ত্রুটিপূর্ণ সিইটিপি নির্মাণ, সংকটে দেশের চামড়া খাত
Published: 12th, June 2025 GMT
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত চামড়া শিল্প এক দশক ধরে চলছে সংকটে। এর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সাভারের হেমায়েতপুরে স্থাপিত বিসিক চামড়া শিল্প নগরীর সেন্ট্রাল এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (সিইটিপি)। যা এক সময় আধুনিক, পরিবেশবান্ধব শিল্প গড়ার স্বপ্ন ছিল, এখন তা হয়ে উঠেছে ব্যর্থতার প্রতীক।
ঈদুল আজহার পর এবারও সিইটিপির ব্যর্থতার করুণ চিত্র উন্মোচিত হয়েছে। তরল বর্জ্য শোধনে এটি সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ; আর সলিড বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ এখনও শুরুই হয়নি। এতে অভ্যন্তরীণভাবে পরিবেশগত বিপর্যয়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও আস্থা সংকট দেখা দিয়েছে। এবার সরকার দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও প্রশ্ন রয়ে গেছে—এত দেরিতে কেন?
ত্রুটিপূর্ণ নকশা, দায়সারা নির্মাণ
২০১৭ সালে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তর করে সাভারে নেওয়া হয় পরিবেশসম্মত শিল্প গড়ার লক্ষ্য নিয়ে। প্রায় ১ হাজার ১৬ কোটি টাকার বিসিক চামড়া শিল্প নগরী প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় ২০০৩–২০২১ মেয়াদে, যার অর্ধেকের বেশি অর্থ ব্যয় হয় সিইটিপির পেছনে। কিন্তু পুরো পরিকল্পনা ও নির্মাণপর্বেই ছিল চরম অব্যবস্থাপনা।
ঠিকাদারের দায়সারা কাজ, বিপদে উদ্যোক্তারা
সিইটিপি নির্মাণের দায়িত্ব ছিল চীনের প্রতিষ্ঠান জিয়াংসু লিংজাই এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন কোম্পানির হাতে। বিসিক ও উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, চাপের মুখে ঠিকাদার দায়সারা কাজ করেছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারলে শাস্তির হুমকি দিয়েছিল বিসিক, যার ফলে প্রকল্পটি দ্রুত কিন্তু ত্রুটিপূর্ণভাবে শেষ হয়।
ট্যানারি মালিকদের অভিযোগ, কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও তারা এখন হুমকির মুখে। সিইটিপি পুরোপুরি চালু না হওয়ায় ইউরোপীয় ক্রেতারা চুক্তি বাতিল করছেন। অধিকাংশ ট্যানারি LWG (লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ) সনদ না পাওয়ায় রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে।
পরিবেশ বিপর্যয় ও আন্তর্জাতিক সংকট
প্রতি ঈদুল আজহায় কোটি টাকার কাঁচা চামড়া আসে সাভারে। এবার কোরবানিতে ৮০–৮৫ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও অনেক চামড়া লবণ না পেয়ে নষ্ট হয়েছে। সিইটিপি সচল না থাকায় তরল বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে, আর কঠিন বর্জ্য খোলা জায়গায় স্তূপ করে রাখা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটে জেনারেটরের সাহায্যে সাময়িকভাবে প্ল্যান্ট চালু রাখা হয়, যা পুরো ব্যবস্থাপনার জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে পরিবেশ ধ্বংসের পাশাপাশি শিল্পে আস্থার মারাত্মক ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, “আমরা প্রস্তুত, ইউরোপীয় ক্রেতারাও আগ্রহী। কিন্তু সিইটিপি না থাকায় এলডব্লুজিকে আমন্ত্রণ জানানো যাচ্ছে না। তারা বাস্তব অবস্থা দেখলে চামড়ার প্রতি আস্থা হারাবে।”
সরকারের হস্তক্ষেপ ও তদন্তের আশ্বাস
বর্তমান সরকার প্রথমবারের মতো দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাধ্যমে তদন্ত শুরু করেছে। শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “সিইটিপি নির্মাণে যারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা শুরু হয়েছে।”
তিনি জানান, একটি ইউরোপীয় গবেষক দল সিইটিপির প্রকৃত অবস্থা যাচাই করছে বিনা পারিশ্রমিকে। সেই ভিত্তিতে আধুনিক ও কার্যকর নতুন প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
শিল্প সচিব মো.
