রোম যখন পুড়ছিল, নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন—এ রকম একটা কথা প্রচলিত আছে।

প্রতীকী অর্থে এর সঙ্গে মিল রেখে কেউ কেউ বলতে পারেন—এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে যখন মানুষ পদদলিত হয়ে মারা যাচ্ছিলেন, বিরাট কোহলি তখন ভেতরে উৎসব করছিলেন!

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুর রাজপথে কাল কী ঘটেছে, তা অনেকেরই জানা। আইপিএলের ১৮ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এই শহরের দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, যা কোহলিরও প্রথম আইপিএল শিরোপা।

এমন অর্জনের পর স্বাভাবিকভাবেই বেঙ্গালুরু সমর্থকদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা কাজ করেছে। তাই শিশু থেকে বুড়ো—সব বয়সের মানুষ চ্যাম্পিয়ন দলকে বরণ করে নিতে নেমে এসেছিলেন রাস্তায়। কিন্তু বেঙ্গালুরুবাসীর সেই আনন্দ বিষাদে রূপ নিয়েছে হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে ১১ জন প্রাণ হারানোয় ও অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার ঘটনায়।

মর্মান্তিক এই ঘটনা কাল ভারতের সব সংবাদমাধ্যমের শীর্ষ শিরোনাম হলেও ‘শো মাস্ট গো অনের’ মতো করে কোহলি-পতিদার-ক্রুনাল-সল্টরা যথারীতি নিজেদের মাঠে উৎসব চালিয়ে গেছেন। এ নিয়ে অনেকেই বেঙ্গালুরু মালিকপক্ষের ওপর দায় চাপাচ্ছেন, দোষ দিচ্ছেন কোহলিদেরও।

কিন্তু ভারতের সাবেক পেসার অতুল ওয়াসনের দাবি, স্টেডিয়ামের বাইরে মানুষ মারা যাচ্ছে—এই খবর কোহলির কানে তৎক্ষণাৎ পৌঁছায়নি। জানলে অবশ্যই উৎসব থামিয়ে দিতেন।

বার্তা সংস্থা পিটিআইকে অতুল বলেছেন, ‘আমি কোনোভাবেই এটা বিশ্বাস করি না যে, কোহলি ও তার দলের অন্যরা খেলোয়াড়েরা যদি জানত বাইরে মানুষ মারা যাচ্ছে, তাহলে তারা তখনই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান থামিয়ে দিত।’

বেঙ্গালুরু ট্র্যাজেডি নিয়ে বার্তা সংস্থা এএনআইকেও নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অতুল ওয়াসন, ‘বাইরে কী ঘটছে, কোহলি তা তখনই জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসত। তাহলে এমন ঘটনা ঘটত না।’

আরও পড়ুনকোহলিদের উৎসবে ১১ জনের মৃত্যু: দায় কার—ফ্র্যাঞ্চাইজি না রাজ্য সরকারের৩ ঘণ্টা আগে

ভারতের হয়ে ৪ টেস্ট ও ৯ ওয়ানডে খেলা ওয়াসনের দাবি, শুধু রাজনীতিবিদ আর করপোরেট জগতের মানুষদের পক্ষেই হৃদয় বিদারক ঘটনার পরও অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়া সম্ভব, ‘রাজনীতিবিদ ও করপোরেটদের সম্পর্ক আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, তারা নির্মম এবং তাদের চামড়া মোটা। আরসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজিও তাই। ফ্র্যাঞ্চাইজিরা এসবের পরোয়া করে না। কারণ, তাদের খরচের বিস্তারিত হিসাব ও রাজস্ব দেখাতে হয়। তারা হয়তো (বাইরের পরিস্থিতি সম্পর্কে) জানত। এখনো যোগাযোগের ঘাটতি ছিল।’

কোহলি যে সত্যিই মর্মান্তিক ঘটনার বিষয়টি অনেক দেরিতে জেনেছেন, তা বোঝা গেছে ঘটনার অনেক পরে রাত ১১টার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে। ভারত ও বেঙ্গালুরুর কিংবদন্তি এই ব্যাটসম্যান লিখেছেন, ‘ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। বলার মতো অবস্থা নেই। খুবই ভয় পেয়েছি।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদ তো সবাইকে নিয়ে কাটানোর উৎসব

ছবি: এআই/প্রথম আলো

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৯ গোলের উৎসবের ম্যাচ, ফ্রান্সকে হারিয়ে ফাইনালে স্পেন
  • বিজয় উৎসবে নিহত ১১: ব্যাঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে পুলিশের এফআইআর
  • কোহলিদের উৎসবে ১১ জনের মৃত্যু: দায় কার—ফ্র্যাঞ্চাইজি না রাজ্য সরকারের
  • ঈদুল আজহার স্মৃতি ও সামাজিকতা
  • আইপিএল জয়োৎসবে স্টেডিয়ামের বাইরে পদদলিত হয়ে ১১ জনের মৃত্যু
  • বেঙ্গালুরুতে আইপিএলে আরসিবির শিরোপা জয় উদ্‌যাপনে পদদলিত হয়ে নিহত ১০
  • আরসিবির জয়োৎসবে বেঙ্গালুরুতে পদদলিত হয়ে ১১ মৃত্যু
  • ঈদ তো সবাইকে নিয়ে কাটানোর উৎসব
  • আরসিবির জয়োৎসবের মধ্যে বেঙ্গালুরুতে পদদলিত হয়ে ১১ মৃত্যু