হাসপাতাল ঢুকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠকসহ ১০ জনকে পিটুনি
Published: 9th, June 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক রেদোয়ান সালেহীন নাঈমসহ অন্তত ১০ জনকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (৮ জুন) রাত ৯টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
রামগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল বাশার বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া মাসুদ, তুষার ও কামালকে আটক করা হয়েছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার বিকেলে উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের শৈরশই গ্রামের গনক বাড়ির উঠানে রাহুল ও সাফোয়ান নামে দুই কিশোর ফুটবল খেলছিল। তখন একই বাড়ির এনজিও কর্মী সোহাগ আলমের এক বছর বয়সী শিশু আনাছুর রহমানের মাথায় ফুটবল গিয়ে লাগে। এতে সে আহত হয়। এ ঘটনায় আহত শিশুর মা আমেনা আক্তার বিথী রাহুল ও সাফোয়ানের কাছে ফুটবল মারার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। তখন রাহুল ও সাফোয়ানের স্বজনদের সঙ্গে আমেনা আক্তারের বাকবিতাণ্ডর ঘটনা ঘটে।
আরো পড়ুন:
ঈদে বিএমইউর বহির্বিভাগ খোলা থাকবে ৫, ৮ ও ১১ জুন
দেশে-বিদেশে আইসিইউতে ১ বছর, অবশেষে চোখ খুললেন জব্বার
সন্ধা সাড়ে ৬টার দিকে শিশু শিশু আনাছুর রহমানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাকে তার বাবা সোহাগ আলম রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে রওনা হন। এসময় রাহুলের বাবা রাজন, সাফোয়ানের বাবা লিপনসহ কামাল এবং জাহাঙ্গীর সোহাগকে আইনের আশ্রয়ে না নেওয়ার হুমকি দেন।
শিশু আনাছুরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সংলগ্ন আঙ্গারপাড়া এলাকার রাহুল ও সাফোয়ানের আত্মীয় মাসুদ, তুষার, কামালসহ কয়েকজন হাসপাতালে যান। এক পর্যায়ে তারা আনাছুরের ফুফু জান্নাতুল ফেরদাউসকে চুল টেনে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে।
বিষয়টি আনাছুরের বাবা সোহাগ আলম তার নিকটাত্মীয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রেদোয়ান সালেহীন নাঈম, আজিজ শাকিল, সাঈদ আলম শাহীন, জাহীদ হাসান পাবেল, তারেক আজিজ, সায়মন স্যাম, তারেককে জানান। এরপর তারা হাসপাতালে যান।
মাসুদ, তুষার, কামাল ও লিটনসহ ২০-২৫ জন বাঁশ, লাঠি ও কাঠ নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে রেদোয়ান সালেহীন নাঈম, আজিজ শাকিল, সাঈদ আলম শাহীন, জাহীদ হাসান পাবেল, তারেক আজিজ, সায়মন স্যাম, তারেককে মারধর করে। এ ঘটনা সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক খবরের কাগজ রামগঞ্জ প্রতিনিধি রায়হানুর রহমানকেও মারধর করা হয়। আহতরা সবাই রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.
ঘটনার খবর পেয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম রাত ১০টার দিকে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। তিনি বলেন, “এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আটক করতে হবে। আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জড়িতদের আটক করবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।”
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর আটক অভ য গ স ব স থ য কমপ ল ক স র মগঞ জ উপজ ল এ ঘটন ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।