দাঁতের ব্যথা হলে দাঁতের মর্ম বোঝা যায়। যে কারণে দাঁতের যত্ন নিতে বলেন বিজ্ঞানীরা। এই দাঁতের বিকাশ ঘটেছে ৫০ কোটি বছর বয়সী মাছ থেকে। এমনটাই মনে করেন বিজ্ঞানীরা। ওডোনটোড নামের শক্ত কাঠামো মাছের মধ্যে তৈরি হয়। সে সময় প্রথমে মুখে নয় বরং প্রাচীনতম মাছের বাহ্যিক বর্ম হিসেবে দাঁতের আবির্ভাব হয়েছিল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। প্রাচীন মাছের সংবেদনশীল অঙ্গ থেকে দাঁত বিবর্তিত হয়েছে। দাঁতের পূর্বসূরি ওডোনটোড প্রায় ৫০ কোটি বছর আগে মাছের বর্ম হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। আধুনিক মাছের বাহ্যিক দাঁতের টিস্যুতে যে স্নায়ু সংবেদনশীলতা দেখা যায়, তা সেই প্রমাণকে নিশ্চিত করছে। নতুন এক গবেষণায় বিভিন্ন প্রাণীর দাঁতের শুরুটা কেমন ছিল তা নিয়ে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ৫০ কোটি বছর আগে দাঁত চিবানোর চেয়ে ভিন্ন উদ্দেশ্যে বিবর্তিত হয়েছিল বলে জানা যায়। দাঁতের সঠিক উৎপত্তি ও কাজ নিয়ে বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিনের প্রশ্নের উত্তর মিলেছে এই গবেষণাপত্রে।

৫০ কোটি বছর আগে মাছের শরীরে ওডোনটোড নামের শক্ত কাঠামো বিকশিত হয়। এখনকার হাঙর, স্টিংরে ও ক্যাটফিশের মাইক্রোস্কোপিক দাঁত দেখা যায়। এসব দাঁত আধুনিক মাছের ত্বককে বালুর টুকরার মতো রুক্ষ করে তোলে। আদি মাছের ওডোনটোড কেন আবির্ভূত হয়েছিল, তা নিয়ে বেশ কয়েকটি তত্ত্ব রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়, আদি মাছেরা শিকারিদের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য এমন অঙ্গের ওপর ভরসা করত। পানির মধ্য দিয়ে চলাচলে সাহায্য নিতে বা খনিজ পদার্থ সংরক্ষণ করতে ওডোনটোডের বিকাশ ঘটতে পারে। নেচার জার্নালে প্রকাশিত নতুন গবেষণায় বলা হচ্ছে, মূলত সংবেদনশীল অঙ্গ হিসেবে ওডোনটোড তখন ব্যবহৃত হতো।

যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ইয়ারা হ্যারিডি দাঁতের উৎপত্তি অনুসন্ধান করেন। যদিও তিনি মেরুদণ্ডযুক্ত প্রাণীর প্রাচীনতম জীবাশ্মের তথ্য জানার চেষ্টা করছিলেন। বিজ্ঞানী হ্যারিডি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জাদুঘর থেকে শত শত মেরুদণ্ডী প্রাণীর নমুনা বিশ্লেষণ করেন। সিটি স্ক্যানার ব্যবহার করে প্রাণীদের নমুনা বিশ্লেষণ করেন। তিনি মুখের ডেন্টিনের ওপর মনোযোগ দেন। এটি দাঁতের ভেতরের স্তর, যা সজ্জার স্নায়ুতে সংবেদনশীল তথ্য পাঠায়। ক্যামব্রিয়ান যুগের অ্যানাটোলেপিস নামের একটি জীবাশ্মই নতুন তথ্য জানার সুযোগ করে দেয়। এই জীবাশ্মের বহিঃকঙ্কালে টিউবুল নামের ওডোনটোডের নিচে ছিদ্র রয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় তাদের মধ্যে একসময় ডেন্টিন ছিল। এই অ্যানাটোলেপিসই মাছকে একসময় জীবাশ্মবিদেরা ইতিহাসের প্রথম পরিচিত মাছ হিসেবে আখ্যা দেন।

গবেষণায় দেখা যায়, জীবাশ্মের টিউবুল আর্থ্রোপডের সেন্সিলা নামের সংবেদনশীল অঙ্গের মতো দেখতে। এটি ক্রাস্টেসিয়ান ও পোকামাকড়দের একটি দল। এ কারণে শক্তিশালী অ্যানাটোলেপিসকে অমেরুদণ্ডী প্রাণীর পদে অবনমিত করা হয়েছিল। আদি মাছ কাঁকড়া, বিচ্ছু ও মাকড়সার মতো আধুনিক আর্থ্রোপডদের মতো তাপমাত্রা, কম্পন ও এমনকি গন্ধ উপলব্ধি করতে এই অঙ্গ ব্যবহার করত। গবেষকেরা বলেছেন, প্রায় ৪৬ কোটি ৫০ লাখ বছর আগের অ্যানাটোলেপিস ও মেরুদণ্ডী প্রাণীর মধ্যে এ বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আশ্চর্যজনক মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। বিজ্ঞানী হ্যারিডি বলেন, ‘আমরা আধুনিক মাছের ওপর পরীক্ষা চালিয়েছি, যা ক্যাটফিশ, হাঙরসহ বিভিন্ন মাছের বাইরের দাঁতের স্নায়ুর উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে। পরীক্ষায় জানা যাচ্ছে, মাছের মুখের বাইরের ওডোনটোডের দাঁতের টিস্যু সংবেদনশীল। এসব টিস্যু সম্ভবত প্রথম দিকের ওডোনটোডের মতো একই রকম ছিল। আর্থ্রোপড ও প্রাথমিক মেরুদণ্ডী প্রাণীরা স্বাধীনভাবে একই জৈবিক ও পরিবেশগত সমস্যার জন্য একই রকম সংবেদনশীল অঙ্গ তৈরির মাধ্যমে সমাধান তৈরি করেছিল।’

শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী নীল শুবিন বলেন, এসব আদিম প্রাণী বেশ তীব্র শিকারি এক পরিবেশে বিবর্তিত হয়েছিল। তাদের চারপাশের পরিবেশের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য অনুভব করা ভীষণ প্রয়োজন ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাছের চোয়াল বিকশিত হয়। আর ধীরে ধীরে মুখের কাছে সূক্ষ্ম কাঠামো হিসেবে দাতেঁর বিকাশ ঘটে। ধীরে ধীরে কিছু চোয়ালওয়ালা মাছের মুখের কিনারায় সূক্ষ্ম ওডোনটোড দেখা যায় আর কিছু মাছের মুখে দাঁত হিসেবে ঢুকে যায়।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ৫০ ক ট

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