টেকনাফে ভয়ভীতি দেখাতে এলোপাতাড়ি গুলি, শিশুসহ গুলিবিদ্ধ ৭
Published: 13th, June 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ঝিমংখালী এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও ভয়ভীতি দেখানোর উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরুদ্ধে। এতে পথচারী শিশু-কিশোরসহ অন্তত সাতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর গ্রুপটির প্রধান ওসামা বিন হোসাইন সহযোগীদের নিয়ে প্রকাশ্যে গুলি চালান বলে স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিরা হলেন শামসু উদ্দিন (৩৫), মো.
আহত শামসু উদ্দিন বলেন, ‘জুমার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলাম, তখনই ওসামা গুলি চালায়। কেন গুলি করল বুঝতে পারিনি।’
আহত ফয়েজ উদ্দিনের মা আকতার বলেন, ‘আমার ছেলেকে গুলি আর ছুরি মেরে আহত করেছে ওসামা ও তার লোকজন। সে এখন হাসপাতালে। আমি এদের বিচার চাই।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করে আসছেন ওসামা। আজ জুমার নামাজের পর লোকজন মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় তিনি ও তাঁর সহযোগীরা অতর্কিতে গুলি চালান। আহত ব্যক্তিদের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ কয়েকজনকে জরুরি চিকিৎসা দিয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে ওসামা বিন হোসাইনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গুলিবর্ষণের পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুশাসন ও দক্ষতা বাড়াতে ২৫ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
সরকারি পাঁচ সংস্থার স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও কর্মদক্ষতা বাড়াতে বাংলাদেশের জন্য ২৫ কোটি ডলারের অর্থায়ন অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালকদের বোর্ড এ অর্থায়ন অনুমোদন করে। বিশ্ব ব্যাংক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। তবে কবে এ অর্থায়ন প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে, তা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে ‘স্ট্রেনদেনিং ইনস্টিটিউশনস ফর ট্রান্সপারেন্সি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টাবিলিটি (সিটা)’ বা প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা শক্তিশালীকরণ শীর্ষক প্রকল্পের নামে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়াতে এ অর্থ ব্যয় করা হবে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, প্রকল্পটির আওতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পরিকল্পনা বিভাগ, সরকারি ক্রয় কর্তৃপক্ষ (বিপিপিএ) এবং মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের কার্যক্রমকে আধুনিক ও ডিজিটাল রূপ দেওয়া হবে। এতে তথ্যের স্বচ্ছতা, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়, সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা, ক্রয় প্রক্রিয়া এবং আর্থিক নিরীক্ষায় জবাবদিহিতা ও দক্ষতা বাড়বে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, এই বিনিয়োগ ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে স্বচ্ছতা ও দুর্নীতি হ্রাসে ভূমিকা রাখবে। উদীয়মান অর্থনীতির প্রয়োজনে সক্ষম সরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে এটি সহায়ক হবে।
প্রকল্পটির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা সরবরাহে গতি আসবে এবং নির্ভরযোগ্য সরকারি পরিসংখ্যানে নাগরিকদের প্রবেশাধিকারে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে নীতিনির্ধারণ ও পরিকল্পনা প্রণয়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি আধুনিক কর ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা এবং কর আদায় বাড়িয়ে রাজস্ব সংগ্রহ ও আর্থিক স্থিতিশীলতাও জোরদার করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, সিটা প্রকল্পের অধীনে উল্লেখিত পাঁচ সংস্থায় দ্বিতীয় প্রজন্মের ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) চালুর পাশাপাশি এর আওতা বাড়ানো হবে। একইসঙ্গে সরকারি নিরীক্ষা ব্যবস্থাও ডিজিটাল মাধ্যমে শক্তিশালী করা হবে।
বিশ্বব্যাংক আরও জানিয়েছে, সিটা প্রকল্পের পাশাপাশি একটি উন্নয়ন নীতিগত ঋণ (ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট) নিয়েও কাজ করছে তারা, যা এই মাসেই বোর্ড সভায় তোলা হবে। ওই ঋণের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়, ব্যাংক খাত, তথ্য উৎপাদন ও প্রকাশ, সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা, সরকারি ক্রয়, নিরীক্ষা এবং সামাজিক সেবা প্রদানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সরকারের সংস্কার উদ্যোগকে সহায়তা দেওয়া হবে। সিটা প্রকল্প এই কার্যক্রমগুলোকে পরিপূরকভাবে সহায়তা করবে এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।
বিশ্বব্যাংকের লিড কান্ট্রি ইকোনমিস্ট এবং প্রকল্পটির টিম লিডার সুলেমানে কুলিবালি বলেন, পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের মাধ্যমে সরকারের সামগ্রিক দক্ষতা বাড়বে, যা টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বশর্ত।
বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকেই বিশ্বব্যাংকের উন্নয়ন সহযোগী। এ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি অনুদান ও স্বল্পসুদে ঋণ দিয়েছে সংস্থাটি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বব্যাংকের ছাড়কৃত আইডিএ (ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন) ঋণপ্রাপ্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে।