কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের পশ্চিম পাশে অন্তত ৬০ কিলোমিটারজুড়ে দেখা যায় ঝাউগাছের সারি। মেরিন ড্রাইভসহ উপকূল রক্ষার স্বার্থে সরকার কোটি টাকা খরচ করে ঝাউবাগান সৃজন করলেও গাছপালা উজাড় করে সেখানে তৈরি হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি-দোকানপাটসহ নানা অবকাঠামো।

উপকূলীয় বন বিভাগের তথ্যমতে, ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পর টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের হাদুরছড়া, খুরেরমুখ, টেকনাফ সদরের মহেশখালিয়াপাড়া, লম্বরী, তুলাতলি, রাজারছড়া, বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালী, কচ্ছপিয়া, বড়ডেইল, মাথাভাঙা, শীলখালী ও শামলাপুর সৈকতের পাশে ৫২৫ হেক্টর বেলাভূমিতে অন্তত ১০ লাখ ঝাউগাছ রোপণ করা হয়েছিল। ২০০৩ সালে সৈকতের কয়েক কিলোমিটারে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আরও ৩২০ হেক্টরের ঝাউবাগান সৃজন করেছিল। বর্তমানে বনাঞ্চলের ৭০ শতাংশ গাছ উজাড় হয়ে গেছে। সাবরাং, মহেশখালিয়াপাড়া, বড়ডেইল, পুরানপাড়ার কয়েক কিলোমিটারে ঝাউগাছের চিহ্নও নেই।

অভিযোগ রয়েছে, এসব ঝাউগাছ কেটে তৈরি করা অবৈধ স্থাপনায় চলে মাদক সেবন ও বিক্রি। মানব পাচারকারীরা সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের আগে লোকজনকে ঝাউবাগানের ভেতরের এসব স্থাপনায় জড়ো করে রাখেন। তারপর ট্রলারে তুলে দেন। ঝাউগাছ কেটে অনেকে মাছ ধরার নৌকা তৈরিসহ ঘরবাড়ির কাজে লাগাচ্ছেন। এ নিয়ে বন বিভাগের কোনো তৎপরতা চোখে পড়ে না।

পরিবেশবিষয়ক সংগঠন কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা বলেন, টেকনাফের সাবরাং পয়েন্ট থেকে বাহারছড়া শাপলাপুর হয়ে উখিয়ার মনখালী সেতু পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সৈকতে (মেরিন ড্রাইভের পশ্চিমে) কয়েক দশক আগে ১০ লাখের বেশি ঝাউগাছ সৃজন করা হয়েছিল। গত কয়েক বছরে ৭০ শতাংশ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। বাগানের ভেতরের ঝাউগাছ কেটে অন্তত তিন হাজার ঘরবাড়ি তৈরি হলেও বন বিভাগ এ পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান চালায়নি, একটা মামলাও করেনি।

১৭ কিলোমিটারে অন্তত ৩ হাজার ঘরবাড়ি

১৪ জুন সকাল নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত টেকনাফ ও উখিয়ার প্রায় ৪৫ কিলোমিটার ঝাউবাগান ঘুরে দেখা যায়, অন্তত ১৫টি স্থানে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি-দোকানপাট, ব্যবসাকেন্দ্র তৈরি হয়েছে। কিছু স্থানে ঝাউগাছ কেটে বিরান ভূমিতে অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে।

বেলা ১১টায় টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা সৈকতে নেমে দেখা গেছে, এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ঝাউবাগানের ভেতরে তৈরি হয়েছে অন্তত ৭০০টি ঝুপড়ি ঘর। স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি রোহিঙ্গা নাগরিকেরাও সেসব ঘরে অবস্থান করছেন। বেশির ভাগ ঘর তৈরি হয়েছে ঝাউগাছের খুঁটি দিয়ে।

একটি ঘরে কথা হয় স্থানীয় বাহারছড়ার বাসিন্দা ওসমান গণির সঙ্গে। তিনি বলেন, চিংড়ির পোনা ধরার জন্য তিনি ঘরে অবস্থান করেন। রাতের বেলায় আরও কয়েকজন ঘরে আসেন চিংড়ির পোনা ধরতে। তবে আশপাশের ঘরগুলোতে দিনরাত বখাটে তরুণ ও লোকজনের আড্ডা চলে। এ সময় মাদক সেবন ও ইয়াবা বিক্রি হয়।

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের উখিয়ার মনখালী অংশের সৈকতের এই স্থানে দুই বছর আগেও ঘন ঝাউবাগান ছিল। গাছ কেটে ফেলায় বাগনটি এখন আর নেই। সম্প্রতি তোলা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন ব ভ গ ব হ রছড় র স কত স কত র ঘরব ড়

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে মার্কেটে আগুন, ২ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে

নারায়ণগঞ্জের দেওভোগের হাকিম প্লাজা মার্কেটের বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এতে কেউ হতাহত হননি।

বুধবার (১৮ জুন) সকাল সোয়া ১০টার দিকে ওই মার্কেটে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী জমির আলী ও অন্য প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মার্কেটের তৃতীয় তলায় একটি গুদামে আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে সেই আগুন চতুর্থ তলায় ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনেন। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। তবে, কয়েকটি দোকানের মালামাল পুড়ে গেছে।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের নারায়ণগঞ্জ স্টেশনের সিনিয়র অফিসার মো. শাহজাহান বলেছেন, হাকিম প্লাজা মার্কেটে আগুনের খবর পেয়ে আমাদের তিনটি ইউনিট সেখানে যায়। তারা দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। তদন্ত শেষে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে বলা যাবে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