পরিবারের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। অভাবের সংসারে নিজেকে একরকমের বোঝাই মনে করতেন। কিছু একটা করা দরকার। পরিস্থিতি যেন আবু সালেহ আহমেদকে দিন দিন আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অনেক স্বপ্ন দেখেছেন, সেই স্বপ্নে নিজেকে অটুট রেখেছেন। আর পাড়ি দিতে হয়েছে অনেকটা পথ। ধৈর্য নিয়ে নিজের স্বপ্নের দিকে তাকিয়ে আজ সালেহ নিজেকে বলতেই পারেন একজন সফল ফ্রিল‍্যান্সার। কেননা এখন তিনি মাসে আয় করেন তিন লাখ টাকা।

আবু সালেহ আহমেদ। ডাকনাম আফনান। বাবা মো.

কুতুব উদ্দিন শেখ মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। এখন অবসর নিয়েছেন। মা সাজেদা খাতুন গৃহিণী। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার তারাপুর গ্রামের আবু সালেহ আহমেদ এখন অবশ্য এলাকায় থাকেন না। থাকেন ঢাকার কাঁঠালবাগানে। এখান থেকেই আফনান গড়ে মাসিক তিন লাখ টাকা আয় করেন। ছোট্ট একটা অফিসও নিয়েছেন, যেখানে চারজন ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থান করেছেন।

২০১৬ সালে সেনগ্রাম ফাজিল মাদ্রাসা থেকে এসএসসি পাসের পর ২০২০ সালে লক্ষ্মীপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন আবু সালেহ আহমেদ। এখন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে স্থাপত্য বিভাগে চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন। ছাত্রাবস্থাতেও তাঁর মাসিক আয় কোনো কোনো মাসে পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যায়। ২৭ বছর বয়সী আবু সালেহ আহমেদ বিয়ে করেছেন গত বছর। স্ত্রীর নাম ফাতেমা জোহরা।

পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াই ছিল কঠিন

আফনান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আসলে মাদ্রাসা থেকে এসএসসি পাস করে বের হয়েছি। তখন ইচ্ছা থাকলেও আমাদের সামর্থ্য ছিল না ভালো জায়গায় পড়ার। আমার চার বছর যে সম‍য়টা কেটেছে, আসলে খুব কষ্টে কেটেছে। কলেজে আমি এক্সট্রা কারিকুলামে ভালো ছিলাম, ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি ছিলাম, বেশ কিছু জায়গায় বিতর্ক করে চাম্পিয়নও হয়েছি। স‍্যারদের চোখে পড়েছি। একসময় আর পেরে উঠছিলাম না, তাই দুই বছর পড়তে পড়তেই টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) নিতে গিয়েছিলাম। লক্ষ্মীপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষকেরা আমার কথা শুনে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। যার ফলে আমি পড়াশোনাটা শেষ করেছি।’

আবু সালেহ আহমেদ প্রথম আলোকে আরও বলেন, ‘দিনগুলো কঠিন ছিল। টিউশনি করাতাম। ১ হাজার ৫০০ টাকা পেতাম। ১ হাজার টাকা মেসভাড়া ও ৫০০ টাকায় খাওয়া। সকালে ও রাতে খেতাম। মাসে তা–ও খাওয়ার বিল আসত ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। মেসের বাকিরা সেটা দিয়ে দিত। তারপর একদিন ২ হাজার ৫০০ টাকার একটা টিউশনি পেয়ে একটু যেন শক্তি পেলাম। এভাবেই আমার ডিপ্লোমার চার বছর কেটেছে।’

একবুক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায়

২০২০ সালে ডিপ্লোমা পড়া শেষ করেই একবুক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন আবু সালেহ আহমেদ। এসেই শুরু করেন আবার জীবনসংগ্রাম। কোথাও কাজ পাচ্ছিলেন না। শেষমেশ ফুডপ্যান্ডায় রাইডার (ডেলিভারি বয়) হিসেবে কাজ নেন তিনি। কিন্তু শুধু ফুডপ্যান্ডায় কাজের আয় দিয়ে তাঁর চলছিল না। তখন থেকেই কাজের পাশাপাশি কিছু একটা করার চেষ্টা করছিলেন। কিছু জায়গায় খোঁজ নিয়ে ভর্তি হয়ে যান তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণের প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ আইটিতে। খাবার ডেলিভারির পাশাপাশি কাজও শিখতেন।

