয়ার এই প্রকোপ তৈরি হয়েছে। রোগীদের সঠিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা চলছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স পর স থ ত এক ন র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মাদারীপুরে কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু

মাদারীপুরে কারা হেফাজতে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফ আলী মিয়া (৭০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আজ সোমবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, গতকাল রোববার দুপুরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে ইউসুফ আলী মিয়াকে মাদারীপুর জেলা কারাগার থেকে প্রথমে মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়।

ইউসুফ আলী মিয়া রাজৈর উপজেলার কানাইপুর এলাকার বাসিন্দা, তিনি টেকেরহাট আবাসিক এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ছাড়াও তিনি রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন।

মাদারীপুর কারাগারের চিকিৎসা কর্মকর্তা অখিল সরকার বলেন, ‘হঠাৎই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। অবস্থার অবনতি হলে আমরা তাঁকে দ্রুত সদর হাসপাতালে পাঠাই। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হৃদ্‌রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর লাশ এখন ঢাকা মেডিকেলে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২৮ নভেম্বর রাজৈর থানায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও বোমা বিস্ফোরণের একটি মামলা করেন ইশিবপুর ইউনিয়নের পাঠানকান্দি গ্রামের শাহ আলম শেখ ওরফে কোব্বাস শেখ। এতে ইউসুফ আলী মিয়াকে ৬৪ নম্বর আসামি করা হয়। তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও পরে রাজৈর থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রায় তিন মাস ধরে তিনি কারাবন্দী ছিলেন এবং সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

মাদারীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার শাহ রফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল দুপুরে হঠাৎ ইউসুফ মিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন। কারাগারের চিকিৎসক তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে পাঠান। পরে সেখান থেকে ইউসুফ আলী মিয়াকে ঢাকা মেডিকেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এরপর আজ সকালে তিনি মারা গেছেন। ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাদারীপুরে কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু