কেএনএফের পোশাক তৈরির মামলায় আওয়ামী লীগ নেতার ভাইসহ ৮ আসামির রিমান্ড
Published: 18th, June 2025 GMT
পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কুকি–চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্দেহজনক পোশাক (ইউনিফর্ম) তৈরিতে কাপড় (ফেব্রিকস) সরবরাহের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতার ভাইসহ আট আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফা আজ বুধবার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আট আসামি হলেন তারিকুল ইসলাম, তৌহিদুল ইসলাম, আতিকুর রহমান, জামালুল ইসলাম, কামরুজ্জামান, সাহেদুল ইসলাম, গোলাম আজম ও নিয়াজ মোরশেদ। আসামিদের মধ্যে তারিকুল ইসলাম আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য ও সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের ছোট ভাই ও তাঁদের পারিবারিক মালিকানাধীন ‘অয়েল কম্পোজিট নিট কেমিক্যাল ফেব্রিকস ডাইং’ কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
নগর–পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আট আসামিকে পাহাড়তলী থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২৭ মে রাতে পাহাড়তলী থানার ডিটি রোডের একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে ১৫ হাজার ইউনিফর্ম জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় বায়েজিদ বোস্তামী থানার এসআই আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে পাহাড়তলী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। ২ জুন রাতে নগরের চান্দগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার ভাইসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের বায়েজিদ বোস্তামী থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আসামিরা অয়েল কম্পোজিট নিট কেমিক্যাল ফেব্রিকস ডাইং মালিক কর্মকর্তা হয়ে কেএনএফ পোশাক তৈরির জন্য বায়েজিদের রিংভো অ্যাপারেলস নামের একটি পোশাক কারখানা ও পাহাড়তলী থানার ডিটি রোডের নুর ফ্যাশন অ্যান্ড গার্মেন্টস ফেব্রিকস সরবরাহ করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে।
এর আগে ২৬ মে রাতে নগরের অক্সিজেন নয়াহাট এলাকার একটি কারখানা থেকে ১১ হাজার ৭৮৫টি ইউনিফর্ম উদ্ধার করে পুলিশ। ১৭ মে রাতে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার নয়ারহাট এলাকার রিংভো অ্যাপারেলস থেকে ২০ হাজার ৩০০টি সন্দেহজনক পোশাক (ইউনিফর্ম) জব্দ করে গোয়েন্দা পুলিশ।
পরে এ ঘটনায় করা মামলার এজাহারে পুলিশ বলেছে, ইউনিফর্মগুলো পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ)। দুই কোটি টাকার চুক্তিতে ইউনিফর্মগুলো প্রস্তুতের ফরমাশ নেওয়া হয়। এ ঘটনায় পোশাক কারখানাটির মালিকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন সাহেদুল ইসলাম, গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দার। পুলিশ জানিয়েছে, সাহেদুল ইসলাম কারখানার মালিক। অন্য দুজন পোশাকগুলো তৈরির ফরমাশ এনেছিলেন।
ফেসবুকে পেজ খুলে দুই-তিন বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। পাহাড়ের দুই ব্যাংকের তিন শাখায় ডাকাতিও করে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। বান্দরবানের দুই উপজেলায় ১৭ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই ব্যাংকের তিন শাখায় ডাকাতির ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ দ ল ইসল ম ইউন ফর ম সশস ত র ক এনএফ
এছাড়াও পড়ুন:
বৈরী আবহাওয়া: এলএনজি সরবরাহ কমেছে ৮০ কোটি ঘনফুট
এমনিতেই দেশে চলছে গ্যাসের তীব্র সংকট। এর মধ্যেই আরও কমে গেছে সরবরাহ। বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজারের মহেশখালীর গভীর সমুদ্রে অবস্থিত টার্মিনাল থেকে এলএনজি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে চট্টগ্রাম, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কমে গেছে গ্যাসের চাপ।
বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত দুই এলএনজি টার্মিনাল থেকে ১১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করার সক্ষমতা রয়েছে। গড়ে ৮০-৯০ ঘনফুট সরবরাহ করা হয়। গত সোমবার দেওয়া হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি ঘনফুট। কিন্তু সাগর উত্তাল থাকায় মঙ্গলবার থেকে টার্মিনালগুলোতে এলএনজি আমদানি করা কার্গো যুক্ত হতে পারছে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে টার্মিনালে মজুত এলএনজি রিগ্যাসিফিকেশন করে লাইনে গ্যাস দেওয়া হচ্ছে। এতে মঙ্গলবার রাত থেকেই সরবরাহ কমতে শুরু করেছে। বুধবার সন্ধ্যায় সরবরাহ কমে ২০ কোটি ঘনফুটে নেমে এসেছে।
দেশে গ্যাসের চাহিদা দৈনিক অন্তত ৪২০ কোটি ঘনফুট। বিপরীতে এলএনজিসহ বর্তমানে দিনে গড় সরবরাহ ২৮১ কোটি ঘনফুট। এলএনজির সরবরাহ কমায় বুধবার মোট গ্যাস সরবরাহ কমে দাঁড়ায় ২০০ কোটি ঘনফুট। ফলে দেশজুড়ে গ্যাস সংকট বিরাট আকার ধারণ করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনস) প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম সমকালকে বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আবহাওয়া অনকূলে থাকার পূর্বাভাস রয়েছে। তখন টার্মিনালে জাহাজ যুক্ত করার চেষ্টা করা হবে। এমনটি হলে সংকট কেটে যাবে।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে মহেশখালীর গভীর সমুদ্রে অবস্থিত এলএনজি টার্মিনালে এলএনজি কার্গো নোঙর করতে পারছে না। এ কারণে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এলএনজি সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় কর্ণফুলী গ্যাস ও তিতাস গ্যাস অধিভুক্ত এলাকায় গ্যাসের কম চাপ বিরাজ করছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাহাজ যুক্ত করে গ্যাস সরবরাহ শুরু করা হবে।