অষ্টাদশ শতাব্দীর ওসমানি সাম্রাজ্যে গুটিবসন্ত মানবজাতির জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বয়জ্যেষ্ঠ নারীরা—যাঁদের ‘কোজাকারি’ বলা হতো—একটি প্রাচীন পদ্ধতিতে টিকাদান বা ‘ইনোকুলেশন’ প্রয়োগ করে এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।

এই পদ্ধতি ছিল এডওয়ার্ড জেনারের গুটিবসন্তের ভ্যাকসিনের পূর্বসূরি। লেডি মেরি মন্টেগু ও প্যাট্রিক রাসেলের দুটি ঐতিহাসিক চিঠি এই নারীদের দ্বারা পরিচালিত টিকাদানের প্রক্রিয়ার বিবরণ দেয়। এই প্রক্রিয়া কনস্টান্টিনোপল থেকে আরব অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

এই নারীরা শুধু স্বাস্থ্যসেবায় অবদান রাখেননি, বরং ইউরোপে আধুনিক ভ্যাকসিনের ভিত্তি স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

ওসমানিয়া বয়স্ক নারীরা এই রোগের বিরুদ্ধে টিকাদানের একটি পদ্ধতি প্রয়োগ করতেন, যাকে বলা হতো ‘ইনগ্রাফটিং’। এই প্রক্রিয়ায় গুটিবসন্তে আক্রান্ত ব্যক্তির পুঁজ থেকে সামান্য তরল নিয়ে সুস্থ ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করানো হতো।গুটিবসন্তে নারীদের টিকাদান

গুটিবসন্ত অষ্টাদশ শতাব্দীতে মানবজাতির জন্য একটি ভয়ংকর রোগ ছিল, যার ফলে ব্যাপক মৃত্যুর ঘটনা ঘটত এবং সুস্থ থাকলেও দেহে ক্ষতচিহ্ন রেখে যেত। ওসমানিয়া বয়স্ক নারীরা এই রোগের বিরুদ্ধে টিকাদানের একটি পদ্ধতি প্রয়োগ করতেন, যাকে বলা হতো ‘ইনগ্রাফটিং’। এই প্রক্রিয়ায় গুটিবসন্তে আক্রান্ত ব্যক্তির পুঁজ থেকে সামান্য তরল নিয়ে সুস্থ ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করানো হতো।

ইংরেজ দূতাবাসের লেডি মেরি মন্টেগু ১৭১৭ সালে তাঁর বন্ধু সারাহ চিসওয়েলকে লেখা চিঠিতে এই প্রক্রিয়ার বিবরণ দেন, ‘একদল বৃদ্ধ নারী এই কাজে নিযুক্ত ছিলেন। প্রতি শরতে, সেপ্টেম্বর মাসে, যখন গরম কমে, লোকজন একে অপরকে জিজ্ঞাসা করত, কার পরিবার গুটিবসন্তের টিকা নিতে চায়। তারা ১৫-১৬ জনের দল গঠন করত। একজন বৃদ্ধ নারী গুটিবসন্তের পুঁজভর্তি একটি বাদামের খোসা নিয়ে আসতেন এবং জিজ্ঞাসা করতেন কোন শিরা খুলতে চান। তিনি একটি বড় সুঁই দিয়ে শিরা ফুটো করে সামান্য পুঁজ প্রবেশ করাতেন।’ (মন্টেগু, দ্য কমপ্লিট লেটার্স, ১৯৬৫, পৃ.

৩৩৮-৩৩৯)

১৭১৮ সালে লেডি মেরি তাঁর ছেলে এডওয়ার্ডের জন্য এই টিকা নিয়েছিলেন। তিনি লিখেছেন, ‘গত মঙ্গলবার আমার ছেলেকে টিকা দেওয়া হয়েছে। সে এখন গান গাইছে, খেলছে আর রাতের খাবারের জন্য অধৈর্য।’ (মন্টেগু, দ্য কমপ্লিট লেটার্স, ১৯৬৫, পৃ. ৩৯২)

এই টিকাদান একজন ‘বৃদ্ধ গ্রিক নারী’ করেছিলেন, যিনি কনস্টান্টিনোপলের পেরা এলাকায় এই কাজে দক্ষ ছিলেন। (মেইটল্যান্ড, অ্যাকাউন্ট অব ইনোকুলেটিং, ১৭২২, পৃ. ৬)

আরও পড়ুনমুসলিম নারী ক্যালিগ্রাফারদের গল্প২০ ঘণ্টা আগেআলেপ্পোতে ইংরেজ চিকিৎসক প্যাট্রিক রাসেল ১৭৬৭ সালে তাঁর ভাই আলেকজান্ডারকে লেখা চিঠিতে ওসমানি সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে টিকাদানের বিস্তৃত চিত্র তুলে ধরেন।প্যাট্রিক রাসেলের পর্যবেক্ষণ

আলেপ্পোতে ইংরেজ চিকিৎসক প্যাট্রিক রাসেল ১৭৬৭ সালে তাঁর ভাই আলেকজান্ডারকে লেখা চিঠিতে ওসমানি সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে টিকাদানের বিস্তৃত চিত্র তুলে ধরেন।

তিনি হারেমের নারী, বেদুইন চাকর এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, কনস্টান্টিনোপল ও আলেপ্পোর মতো বড় শহরের বাইরে এই পদ্ধতি ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। একজন বেদুইন বৃদ্ধা তাঁকে বলেছিলেন, ‘আপনি প্রক্রিয়াটি ঠিক বুঝতে পারেননি। এটি ল্যানসেট দিয়ে নয়, সুই দিয়ে করা হয়। আমি ছোটবেলায় এভাবেই টিকা পেয়েছি।’ (রাসেল, ফিল. ট্রান্স. আর. সোস., ১৭৬৮, পৃ. ১৪২)

রাসেল আরও লিখেছেন, এই প্রক্রিয়াকে বলা হতো ‘গুটিবসন্ত কেনা’। শিশুরা কিশমিশ, খেজুর বা মিষ্টি বিনিময় করে গুটিবসন্তে আক্রান্ত শিশুর কাছ থেকে ‘কতগুলো খোঁচা পাবে’ তা নির্ধারণ করত। (রাসেল, ফিল. ট্রান্স. আর. সোস., ১৭৬৮, পৃ. ১৪৩)

তিনি বাগদাদ, মসুল, এমনকি মক্কার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানতে পারেন, পূর্ব আরবে এই পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। তিনি লক্ষ করেন, একজন সরকারি ঘোষক জনসাধারণকে টিকাদানের জন্য আমন্ত্রণ জানাতেন। (রাসেল, ফিল. ট্রান্স. আর. সোস., ১৭৬৮, পৃ. ১৪৪)

একজন বেদুইন বৃদ্ধা তাঁকে বলেছিলেন, ‘আপনি প্রক্রিয়াটি ঠিক বুঝতে পারেননি। এটি ল্যানসেট দিয়ে নয়, সুই দিয়ে করা হয়। আমি ছোটবেলায় এভাবেই টিকা পেয়েছি।’টিকাদানে তাঁদের অবদান কতখানি

ওসমানিয়া নারীদের টিকাদান ছিল জনস্বাস্থ্যের প্রাথমিক রূপ। লেডি মেরি লিখেছেন, ‘প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়।’ (মন্টেগু, দ্য কমপ্লিট লেটার্স ১৯৬৫, পৃ. ৩৩৯)

এই প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিক হাসপাতালের বাইরে, লোকজ চিকিৎসার অংশ হিসেবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে হস্তান্তরিত হয়েছিল। ঐতিহাসিক মিরি শেফার-মোসেনসোহন এটিকে ‘শল্যচিকিৎসাপদ্ধতি’ বলে অভিহিত করেছেন, যা চিকিৎসাগ্রন্থে লিপিবদ্ধ ছিল না (শেফার-মোসেনসোহন, এনসাইক্লোপিডিয়া অব সায়েন্স, ২০১৬, পৃ. ৩,০৫২)।

