জিআইজেএনের তালিকায় সমকালের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন
Published: 3rd, June 2025 GMT
গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্কের (জিআইজেএন) এপ্রিল–মে মাসের শীর্ষ প্রতিবেদনের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে সমকালে প্রকাশিত ‘হোটেলে তল্লাশি চালাতে গিয়ে তরুণীকে ধর্ষণ’ শীর্ষক অনুসন্ধান। গত ২৪ মে সমকালের প্রথম পৃষ্ঠায় এ খবর প্রকাশিত হয়। মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১৪ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে এক শিক্ষার্থীসহ তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও হোটেলকর্মীদের ভাষ্য, তল্লাশি চালানোর পর ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ কারণে যাত্রাবাড়ী থানা পাহারার দায়িত্বে থাকা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তিনজনকে আটক করে পেটায়। এতে দু’জনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন– যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী বড় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম ইয়াসিন (১৯) ও অনলাইনে পোশাক বিক্রেতা সাঈদ আরাফাত শরীফ (২০)। কিছু সময়ের ব্যবধানে আরেকটি ধর্ষণের অভিযোগে আবাসিক হোটেল রোজ ভিউর ব্যবস্থাপক রাহাত হাসান বিপুকে (৫৩) সায়েদাবাদ এলাকায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তখনকার কয়েকটি ভিডিওতে ভুক্তভোগী তরুণীর জবানবন্দি, অভিযুক্তদের নির্মমভাবে পেটানো এবং ক্ষমা চাওয়ার প্রমাণ রয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজন আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় অভিযুক্তরা অপরাধ স্বীকার করেন। তখন তাদের পেটানো হয়।
এদিকে নিহতদের মধ্যে দুজনকে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ দেখিয়ে নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান যাচাই কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ বলেন, যেহেতু ওই ঘটনা ১৪ আগস্টের, তাই তাদের জুলাই শহীদ বলার সুযোগ নেই। এর পরও কোনোভাবে সাইদুল ইসলাম ইয়াসিন ও সাঈদ আরাফাত শরীফকে শহীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর ভিত্তিতে তাদের পরিবার ফাউন্ডেশন থেকে টাকাও নেন।
জিআইজেএনের এপ্রিল–মে মাসের উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদনের তালিকায় স্থান পেয়েছে আরও তিনটি প্রতিবেদন। সেগুলো হলো– যমুনা টেলিভিশনের ‘সরকারি এলপি গ্যাসে লুটপাট’; নিউ এইজের ‘সুবিধা নিয়ে সমালোচনার মুখে প্রধান উপদেষ্টা’ এবং প্রথম আলোর ‘নবাবদের দরিয়া–ই–নূর হীরার খোঁজে’।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী
রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।
৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগেতবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।