একই সময় একই মাঠে ফুটবল ও ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১৫, একজন আইসিইউতে
Published: 14th, June 2025 GMT
রাজশাহীর বাঘায় একই দিন একই সময়ে ফুটবল ও ক্রিকেট প্রীতি ম্যাচের আয়োজনকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার বাউসা হারুন অর রশিদ শাহ্ দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনায় ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাতজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটায় ওই মাঠে বিবাহিত ও অবিবাহিত প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করেন আড়ানী ইউনিয়নের বেড়েরবাড়ি গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা স্কুলের মাঠটিতে খেলার জন্য বিএনপির স্থানীয় নেতা শাহিনুর রহমানের কাছে অনুমতি নিয়ে মাঠে আসেন। অপর দিকে একই মাঠে বিবাহিত ও অবিবাহিতদের প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করেন বাউসা ইউনিয়নের বাউসা চকরপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা।
একই দিন ও একই সময়ে ক্রিকেট ও ফুটবল দলের খেলোয়াড়েরা মাঠে নামলে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হন। গুরুতর আহত সাতজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
আড়ানী বেড়েরবাড়ি ক্রিকেট দলের আহত ব্যক্তিরা হলেন রানা আলী (২৪), মতিউর রহমান (৪২), আনছার আলী (২৮), বিল্পব আলী (২০)। বাউসা চকর পাড়া ফুটবল দলের আহত ব্যক্তিরা হলেন ফরহাদ আলী (১৬), তপু আহম্মেদ (১৫) ও সিয়াম হোসেন (১৮)। এর মধ্যে রানা আলী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে ও মতিউর রহমান ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জানান, শাহিনুর রহমান বিএনপির কোনো পদ–পদবিতে নেই। এ ছাড়া তিনি স্কুলের মাঠ অনুমতি দেওয়ার কেউ না।
শাহিনুর রহমান বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী আড়ানী ইউনিয়নের বেড়েরবাড়ি গ্রামের লোকজন স্কুলের মাঠে ক্রিকেট খেলার জন্য বলেছিলেন। তাই আমি তাদের খেলতে বলেছি। বিষয়টি জানার পরও চকরপাড়া গ্রামের লোকজন ফুটবল খেলার জন্য মাঠে আসে। পরে তাদের অনুরোধ করেও মানাতে পারিনি। পরে উভয় পক্ষের মারামারিতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।’
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আ ফ ম আছাদুজ্জামান বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় রানার বাবা রুস্তুম আলী বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ৮৯তম একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে সার্বিকভাবে আসন সংখ্যা কমানোসহ অর্গানোগ্রামে আরো ১৮টি নতুন বিভাগের অন্তর্ভুক্তি, চারটি ইনস্টিটিউট চালু এবং ১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর সুপারিশ করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ল্যাবভিত্তিক বিভাগগুলোতে আসন সংখ্যা ৪০টি এবং ল্যাববিহীন বিভাগগুলোতে ৫০টি আসন রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন ১৮টি বিভাগ অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো—পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, জৈব রসায়ন ও আণবিক জীববিজ্ঞান বিভাগ এবং জৈবপ্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো—সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ। কলা ও মানবিক অনুষদভুক্ত গুলো হলো—ইসলামিক স্টাডিজ ও সংস্কৃতি বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ এবং দর্শন বিভাগ। ব্যবসায় অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো— পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ব্যবসায়িক তথ্যবিজ্ঞান বিভাগ, আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগ এবং লজিস্টিক ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ। প্রকৌশল অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো— বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ, রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগ, পুরকৌশল বিভাগ এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগ। আইন অনুষদভুক্ত বিভাগটি হলো— অপরাধবিদ্যা বিভাগ।
পাশাপাশি চারটি ইনস্টিটিউট গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলো হলো—আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং একাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্র। এগুলোর গঠন কাঠামোও সুপারিশ করা হয়েছে।
এর মধ্যে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, নিয়মিত অধ্যাপক দুইজন, তিনজন সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার বা ম্যানেজার একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুইজন এবং একজন ক্লিনার।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং একাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্রের জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, একজন অতিথি অধ্যাপক, অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক অথবা সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার অথবা ম্যানেজার হিসেবে একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুইজন এবং ক্লিনার একজন।
১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগে ন্যূনতম ২৬ জন করে শিক্ষক রাখার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, “আমরা মিটিংয়ে এগুলো সুপারিশ করেছি। অর্গানোগ্রাম অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় ডিপার্টমেন্টের জন্য ছাড়পত্র চায়, তারপর কমিশন (ইউজিসি) যদি অনুমোদন দেয়, তখন সেটা অর্গানাগ্রামে যুক্ত হয়। অর্গানোগ্রামে থাকলেই যে বিভাগ হয়ে যাবে, এমন না। একটা অনুমোদন দিয়ে রাখে। এই অনুমোদনের আলোকে আবার যখন দরখাস্ত দেওয়া হয়, তখন কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।”
তিনি আরো বলেন, “ইউজিসি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে আসন সংখ্যা কমাতে, যাতে কোয়ালিটি এডুকেশনের নিশ্চিত হয়। তারা ল্যাববেজড বিভাগের জন্য ৪০টি আসন এবং ল্যাববিহীন বিভাগের জন্য ৫০টি আসন বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।”
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেছেন, “অনেকগুলো সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। তবে, এখনই না দেখে বলা যাচ্ছে না। রেজ্যুলেশন পাস হলে বিস্তারিত বলতে পারব।”
ঢাকা/এমদাদুল/রফিক