চামড়া শিল্পের ভবিষ্যৎ
বর্তমানে সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে ১১২টি ট্যানারিতে কাজ করছেন প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক। গার্মেন্টসের পর এই খাতই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত। অথচ একটি প্ল্যান্টের নির্মাণ ত্রুটি এবং রক্ষণাবেক্ষণ ব্যর্থতায় গোটা খাত আজ অনিশ্চয়তার মুখে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু ইউসুফ বলেন, “সিইটিপি ছিল বাজেটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে ভুল ঠিকাদার নির্বাচন করাই ছিল মূল ব্যর্থতা। ভবিষ্যতে অবশ্যই ইউরোপীয় মানসম্পন্ন কোম্পানিকে দায়িত্ব দিতে হবে।”
এ শিল্প মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা বলেন, “সিইটিপির ব্যর্থতা বাংলাদেশের চামড়াশিল্পকে শুধু আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলেনি, বরং আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আলাদা করে দিয়েছে। সরকার এবার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যা অতীতে কখনো দেখা যায়নি। প্রশ্ন একটাই এই তদন্ত এবং প্রতিশ্রুতি কি বাস্তব পদক্ষেপে রূপ নেবে? নাকি আগের মতোই তদন্ত চলবে, কিন্তু সমস্যার সমাধান আসবে না? সচেতন নাগরিক, উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকেরা আশায় আছেন এবার হয়তো সত্যিকারের জবাবদিহি ও কার্যকর সিইটিপি বাস্তবায়িত হবে। নইলে চামড়া শিল্পের ভবিষ্যৎ রয়ে যাবে গভীর অনিশ্চয়তায়।”
ঢাকা/এএএম/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ইট প র ব যবস থ ইউর প য় পর ব শ বর জ য তদন ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
খেলাপি ঋণে বাংলাদেশ এশিয়ায় কেন শীর্ষে
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে মন্দ বা খেলাপি ঋণ অনেক দিনের বিরাট সমস্যা। শুরুতে শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় এ ব্যাধি বিদ্যমান হলেও পরবর্তী সময়ে বৃহৎ ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকেও ছড়িয়ে পড়ে। এটি, তথা ঋণখেলাপির সংস্কৃতি ধীরে ধীরে এক মহিরুহ আকার ধারণ করেছে।
গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংক খাতের লুকানো খেলাপি ঋণ বের হয়ে আসছে। আবার অনেক আওয়ামী লীগ নেতা ও তাঁদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের ঋণও খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। তাতে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ এক বছরের ব্যবধানে মোট ঋণের ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ ব্যাংক খাতের বিতরণ করা ঋণের এক-চতুর্থাংশের বেশি এখন খেলাপি।
সম্প্রতি প্রকাশিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে খেলাপি ঋণের দিক থেকে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের শীর্ষে উঠে আসার বিষয়টি সামনে এসেছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর আর্থিক বিভিন্ন সূচকের অবস্থা নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। অবশ্য খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে ২০২৩ সালের তথ্য। তাতেই বাংলাদেশ শীর্ষে। এটি যে ২০২৫ সালে অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, তা আমরা জানি।
আগে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কায়দায় বাংলাদেশে খেলাপি ঋণ কম দেখানো হতো। অন্যদিকে সহজে ঋণ পুনঃ তফসিল ও পুনর্গঠন করার কারণেও খেলাপি ঋণ কম ছিল। এখন ঋণমানে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করা শুরু হয়েছে। আবার ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা ও আওয়ামী রাজনীতি–সমর্থিত ব্যক্তিদের ব্যবসা খারাপ হয়ে পড়ায় খেলাপি ঋণ বাড়ছে।
খেলাপি ঋণ এভাবে বাড়তে থাকলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে, সন্দেহ নেই। ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করতে উদ্যোগ নিতে হবে। যাঁরা ভালো ব্যবসায়ী, তাঁরা যেন আবার ব্যবসা শুরু করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করতে হবে। সেটি নিয়ে সরকার কাজও করছে।
এডিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে খেলাপি ঋণের হার সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে। ২০২৩ সাল শেষে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে প্রতিবছরই বাংলাদেশের খেলাপি ঋণের হার বেড়েছে। ২০২১ সালে এই হার ছিল ৮ শতাংশ, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৭ শতাংশে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের মতো ২০২১ সাল থেকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে নেপাল ও শ্রীলঙ্কার।