টিকাদানের উৎস নিয়ে ইতিহাসে মতভেদ রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, এটি পারস্য, আর্মেনিয়া বা গ্রিস থেকে এসেছে। একটি জনপ্রিয় তত্ত্ব হলো, এটি আরবের মরুভূমি থেকে উৎপন্ন, যেখানে ‘চিকিৎসক বা পুরোহিতরা নয়, বৃদ্ধ নারীরা এটি নিয়ন্ত্রণ করতেন।’ (মুর, আ হিস্ট্রি অব স্মলপক্স, ১৮১৫, পৃ. ২২৩)

আরেকটি মত হলো, সার্কাসিয়ান ব্যবসায়ী নারীরা সপ্তদশ শতাব্দীতে ওসমানিয়া প্রদেশে এই পদ্ধতি নিয়ে আসেন। (রিডেল, প্রসিডিংস, ২০০৫, পৃ. ২২)

এ ছাড়া ১৭০৬ সালে কনস্টান্টিনোপল, গালাটা ও পেরায় গুটিবসন্তের প্রাদুর্ভাবের সময় একজন গ্রিক নারী ৪ হাজার মানুষকে টিকা দিয়েছিলেন। (মুর, আ হিস্ট্রি অব স্মলপক্স ১৮১৫, পৃ. ২৩০-২৩১)

আরও পড়ুনমুসলিম নারী চিকিৎসকেরা হারিয়ে গেলেন কেন১৩ জুন ২০২৫ঐতিহাসিকেরা লক্ষ্য করেছেন, পশ্চিমা চিকিৎসা ইতিহাসে লেডি মেরিকে প্রশংসা করা হলেও, ওসমানিয়া নারীদের অবদান প্রায় উপেক্ষিত।ইউরোপে প্রভাব

লেডি মেরি মন্টেগু ইংল্যান্ডে এই টিকাদানপদ্ধতি প্রবর্তনের জন্য কৃতিত্ব পান। তিনি তাঁর ছেলের টিকাদানের পর ইউরোপে এই প্রক্রিয়ার প্রচার করেন, যা পরবর্তী সময়ে জেনারেল ভ্যাকসিনের পথ সুগম করে।

তবে ঐতিহাসিকেরা লক্ষ্য করেছেন, পশ্চিমা চিকিৎসা ইতিহাসে লেডি মেরিকে প্রশংসা করা হলেও, ওসমানিয়া নারীদের অবদান প্রায় উপেক্ষিত। (মিলার, দ্য অ্যাডপশন অব ইনোকুলেশন, ১৯৫৭, পৃ. ৫০)

এই পক্ষপাতের কারণ দুটি। প্রথমত, আনুষ্ঠানিক চিকিৎসা–সংক্রান্ত উৎসের প্রাধান্য; দ্বিতীয়ত, লোকজ চিকিৎসাকে ‘প্রাচীন’ হিসেবে অবজ্ঞা করা। (মারফি, বুলেটিন অব দ্য হিস্ট্রি অব মেডিসিন, ১৯৯২, পৃ. ৩৮২)

টমাস কুনের দ্য স্ট্রাকচার অব সায়েন্টিফিক রেভল্যুশনস (১৯৭০) অনুসারে, টিকাদান ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত ‘বৈজ্ঞানিক বিপ্লব’ হিসেবে গণ্য হয়নি। কারণ, তখনই চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্যারাডাইম পরিবর্তিত হয়। তবে নিহান বোজক যুক্তি দেন, গুটিবসন্তের টিকা বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলে প্রায় একই সময়ে উদ্ভূত হতে পারে। (বোজক, ফে দেরগি, ২০১৮, পৃ. ১৪৪)

