সেই সরকারি কর্মকর্তার কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াত নেতা
Published: 18th, June 2025 GMT
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে অবসরকালীন ভাতার ভুল কাগজে স্বাক্ষর না দেওয়ায় উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামানকে মারধরের ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন জামায়াত নেতা। আজ বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান।
উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামানের ভাষ্য, সিনিয়র স্টাফ নার্স আতোয়ারা খাতুনের অবসরের ইনক্রিমেন্টের বিলের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তাঁর কিছু কাগজপত্রে ভুল থাকায় বিলে স্বাক্ষর করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘জানতে পারলাম যাদের সঙ্গে নিয়ে এসেছেন, তারা জামায়াতের নেতাকর্মী। বিলে স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য চাপ দিলে আমি অস্বীকৃতি জানাই। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাকে মারধর শুরু করেন তারা। পরে ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আমার অফিসে এসে ক্ষমা চেয়েছেন ওই জামায়াত নেতারা।’
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে অবসরকালীন ভাতার ভুল কাগজে স্বাক্ষর না দেওয়ায় উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামানকে মারধর করা হয়। রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠে। মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের ভেতরে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে লাঞ্ছিত হন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্যাশিয়ার রাজা মিয়া।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স রৌমারী সদর ইউনিয়নের কলেজপাড়া এলাকার আতোয়ারা খাতুনের স্বামী কাদের মোল্লা একজন জামায়াত নেতা। মঙ্গলবার দুপুরে জামায়াতের নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর স্ত্রীর অবসরকালীন ভাতার কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে যান। আলোচনার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সাইদুজ্জামানকে মারধর করেন তারা। এ সময় ওই কর্মকর্তাকে রক্ষা করতে গিয়ে মারধরের শিকার হন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্যাশিয়ার রাজা মিয়া।
রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। পরে তার অফিসে গিয়ে আমি হাত ধরে ক্ষমা চেয়েছি। তিনি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।’
রৌমারী উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হায়দার আলী বলেন, ওই নার্সের স্বামী আমাদের দলের একজন কর্মী। তার স্ত্রীকে বিল প্রদান না করে ওই কর্মকর্তা হয়রানি করছিলেন। এ জন্য আমাদের দলের কয়েকজন নেতাকর্মী সেখানে যায়। এতে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে আমি উপস্থিত থেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।
কুড়িগ্রাম-৪ আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, ‘আমাদের উপস্থিতিতে জামায়াতের একজন হঠাৎ এ ঘটনা ঘটায়। পরে আমরা বিষয়টা মীমাংসা করে দিয়েছি। এ ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম ন ত কর ম ম রধর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে আবারও পাহাড়ি ঢলে পর্যটক নিখোঁজ
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে ঝরনায় একজন পর্যটক পাহাড়ি ঢলে ভেসে নিখোঁজ হয়েছেন। তাঁর নাম মেহেরাব হোসাইন (১৮)। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি ভেসে যান।
স্থানীয় লোকজন বলেন, গতকাল উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের ফাত্রাঝিরি এলাকার ভালুকিয়া খালের মংজয়পাড়া ঝরনায় ১৮ জনের একদল কিশোর ও তরুণ ঘুরতে যান। তাঁরা কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলুদিয়া পালং ইউনিয়নের মরিচ্যা বাজার থেকে বেড়াতে আসেন। মংজয়পাড়া ও বরইতলির বাসিন্দারা তাঁদের ঝরনায় না যেতে বলেছিলেন। কিন্তু তাঁরা বাধা মানেননি। ঝরনা থেকে ফেরার পথে প্রবল বৃষ্টি শুরু হলে ভালুকিয়া খালে পাহাড়ি ঢল নামে। খালের তীরের গাছ-বাঁশ ধরে ধরে ফিরে আসার সময় ঢলের তোড়ে মেহরাব হোসেন ভেসে যান। তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মেহেরাবের বাড়ি মরিচ্যা বাজারে। তিনি মরিচ্যা ওয়াকিয়া হোটেলের মালিক মো. আবুল মঞ্জরের ছেলে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ফাত্রাঝিরি এলাকার কিরণ তঞ্চঙ্গ্যা ও সজল বড়ুয়া বলেন, ভালুকিয়া খালের মংজয়পাড়া ঝরনাটি অত্যন্ত দুর্গম ও বিপজ্জনক। বিপজ্জনক হওয়ায় কিশোর–তরুণদের দলটিকে সেখানে যেতে মানা করা হয়েছিল।
ঝরনাটি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে ঘুমধুম ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড ফাত্রাঝিরি এলাকায়।
এর আগে ১১ জুন আলীকদমের দুর্গম এলাকার ক্রিস্টং ও রংরাং পাহাড় ভ্রমণে গিয়ে ফেরার পথে শামুকঝিরি ঝরনায় পাহাড়ি ঢলে তিনজন পর্যটক ভেসে যান। একজন নারীসহ দুজনের লাশ পাওয়া গেলেও হাসান চৌধুরী নামের একজন এখনো নিখোঁজ।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসরুরুল হক বলেন, মংজয়পাড়া ঝরনায় নিখোঁজ মেহেরাব হোসাইনের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ভালুকিয়া খালের আশপাশের লোকজনকে খোঁজ পেলে জানানোর জন্য বলা হয়েছে।