বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ধনী প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিশংসনের দাবি সমর্থন করেছেন। এক সময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের মধ্যে চলমান কথার যুদ্ধে এটিই সর্বশেষ আঘাত।

‘প্রেসিডেন্ট বনাম ইলন। কে জিতবে? আমি বাজি ধরছি ইলনের পক্ষে। ট্রাম্পকে অভিশংসন করা উচিত এবং জেডি ভ্যান্সকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা উচিত,’ বৃহস্পতিবার দুপুরে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ একটি পোস্টে মন্তব্য করেন মালয়েশিয়াভিত্তিক ডানপন্থী লেখক ইয়ান মাইলস চিওং। প্রায় ২০ মিনিট পর চিওংয়ের ওই পোস্টের জবাবে মাস্ক শুধু লেখেন, ‘হ্যাঁ’। 

বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ও মাস্কের সম্পর্ক হঠাৎ করেই জনসমক্ষে চলে আসে। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্জের সঙ্গে ওভাল অফিসে বৈঠকের সময় সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, মাস্কের আচরণে তিনি ‘খুবই বিস্মিত ও হতাশ।’

জবাবে মাস্ক সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেন, প্রেসিডেন্টের ২০২৪ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে জয়ের পেছনে তাঁর ভূমিকা ছিল। পাশাপাশি তিনি এক্স-এ একটি পোস্টে অভিযোগ করেন, যৌন অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত ধনকুবের জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ট্রাম্পের।

মাস্ক লিখেছেন, ‘এবার বড় বোমা ফেলার সময়। ট্রাম্প এপস্টাইনের নথিতে আছেন। এটাই আসল কারণ যে, এই নথিগুলো এখনও প্রকাশ করা হয়নি।’

পরে এক্স পোস্টে মাস্ক আরও লেখেন, ‘এই পোস্টটি মনে রাখুন। সত্য একদিন প্রকাশ পাবে।’

মাস্কের ‘এপস্টাইন ফাইল’ দাবি প্রসঙ্গে ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথম প্রতিক্রিয়ায় হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ‘বড়, সুন্দর বিল’ এর প্রশংসা করেন এবং ইঙ্গিত দেন,  মাস্কের আরও আগেই তার বিরোধিতা করা উচিত ছিল।

‘ইলন যদি আমার বিরোধিতা করে, তাতে আমার আপত্তি নেই। তবে সেটা মাসখানেক আগেই করা উচিত ছিল। এটি কংগ্রেসে উত্থাপিত অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিল। এতে ব্যয় ১.

৬ ট্রিলিয়ন ডলার কমানো হয়েছে এবং ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। যদি এই বিল পাস না হয়, কর ৬৮ শতাংশ বাড়বে এবং আরও খারাপ পরিস্থিতি হবে। আমি এই বিশৃঙ্খলা তৈরি করিনি, আমি এটি ঠিক করতে এসেছি। এই বিল আমাদের দেশকে মহত্মের পথে এগিয়ে নেবে। মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন।’ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাস্ক ও চিওংয়ের পোস্টের জবাবে হোয়াইট হাউস একটি বিবৃতিতে এসব কথা বলে। 

‘এটি ইলনের দুঃখজনক এক আচরণ, যিনি একটি বড়, সুন্দর বিলে নিজের পছন্দমতো নীতি না থাকায় অসন্তুষ্ট। প্রেসিডেন্ট এখন এই ঐতিহাসিক আইন পাস করানো এবং দেশকে আবার মহৎ করে তোলার দিকেই মনোযোগী’ এক বিবৃতিতে বলেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক য ক তর ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • মুসলিম পরিবারে শিশুর নিরাপত্তা
  • পুরোপুরি বিলুপ্তির পর উগান্ডায় আবার ফিরল গন্ডার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের