Prothomalo:
2025-06-14@22:13:28 GMT

আমাদের যত ঘুঘু 

Published: 14th, June 2025 GMT

মনিরা হাঁসের (বৈকাল টিল) সন্ধানে ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাজশাহীর পদ্মা নদীতে ঘুরে বেড়াচ্ছি। বটতলা ঘাট থেকে ছেড়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় আধঘণ্টায় সিমলা পার্কের উল্টো পাশের চরের কাছে আসতেই একটি ঘুঘুকে পাড়ে বসে থাকতে দেখলাম। দ্রুত একটি ছবি তুলে ওটির পরিচয় নিশ্চিত হলাম। এই দুল৴ভ পাখিটি প্রথম দেখি ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ কুয়াশাভরা সকালে হবিগঞ্জের কালেঙ্গা বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যে। এরপর ২০১৮ সালের ২৬ জানুয়ারি সুন্দরবনের করমজলে। 

পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর কাছ থেকে ভালো ছবি তোলার আশায় ধীরে ধীরে নৌকা পাখিটির কাছাকাছি নিতে থাকি। তবে নৌকা যতই কাছে যাক না কেন, সেটি কিন্তু অবিচল—একটুও নড়ছে না, চুপচাপ বসে আছে। কৌতূহলবশত নৌকা থেকে পাড়ে নামলাম, পাখিটির একদম কাছে চলে গেলাম। এরপর সেটি ধীরে ধীরে হাঁটা শুরু করল। আমরাও পিছু নিলাম। কিছুক্ষণ পর অনেকটা অনিচ্ছায় উড়াল দিল পাখিটি।

ঘুঘু পাখি কবুতরের মতো একই গোত্র কোলাম্বিডির (কপোত) সদস্য। ঘুঘুর দেহ কবুতরের মতোই তুলনামূলক ভারী, মাথা ছোট, চঞ্চু ও পা খাটো। ওড়ার পেশি শক্তিশালী। তাই দ্রুত ও দীর্ঘক্ষণ উড়তে সক্ষম। লেজ হাতপাখার মতো বিস্তৃত। তবে আকারে কবুতরের চেয়ে ছোট হয়। এরাও স্ত্রী-পুরুষনির্বিশেষ পিত্তথলিতে উৎপন্ন ক্ষীরের মতো অর্ধতরল দুধ খাইয়ে ছানাগুলোকে বড় করে তোলে, যা ‘পায়রা বা ঘুঘুর দুধ’ নামে পরিচিত। এদেশে এই গোত্রের যে ১৮টি প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে, তার মধ্যে ১০টি কবুতর ও ৮টি ঘুঘু রয়েছে। প্রায় অর্ধেকের বেশি প্রজাতি সারা বছর প্রজনন করে। আয়ুষ্কাল চার থেকে ছয় বছর। এখানে এ পাখির সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হলো।

রামঘুঘু (ওরিয়েন্টাল টার্টল ডাব): ফিচারের শুরুতে লালচে বাদামি বর্ণের যে ঘুঘুর গল্প বললাম, সেটি এ দেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি রাম, কইতর বা গোলাপ ঘুঘু। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার বহু দেশে এর দেখা মেলে। প্রাপ্তবয়স্ক ঘুঘুর দেহের দৈর্ঘ্য ৩৩ থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার। ওজন ১৬৫ থেকে ২৭৪ গ্রাম। 

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় উড়ন্ত ধবল ঘুঘু.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য করণীয়

সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তথ্য অনুসারে, ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে তিন হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে সহকারী সার্জন নেওয়া হবে ২ হাজার ৭০০ জন আর সহকারী ডেন্টাল সার্জন নেওয়া হবে ৩০০ জন। দেশে চিকিৎসকের সংকটের কারণে এ বিশেষ বিসিএসকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে। তাই সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই জোরালো প্রস্তুতি নিতে হবে।

অনেক দিন পর বিশেষ বিসিএস হচ্ছে, তাই প্রতিযোগীর সংখ্যাটা বেশি। গুছিয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রথমে পিএসসির সিলেবাস নম্বর বিন্যাস অনুযায়ী বুঝে নিতে হবে। এরপর নিজের দুর্বলতা ও সবলতার বিষয়গুলো ভাগ করে নিতে হবে। সিলেবাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, মোট ২০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে ১০০ নম্বর সাধারণ বিষয়াবলি এবং বাকি ১০০ নম্বর চিকিৎসাবিদ্যা বিষয় থেকে। সাধারণ বিষয়াবলির ১০০ নম্বরের মধ্যে বাংলায় ২০, ইংরেজি ২০, বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২০, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ২০, মানসিক দক্ষতা ১০ ও গাণিতিক যুক্তিতে ১০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে।

বাংলা অংশে ব্যাকরণে ১৫, সাহিত্যে ৫ নম্বরসহ মোট ২০ নম্বর। ভাষার প্রয়োগ–অপপ্রয়োগ, বাগ্‌ধারা, শুদ্ধি, সমার্থক-বিপরীতার্থক মোটামুটি সহজ। প্রত্যয় সন্ধিও সমাস কিছুটা কঠিন। তাই প্রস্তুতির সময় সেভাবেই পরিকল্পনা করে নিতে হবে। আবার সাহিত্যের ক্ষেত্রে সব যুগ থেকেই প্রশ্ন আসে, প্রাথমিক আর মধ্যযুগের পরিধি তুলনামূলক কম এবং এখানে সহজেই নম্বর তোলা সম্ভব। আধুনিক যুগের রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল, জসীমউদ্‌দীন, ফররুখ আহমদ ও গোলাম মোস্তফা বেশ প্রাসঙ্গিক। ইংরেজিতে ব্যাকরণ থেকে ১৫ এবং সাহিত্যে ৫ নম্বর। সাহিত্য থেকে সিলেবাসের সব বিষয় পড়লে ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে আগের বছরের প্রশ্নগুলো পড়লে কাজে দেবে।

বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে ২০ নম্বর। জাতীয় রাজনৈতিক ইতিহাস থেকে ৪ নম্বরের পুরোটাই ওঠানো সম্ভব, যদি গুছিয়ে ইতিহাসের ঘটনাগুলো গল্পের মতো করে পড়তে পারেন। ইতিহাস মুখস্থ করতে যাবেন না, রাজনৈতিক ঘটনাগুলো গল্পের আদলে রিডিং পড়ে যাবেন। এরপর কৃষিজ সম্পদ, অর্থনীতি, শিল্প-বাণিজ্য—প্রতিটি বিষয় থেকে ২ নম্বর আছে, যা বাংলাদেশ বিষয়াবলির তুলনামূলক কঠিন অংশ। এ ক্ষেত্রে আগের বছরের প্রশ্নগুলোর ওপর জোর দিতে হবে। সংবিধান থেকে ২ নম্বরই ওঠানো সম্ভব, যদি বর্তমান ঘটনাবলির সঙ্গে সমন্বয় করে পড়া যায়। এগুলো ছাড়াও আছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা, সরকারব্যবস্থা, জাতীয় অর্জন, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান—এগুলোর প্রতিটি থেকে ২ নম্বর আছে। এসব বিষয় কমন পাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো দৈনিক পত্রিকা পড়ার অভ্যাস। জুলাই অভ্যুত্থানের সবকিছু ভালো করে দেখে নিতে হবে। সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবিত সংস্কারগুলোর ব্যাপারে প্রাথমিক ধারণা নিতে হবে।

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে ২০ নম্বর আছে। আন্তর্জাতিক সংগঠন, ভূরাজনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপট, ভারত–পাকিস্তান সম্পর্ক, ইউক্রেন যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ঘটনা, হামাস, গাজা ইত্যাদি চলতি বিষয়গুলো ভালোভাবে আয়ত্তে আনতে হবে। এ জন্য নিয়মিত পত্রিকা পড়ার বিকল্প নেই। আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো পড়তে অনেকে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না, কিন্তু এই বিষয়ে নম্বর ওঠানো তুলনামূলক সহজ। শুধু একটু গুছিয়ে নিয়ে আগের বছরের প্রশ্নের প্যাটার্ন ফলো করতে পারলে বেশ ভালো নম্বর ওঠানো সম্ভব।

গাণিতিক যুক্তির ১০ নম্বরের প্রস্তুতির জন্য অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির বইয়ের সাধারণ গণিতের মৌলিক অংশগুলো দেখতে হবে। গণিতের উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশি সময় নিয়ে উত্তর বের করতে যাবেন না। একেবারে প্রথম চেষ্টায় যতটুকু পারবেন, সেটাই করবেন। একই পরামর্শ মানসিক যুক্তির ক্ষেত্রেও।

চিকিৎসাবিজ্ঞান থেকে মোট ১০০ নম্বর থাকছে। ৩৯তম বিসিএস ও ৪২তম বিসিএসের প্রিলির প্রশ্নগুলো দেখলে একটা প্রাথমিক ধারণা পাবেন। এরপর সিলেবাস অনুযায়ী সব কটি বিষয়ে মৌলিক ধারণা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, যেকোনো বিষয়ের গভীরে না গিয়ে সব কটি বিষয়ের ব্যাপারে সাধারণ ধারণা থাকলে নম্বর বেশি পাবেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের সিলেবাসে ৫০ নম্বর নন–ক্লিনিক্যাল বিষয়গুলোর জন্য এবং ক্লিনিক্যাল বিষয়গুলোর জন্য ৫০ নম্বর বরাদ্দ। ডেন্টাল অংশের জন্যও মৌলিক ডেন্টাল অ্যানাটমি, ডেন্টিস্ট্রি–সম্পর্কিত ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, ডেন্টাল ম্যাটেরিয়াল ও অন্যান্য মিলে ৫০ এবং ডেন্টাল সায়েন্স থেকে ৫০ নম্বর বরাদ্দ।

মেডিকেল অংশের বেসিক অংশ থেকে মূল ফোকাস রাখতে হবে অ্যানাটমি ও ফিজিওলজিতে যেখানে ২০ নম্বর বরাদ্দ। বেসিক অংশের তুলনায় বেশি নম্বর পেতে ক্লিনিক্যাল অংশে বেশি জোর দেওয়াই যুক্তিযুক্ত। ক্লিনিক্যাল বিষয়ে প্রস্তুতির জন্য নজর রাখতে হবে আমাদের দেশের কমন রোগগুলোর উপসর্গ এবং সেগুলোর মৌলিক চিকিৎসাপদ্ধতি সম্পর্কে।

কোনো একটি পরীক্ষায় কারও পক্ষে সব প্রশ্নের উত্তর করা প্রায় অসম্ভব। তাই প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এবং পরীক্ষায় উত্তর দেওয়ার সময় মাথায় রাখতে হবে যেটা সবাই পারছে, সেটা আপনাকে পারতে হবে। বাকি আনকমন বা কঠিন বিষয়গুলো পারলে সেটা আপনার নম্বর বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। তাই প্রস্তুতি নিতে হবে পরিকল্পনা করে। সবার জন্য শুভকামনা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাঁধন কাঁদলেন, কিন্তু কেন...
  • মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
  • বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়ম পাল্টাচ্ছে এমসিসি
  • কমিটি নেই, সবাই নেতা
  • কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়
  • শ্রীলঙ্কা পৌঁছেছেন মিরাজ-শান্তরা
  • পটুয়াখালীতে সৎমা ও দাদিকে গলা কেটে হত্যা
  • মরিচখেতে তাজা গ্রেনেড, নিষ্ক্রিয় করলেন সেনাসদস্যরা
  • প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য করণীয়