ওসমানিয়া নারীদের টিকাদান ছিল জনস্বাস্থ্যের প্রাথমিক ধাপ, যা আধুনিক ভ্যাকসিনের পথ তৈরি করেছিল।

সূত্র: মুসলিম হেরিটেজ ডটকম

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ ট বসন ত র শ শত ব দ ওসম ন য় চ ক ৎসক কর ছ ল মন ট গ র জন য অবদ ন করত ন

এছাড়াও পড়ুন:

স্কিন ব্যাংকে পর্যাপ্ত ত্বক থাকলে ৪০ শতাংশের বেশি দগ্ধ রোগীকেও বাঁচানো যায়

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে হতাহত হওয়ার ঘটনার পর দেশের একমাত্র স্কিন ব্যাংকের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এ ব্যাংকের অবস্থান। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মাইলস্টোনের ঘটনার পর অনেকেই স্কিন (চামড়া বা ত্বক) দান করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে ইনস্টিটিউটে যোগাযোগ করছেন। স্কিন ব্যাংকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্বক থাকলে ৪০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া রোগীকেও বাঁচানো সম্ভব।

২১ জুলাই দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। গত সোমবার রাত ১০টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ৩৪ জন মারা গেছে। আর সোমবার বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ৪৫ জন। তাদের মধ্যে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি ৩৩ জন।

দেশে স্কিন ব্যাংকের যাত্রা শুরুর পর দান করা ত্বক ব্যবহার করে ১০ জন দগ্ধ রোগীর চিকিৎসা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯ জনই বেঁচে গেছেন। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকায় একজন মারা গেছেন।

জীবিত ব্যক্তির শরীর থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় সংগ্রহ করা ত্বক মারাত্মকভাবে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া যে কেউ চাইলে মরণোত্তর ত্বক দান করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে দাতার মৃত্যুর পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মরদেহ থেকে ত্বক সংগ্রহ করা হয়। পরে সেই ত্বক দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।

ওজন কমানোসহ কিছু প্লাস্টিক সার্জারির পর বেঁচে যাওয়া ত্বক সংরক্ষণ করার মধ্য দিয়ে দেশের একমাত্র স্কিন ব্যাংকটি যাত্রা শুরু করে। আগে এ ধরনের অস্ত্রোপচারের পর বাড়তি ত্বক ফেলে দেওয়া হতো।

স্কিন ব্যাংকের সমন্বয়কারী ও জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মাহবুব হাসান প্রথম আলোকে বলেন, মাইলস্টোনের ঘটনার পর ত্বকদানের বিষয়ে মানুষের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে; বিশেষত অনেক নারী আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এখন পর্যন্ত শতাধিক মানুষ এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে যোগাযোগ করেছেন।

তবে সমস্যা হলো, আগ্রহী ব্যক্তিদের বেশির ভাগ চাইছেন, মাইলস্টোনের ঘটনায় দগ্ধ শিক্ষার্থীদের শরীরে যাতে তাঁদের দান করা ত্বক ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় যে প্রক্রিয়া শেষে কার দান করা ত্বক কার শরীরে ব্যবহার করা হবে। এ ছাড়া ত্বক দান করার ক্ষেত্রে স্ক্রিনিংসহ পুরো প্রক্রিয়া শুনে অনেকে আর আগ্রহ দেখাননি। এখন পর্যন্ত যাঁরা যোগাযোগ করেছেন, তাঁদের মধ্যে ১৫ থেকে ১৬ জন ত্বক দান করতে চেয়েছেন বলে জানান চিকিৎসক মাহবুব হাসান।

ভবিষ্যতে দগ্ধ রোগীর চিকিৎসায় ত্বক সংরক্ষণ করে রাখতে হয়। ত্বক সংগ্রহের পর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তরল নাইট্রোজেনে ডুবিয়ে মাইনাস ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। তাহলে সেই ত্বক পাঁচ বছর পর্যন্ত ভালো থাকে।মাহবুব হাসান, জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক।