আবু সালেহ আহমেদ

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ল হ আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

৫ দেশের  প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বাউবির এসএসসি প্রোগ্রাম

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন স্কুল পরিচালিত বহিঃবাংলাদেশ (নিশ-২) এসএসসি প্রোগ্রামে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে (২০২৫ ব্যাচ) শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, ইতালি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মরত বা বসবাসরত বৈধ বাংলাদেশি প্রবাসী বা অভিবাসী কিংবা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আগ্রহী ব্যক্তিদের সেই দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে এসএসসি প্রোগ্রামে ভর্তি করা হবে।

ভর্তির যোগ্যতা

মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় দুটি শাখায় ভর্তি করা হবে। আবেদনকারীকে অবশ্যই জেএসসি/জেডিসি/অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সৌদি আরব/কাতার/কুয়েত/ইতালি/সংযুক্ত আরব আমিরাতের বৈধ অভিবাসী কিংবা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হতে হবে। ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালের পরে প্রদত্ত জন্মতারিখের ক্ষেত্রে জেএসসি/জেডিসি বা সমমানের সনদ প্রদান করতে হবে।

ভর্তির বিস্তারিত সময়

ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদনের তারিখ: ২৯ জুন পর্যন্ত।

আবেদন ফি জমা দিতে হবে: ৬১০ টাকা।
ভর্তির জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ: ১০ জুলাইয়ের মধ্যে।
ভর্তি ফি জমাদান: ১১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত।
ক্লাস শুরু: ৮ আগস্ট ২০২৫।

শিক্ষাপদ্ধতি    

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে।

রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ

এই প্রোগ্রামের রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ সর্বনিম্ন দুই বছর এবং সর্বোচ্চ পাঁচ বছর। অর্থাৎ দুই বছরের আগে কোনো শিক্ষার্থী এটি শেষ করতে পারবেন না এবং পাঁচটি চূড়ান্ত পরীক্ষার পর কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যা লাগবে

প্রার্থীর সম্প্রতি তোলা ছবি ও স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি, জেএসসি/জেডিসি/অষ্টম শ্রেণি বা সরকার স্বীকৃত সমমানের পরীক্ষার সনদপত্রের স্ক্যান কপি, জাতীয় পরিচয়পত্র/স্মার্ট কার্ড/অনলাইন জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেটের স্ক্যান কপি, পাসপোর্টের স্ক্যান কপি এবং বসবাসের অনুমতি কার্ডের স্ক্যান কপি। আবেদন ফরমে শিক্ষার্থীর নিজের নাম ও জন্মতারিখ এবং পিতামাতার নাম অবশ্যই জেএসসি/জেডিসি/এনআইডি/পাসপোর্ট অনুযায়ী হুবহু লিখতে হবে। শিক্ষার্থীর অষ্টম শ্রেণির সনদপত্রের সঙ্গে এনআইডি/পাসপোর্টে উল্লিখিত তথ্যের (আবেদনকারীর নাম, পিতামাতার নাম বা জন্মতারিখ) গরমিল দেখা গেলে এনআইডি/পাসপোর্টের তথ্য সঠিক বলে বিবেচনা করা হবে।

যোগাযোগ
     
১. বাংলাদেশ দূতাবাস: সৌদি আরব/কাতার/কুয়েত/ইতালি/সংযুক্ত আরব আমিরাত  
২. ডিন, ওপেন স্কুল, বাউবি।
৩. ইন্টারন্যাশনাল একাডেমিক প্রোগ্রাম উইং, বাউবি।
বিস্তারিত তথ্য জানতে ওয়েবসাইট।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে
  • ৫ দেশের  প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বাউবির এসএসসি প্রোগ্রাম
  • পরীক্ষার খাতা দেখতে অনীহা শিক্ষকদের
  • আগামী মাসের প্রথমে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