রাজশাহীর বাগমারায় পানবরজে কাজ করার সময় শিয়ালের কামড়ে এক নারীসহ ১৩ জন আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের সাইপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিদের সবাই বাসুপাড়া ইউনিয়নের সাইপাড়া ও হলুদঘর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে সাইপাড়া গ্রামের ইমান আলী (৪৫), পারভিন খাতুন (৩৪) ও ফারুক হোসেন (৬৮) বেশি আহত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজন জানান, আজ সকালে তাঁরা পানবরজে কাজ করতে গিয়েছিলেন। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই শিয়াল আক্রমণ করে তাঁদের হাত–পায়ে কামড় দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এভাবে সকাল আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে পানবরজে কয়েকজনকে কামড় দেয় শিয়ালটি। এ ঘটনার পরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তাঁরা পানবরজে যাওয়া বন্ধ করেছেন। সাইপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বদিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা আতঙ্কে আপাতত বাইরে যাচ্ছি না।’

আহত ইসাহাক আলী (৬৭) বলেন, ‘সকালে পানবরজে কাম করার সুময় পিছন থেইক্যা একটা শেয়াল আইস্যা খচ কইরা কামড় দিইয়্যা চলে গেছে।’ সাইপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও বিএনপির স্থানীয় নেতা ইয়াছিন আলী বলেন, ‘আজ সকালে পানবরজে গিয়ে শিয়ালের কামড়ের শিকার হয়েছি। পেছন থেকে লাফ দিয়ে শিয়াল কামড় দিয়েই চলে গেছে।’

আজ সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিয়ালের কামড়ে আহত ১২ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা লোকমান হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এসব রোগীকে টিকা দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশের পায়ে ক্ষত হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আহসান হাবিব আজ সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, শিয়াল সাধারণত দুটি কারণে আক্রমণ করে। প্রথমত, কেউ প্রাণীগুলোকে আঘাত করলে সংঘবদ্ধ হয়ে আক্রমণে যায়। আরেকটি হলো খাদ্যসংকট। এখন শিয়ালের খাবারের খুব অভাব। ক্ষুধার্ত হয়ে এগুলো লোকালয়ে গিয়ে লোকজনের ওপর আক্রমণ করে। মনে হচ্ছে, ক্ষুধার্ত শিয়ালই আক্রমণ করেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে এবং আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আহত ব উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে

৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।

আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫

৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।

প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।

পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।

আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—

পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’

আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