৩ জুলাই মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় পঞ্চম আন্তর্জাতিক দগ্ধ ও আঘাতপ্রাপ্তদের সম্মেলন। এই সম্মেলনে ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ফার্স্ট স্কিন ব্যাংক ইন বাংলাদেশ: দ্য ওয়ে অব ওভার কামিং দ্য চ্যালেঞ্জেস’ শিরোনামের বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাহবুব হাসান। প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, দেশে স্কিন ব্যাংকের যাত্রা শুরুর পর দান করা ত্বক ব্যবহার করে ১০ জন দগ্ধ রোগীর চিকিৎসা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯ জনই বেঁচে গেছেন। আর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকায় একজন মারা গেছেন।

আপাতত রেজিস্ট্রেশন ও স্ক্রিনিং

দেশের একমাত্র স্কিন ব্যাংক উদ্বোধন করা হয় গত ৯ জানুয়ারি। তবে গত ২০ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়। ব্যাংকটিতে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল। বর্তমানে এই ব্যাংকে দুজন চিকিৎসক ও একজন নার্স দায়িত্ব পালন করছেন।

স্কিন ব্যাংক যাত্রা শুরুর পর মোট ১৪ হাজার ৫০০ সেন্টিমিটার স্কয়ার ত্বক সংরক্ষণ করা হয়েছিল। মাইলস্টোনের ঘটনার আগপর্যন্ত ৯ হাজার সেন্টিমিটার স্কয়ার ত্বক ব্যাংকে ছিল। মাইলস্টোনের ঘটনায় দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসায় গত রোববার পর্যন্ত এ ব্যাংক থেকে সাড়ে ৩ হাজার সেন্টিমিটার স্কয়ার ত্বক ব্যবহার করা হয়েছে।

স্কিন ব্যাংক যাত্রা শুরুর পর মোট ১৪ হাজার ৫০০ সেন্টিমিটার স্কয়ার ত্বক সংরক্ষণ করা হয়েছিল। মাইলস্টোনের ঘটনার আগপর্যন্ত ৯ হাজার সেন্টিমিটার স্কয়ার ত্বক ছিল। মাইলস্টোনের ঘটনায় দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসায় গত রোববার পর্যন্ত এ ব্যাংক থেকে সাড়ে তিন হাজার সেন্টিমিটার স্কয়ার ত্বক ব্যবহার করা হয়েছে।

মাইলস্টোনের ঘটনার পর ত্বকদানের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনা হচ্ছে। ত্বকদানের আহ্বান জানিয়ে অনেকেই পোস্ট দিচ্ছেন। তবে কিছু কিছু ভুল তথ্যও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে।

আরও পড়ুনস্কিন ব্যাংক চালু হলো বাংলাদেশে, দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত২৫ জুলাই ২০২৫

মাইলস্টোনের ঘটনার পর জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অনেকেই ত্বক দান করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। তবে স্কিন ব্যাংকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্বক সংরক্ষিত আছে।

এ বিষয়ে চিকিৎসক মাহবুব হাসান বলেন, এ মুহূর্তে ত্বকদানে আগ্রহী ব্যক্তিদের রেজিস্ট্রেশন আর স্ক্রিনিং করে রাখার বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে, যাতে জরুরি প্রয়োজনে তাঁদের কাছ থেকে ত্বক সংগ্রহ করা যায়।

সংগ্রহ করা ত্বক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তরল নাইট্রোজেনে ডুবিয়ে মাইনাস ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখলে পাঁচ বছর পর্যন্ত ভালো থাকে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
  • ডেঙ্গুতে দুজনের, করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু
  • জাওয়াইদেহ বেদুইনদের মৌখিক সাহিত্য
  • রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
  • ইরানের সঙ্গে সংঘাত: ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
  • সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
  • স্কিন ব্যাংকে পর্যাপ্ত ত্বক থাকলে ৪০ শতাংশের বেশি দগ্ধ রোগীকেও বাঁচানো যায়