ফুটবল খেলার সময় মাঠে লুটিয়ে পড়েন যুবক, এরপর মৃত্যু
Published: 11th, June 2025 GMT
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ফুটবল খেলার সময় অসুস্থ হয়ে মাঠে ঢলে পড়েন এক যুবক। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া ওই যুবকের নাম মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ। তিনি সাতকানিয়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরপাড়া এলাকার মৃত আবদুল জব্বারের ছেলে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, মামুনুর রশিদ সৌদিপ্রবাসী ছিলেন। ঈদুল ফিতরের আগে ছুটিতে তিনি দেশে আসেন। আগামী রোববার সৌদি আরবের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহার ছুটি উপলক্ষে গ্রামের যুবকেরা গতকাল রাতে বাতি জ্বালিয়ে ছদাহা ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করেন। মামুনুর রশিদও ওই ম্যাচে অংশগ্রহণ করেন। খেলার একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরে নগরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামুনুর রশিদের বড় ভাই মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, নগরের ওই হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকেরা জানান হার্ট অ্যাটাকে মামুনুর রশিদের মৃত্যু হয়েছে। মামুনুর আগে থেকেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তাঁর হৃদ্যন্ত্রের রক্তনালিতে দুটি স্ট্যান্ট (রিং) পরানো হয়েছিল।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।