দক্ষিণ এশিয়ার বাকি দেশগুলোর খেলাপি ঋণ কমেছে। যেমন ভুটানের খেলাপি ঋণের হার ২০২০ সালে ছিল ১১ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ২০২২ সালে কমে হয়েছে ৩ শতাংশ। ভারতের খেলাপি ঋণের হার ২০২০ সালে ছিল ৭ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে কমে হয়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। মালদ্বীপের খেলাপি ঋণ এই সময়ে ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। একই প্রতিবেদন অনুযায়ী, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম খেলাপি ঋণ তাইওয়ান ও কোরিয়ার। দেশ দুটির খেলাপি ঋণের হার যথাক্রমে শূন্য দশমিক ১ ও শূন্য দশমিক ২ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ২০২৪ সাল শেষে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ছিল ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। ২০২৫ সালের জুন শেষে এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকায়, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। অর্থাৎ ব্যাংক খাতের বিতরণ করা মোট ঋণের চার ভাগের এক ভাগের বেশি খেলাপি হয়ে গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বলতে শুনেছি, গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে যে অর্থ বের করে নেওয়া হয়েছে, তা এখন খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হতে শুরু করেছে। আগেই বলেছি, ঋণখেলাপি হওয়ার নিয়ম আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার কারণেও দেশে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। যেসব ঋণ নবায়ন করা হয়, তার অনেকগুলো আদায় হচ্ছে না। অনিয়মের কারণে অনেক ঋণকে খেলাপি হিসেবে তালিকাভুক্ত করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগ। এতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে, যা সামনে আরও বাড়তে পারে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন মোট খেলাপি ঋণ ছিল মাত্র ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। এর পর থেকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছিলেন, বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নানা অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বের করে নিয়ে যাচ্ছেন, যার একটা বড় অংশই বিদেশে পাচার হয়ে গেছে।
সূত্রগুলো বলছে, দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ও বহুল সমালোচিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়া ব্যাংকগুলোর ঋণের প্রকৃত চিত্র বের হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। একইভাবে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বেড়েছে। এই পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই কাজ বাস্তবায়ন করতে এরই মধ্যে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্তও হয়ে গেছে। পাশাপাশি সরকারি খাতের জনতা ও রূপালী এবং বেসরকারি খাতের ইউসিবি, আইএফআইসি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ট্রাস্ট ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বেড়েছে।
পত্রিকা সূত্রে জানা গেছে, খেলাপি হয়ে পড়া প্রায় ১ হাজার ২৫০ প্রতিষ্ঠান বিশেষ ব্যবস্থার অধীন ঋণ পুনর্গঠনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ প্রতিষ্ঠানের ঋণ নিয়মিত করার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন একটি বিস্তৃত নীতিমালা তৈরি করে ব্যাংকগুলোকে ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জানা গেছে, এই নীতিমালায় নির্দিষ্ট অর্থ জমা দিয়ে ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে ঋণ পরিশোধে যতটা সময় অবকাশ পাবে, ওই সময়ে সুদ পরিশোধ করতে হবে। এর ফলে খেলাপি ঋণ কমে আসবে বলে আশা করছেন অনেকে। তবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী না করলে কিংবা ব্যবসা পরিচালনায় মনোযোগী না হলে তার উল্টোটাও ঘটতে পারে। সুযোগের অসৎ ব্যবহারের উদাহরণ বাংলাদেশে অনেক।
সামগ্রিক ঋণখেলাপির সংস্কৃতি থেকে মুক্তি পেতে গেলে আমাদের দুষ্ট রাজনৈতিক সংস্কৃতি তথা স্বজনতোষী পুঁজিবাদ থেকে যেমন বেরিয়ে আসতে হবে, তেমনি ঋণ সম্প্রসারণে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সক্ষমতাও বাড়াতে হবে। কমাতে হবে পরিচালকদের অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ।
মামুন রশীদ ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক
মতামত লেখকের নিজস্ব