আজ পবিত্র হজ, ‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর আরাফাতের ময়দান
Published: 5th, June 2025 GMT
আজ বৃহস্পতিবার জিলহজ মাসের ৮ তারিখ পবিত্র হজের দিন। ভোর থেকে দলে দলে হজযাত্রীরা মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানে হাজির হচ্ছেন।
আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, আরাফাতের ময়দান মুখর হয়ে উঠেছে- ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাক।’ অর্থাৎ আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।
হজের তিনটি ফরজের একটি আরাফাতের ময়দানে হাজিদের অবস্থান। এটিই হচ্ছে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। সারা বিশ্ব থেকে আসা নানা ভাষার, নানা বর্ণের মুসলিমরা আরাফাতের ময়দানে সারা দিন অবস্থান করবেন। আরাফার আদিগন্ত মরু প্রান্তর এক অলৌকিক পুণ্যময় শুভ্রতায় ভরে উঠেছে। সফেদ-শুভ্র দুই খণ্ড কাপড়ের এহরাম পরিহিত হাজিদের অবস্থানের কারণে সাদা আর সাদায় একাকার। হাজিরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এখানে অবস্থান করে আল্লাহর জিকির-আসকার ও প্রার্থনায় মগ্ন থাকবেন। হাজিরা এখানে জোহর ও আসর নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন।
আরো পড়ুন:
পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু, মিনায় হাজিরা
বাংলাদেশি হাজিদের সেবায় মিনায় দায়িত্ব পালন করবে ১৮ টিম
আরাফাতের ময়দান মক্কা থেকে ২২ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। এটি দৈর্ঘ্যে দুই কিলোমিটার, প্রস্থেও দুই কিলোমিটার। এ ময়দানের তিন দিক পাহাড়বেষ্টিত।
আরাফাতে রয়েছে জাবালে রহমত বা রহমতের পাহাড়। এ ময়দানে উপস্থিত হজযাত্রীদের উদ্দেশে খুতবা দেওয়া সুন্নত। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.
আরাফার ময়দানের মসজিদে নামিরায় জোহরের নামাজের আগে এ বছর পবিত্র হজের খুতবা দেবেন মসজিদুল হারামের প্রখ্যাত খতিব ও সৌদি সিনিয়র ওলামা পরিষদের সদস্য ড. শায়খ সালেহ বিন হুমায়েদ। আরাফাতের খুতবা এবার ৩৪ ভাষায় সম্প্রচার করা হবে। বিগত বছরের মতো এবারও বাংলায় খুতবার লাইভ অনুবাদ করা হবে।
মাগরিবের নামাজের আযানের পর মুজদালিফার উদ্দেশ্যে আরাফার ময়দান ত্যাগ করবেন হাজিরা। মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ এশার ওয়াক্তে একত্রে পড়বেন এবং সারা রাত অবস্থান করবেন। মিনায় জামরাতে নিক্ষেপ করার জন্য ৭০টি কংকর এখান থেকে সংগ্রহ করবেন। মুজদালিফায় ফজরের নামাজ পড়ে পুনরায় মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন। ১০ জিলহজ মিনায় পৌঁছার পর হাজিদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে মিনাকে ডান দিকে রেখে হাজিরা দাঁড়িয়ে শয়তানকে (জামারা) পাথর নিক্ষেপ করবেন। দ্বিতীয় কাজ আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করা। অনেকেই মিনায় না পারলে মক্কায় ফিরে গিয়ে পশু কোরবানি দেন। তৃতীয় পর্বে মাথা ন্যাড়া করা। চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত। জিলহজের ১১ তারিখ মিনায় রাত যাপন করে দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হাজিরা বড়, মধ্যম ও ছোট শয়তানের ওপর সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন।
১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে পুনরায় একইভাবে হাজিরা তিনটি শয়তানের ওপর পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা শেষ হলে অনেকে সূর্যাস্তের আগেই মিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যাবেন। মক্কায় পৌঁছার পর হাজিদের একটি কাজ অবশিষ্ট থাকে। সেটি হচ্ছে কাবা শরিফ তাওয়াফ করা। একে বলে বিদায়ি তাওয়াফ। স্থানীয়রা ছাড়া বিদায়ি তাওয়াফ অর্থাৎ কাবা শরিফে পুনরায় সাত বার চক্কর দেওয়ার মাধ্যমে হাজিরা সম্পন্ন করবেন পবিত্র হজব্রত পালন।
সৌদি কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এবার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ১৫ লাখ হজযাত্রী হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন।
তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর হজযাত্রী ছিলেন ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ১৬৪ জন। এর মধ্যে ২ লাখ ২১ হাজার ৮৫৪ জন ছিলেন সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ হজযাত্রী। সেবার বিশ্বের ২০০টির বেশি দেশের মানুষ হজ করেন।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হজ অবস থ ন কর হজয ত র আল ল হ শয়ত ন করব ন জ লহজ ন করব
এছাড়াও পড়ুন:
‘বাইসাইকেল থিভস’-এর সেই শিশুশিল্পী মারা গেছেন
ভিত্তোরিও দে সিকার ক্ল্যাসিক সিনেমা ‘বাইসাইকেল থিভস’-এর শিশু তারকা এনজো স্তাইওলা মারা গেছেন। গত বুধবার ইতালিকর দৈনিক লা রেপুব্লিক প্রথম স্তাইওলার মৃত্যুর খবর জানায়। পরে অভিনেতার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে দ্য হলিউড রিপোর্টারসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
‘বাইসাইকেল থিভস’ সিনেমায় স্তাইওলার বাবার চরিত্রে অভিনয় করেন লামবের্তো মাজ্জোরানি। সিনেমায় দেখা যায়, কর্মহীন বাবা তাঁর ছেলেকে নিয়ে চুরি হওয়া সাইকেল খুঁজে বেড়ান রোমের রাস্তায়। ওই সাইকেল ছাড়া তাঁর কাজ করার উপায় নেই, ছেলেকে খাওয়ানোরও উপায় নেই। চুরি হওয়া সাইকেল যেন একেবারে ভেঙে দেয় বাবার বুক। হতাশায় ক্লান্ত হয়ে একসময় তিনিও একটি সাইকেল চুরি করেন, কিন্তু ধরা পড়ে যান পথচারীদের হাতে। তারা তাঁকে ছেড়ে দিলেও ছেলের সামনে অপমানিত হন তিনি। এই সিনেমাই চিরতরে চলচ্চিত্র ইতিহাসে অমর করে রাখে ছোট্ট এনজো স্তাইওলাকে।
১৯৩৯ সালের ১৫ নভেম্বর রোমে জন্মগ্রহণ করেন স্তাইওলা। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি প্রথমবার ভিত্তরিও দে সিকোর সঙ্গে দেখা হওয়ার স্মৃতি ভাগাভাগি করেন।
‘বাইসাইকেল থিভস’-এর দৃশ্য। আইএমডিবি