কক্সবাজারে কোরবানির পশুর হাটে বেচাকেনা জমে উঠছে। হাটে চাহিদা বেশি ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর। ১০ থেকে ২৮ মণ ওজনের অনেক ষাঁড় বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে আসা হলেও এসবের ক্রেতা মিলছে কম।

জেলার ৪টি পৌরসভা ও ৯টি উপজেলায় পশুর হাট রয়েছে ৯৪টি। এসব হাটে গতকাল মঙ্গলবার অন্তত ২০ হাজার কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে বলে ইজারাদার সূত্রে জানা গেছে। হাট–সংশ্লিষ্টদের দাবি, আজ বুধবার থেকে বিক্রি আরও বাড়বে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাট এলাকার অস্থায়ী পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম হয়ে উঠেছে বাজার। হাটে বিক্রির জন্য আনা হয়েছে ৫ শতাধিক পশু। এর মধ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৮ মণ ওজনের গরু। এসব গরু ১ থেকে ২ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাটে বড় আকারের অনেক ষাঁড় দেখা যায়। এসব ষাঁড় ঘিরে দর্শনার্থীদের ভিড় বেশি। তবে দরদামেই সীমাবদ্ধ থাকছেন ক্রেতারা।

শহরের সমিতিপাড়ার ‘মায়ের দোয়া’ খামারের মালিক নুরুল ইসলাম হাটে আনেন ১০ থেকে ২৮ মণ ওজনের ১০টি গরু। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ২৮ মণ ওজনের ষাঁড় ‘কালা বাহাদুর’। এটি ঘিরে দেখা গেছে উৎসুক মানুষের ভিড়। খামারি নুরুল ইসলাম (৫৩) বলেন, সন্ধ্যা পর্যন্ত কালা বাহাদুরের দাম উঠেছে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা। এই দামে বিক্রি সম্ভব নয়। তবে তাঁর আশা, আগামী কয়েক দিনে ষাঁড়টির ন্যায্য দাম পাবেন।

হাটে বড় গরুর তেমন ক্রেতা নেই। কোরবানির জন্য লোকজন মাঝারি আকারের গরু কিনছেন বেশি। বড় গরু বেচাবিক্রি না হলে কয়েক হাজার খামারি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেনখলিলুর রহমান,  স্বত্বাধিকারী, কে আর এগ্রো ফার্ম

একই হাটে বিক্রির জন্য ২৮টি গরু নিয়ে আসেন কক্সবাজার পৌরসভার বিজিবি ক্যাম্প এলাকার কে আর এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী খলিলুর রহমান। গতকাল বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিক্রি করেন দুটি গরু। ৫ মণ ওজনের একটি গরু দেড় লাখ টাকা এবং সোয়া চার মণ ওজনের আরেকটি গরু ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। খলিলুর রহমান (৫৫) বলেন, হাটে বড় গরুর তেমন ক্রেতা নেই। কোরবানির জন্য লোকজন মাঝারি আকারের গরু কিনছেন বেশি। বড় গরু বিক্রি না হলে কয়েক হাজার খামারি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। হাটের ইজারাদার রাশেদুল হক বলেন, মঙ্গলবার বেলা ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টায় ১২০টি গরু বিক্রি হয়েছে। আজ বুধবার থেকে প্রতিদিন বিক্রি হাজার ছাড়িয়ে যাবে।

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের রামুর মিঠাছড়ির হাঁড়িরমাথা এলাকার পাঁচ কিলোমিটারজুড়ে কোরবানির পশু বিক্রির হাট বসেছে। গতকাল মঙ্গলবার এক দিনে এই হাটে বিক্রি হয়েছে ৪ হাজারের বেশি গরু-মহিষ। হাটে আনা হয় ২০ হাজারের বেশি পশু। ইজারাদার আবুল হোসেন বলেন, মাঝারি আকারের গরু বেশি বিক্রি হচ্ছে। বড় পশুর ক্রেতা একেবারেই কম। জেলার উখিয়া, টেকনাফ, রামু, কক্সবাজার সদর ও ঈদগাঁও উপজেলার অন্তত ১৫টি হাট ঘুরেও দেখা যায় একই চিত্র।

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের রামুর মিঠাছড়ির হাঁড়িরমাথা পশুর হাট.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মণ ওজন র ক রব ন র র জন য গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

আসামি শতবর্ষী ইদ্রিস শেখের আদালতে হাজিরা ও প্রিজন ভ্যানে যাত্রা

তখন সময় দুপুর ১২টা ৩ মিনিট। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের তৃতীয় তলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১–এর এজলাস কক্ষ থেকে একজন বৃদ্ধ ব্যক্তিকে একজন পুলিশ সদস্য হাত ধরে সিঁড়ির কাছে নিয়ে যেতে থাকেন। সেই বৃদ্ধের ডান হাতে একখানা লাঠি। লাঠির ওপর ভর দিয়ে তিনি সিঁড়ির কাছে যেতে থাকেন।

সিঁড়ির কাছে যাওয়ার পর তিনি কোনোভাবেই সেই সিঁড়ি বেয়ে তৃতীয় তলা থেকে দ্বিতীয় তলায় আসতে পারছিলেন না। দুজন পুলিশ কনস্টেবল অশীতিপর এই বৃদ্ধের দুই বাহু ধরে রাখেন।

পরে ইদ্রিস শেখের দুই বাহু ধরে দ্বিতীয় তলায় আনা হয়। তখন ইদ্রিস শেখ হাঁপাচ্ছিলেন। পরে দুজন কনস্টেবল আবার ইদ্রিস শেখের দুই বহু ধরে রাখেন। এরপর খুব সাবধানে দুই তলার সিঁড়ি দিয়ে ইদ্রিস শেখ লাঠির ওপর ভর করে নিচতলায় নামেন। তৃতীয় তলা থেকে নিচতলায় নামতে ইদ্রিস শেখের সময় লেগেছে পাঁচ থেকে সাত মিনিট। ইদ্রিস শেখকে যখন নিচতলার সিঁড়ি দিয়ে হাজতখানার সামনে আনা হয়, তখন তাঁর ছেলে বাবুল শেখ কেঁদে ফেলেন।

বাবুল শেখ তখন চিৎকার দিয়ে বলে ওঠেন, ‘আমার বাবার বয়স এখন ১২০ বছর। এই ১২০ বছর বয়সেও আমার বাবাকে জেলের ঘানি টানতে হবে।’

প্রিজন ভ্যানে ইদ্রিস শেখ। মঙ্গলবার ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে

সম্পর্কিত নিবন্ধ