মৌলিক সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলো একমত না হলে গণভোটে যেতে হবে: গাজী আতাউর
Published: 18th, June 2025 GMT
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবে কিছু রাজনৈতিক দলের বিরোধিতাকে ‘রহস্যজনক’ মনে করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটি বলছে, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলো একমত না হলে সংস্কারের জন্য প্রয়োজনে গণভোটে যেতে হবে।
আজ বুধবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের তৃতীয় দিনের বৈঠক শেষে মৌলিক সংস্কার বিষয়ে ইসলামী আন্দোলনের অবস্থান তুলে ধরেন দলের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বেলা সাড়ে ১১টায় এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে ইসলামী আন্দোলনের দুই যুগ্ম মহাসচিব অংশ নেন। তাঁরা হলেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর এক ব্রিফিংয়ে গাজী আতাউর রহমান বলেন, দেশকে আগামীর যেকোনো স্বৈরতন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করা জুলাই অভ্যুত্থানের প্রধান দাবি। আগামী দিনে আর কোনো স্বৈরাচার যাতে জেঁকে বসতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার হতেই হবে। এতে যদি কোনো রাজনৈতিক দল দ্বিমত করে বা রাজনৈতিক দলগুলো যদি একমত না হয়, তাহলে এ ধরনের মৌলিক সংস্কারের জন্য গণভোটে যেতে হবে।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আজকের বৈঠকে বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করেছি, কিছু রাজনৈতিক সংগঠন, যারা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বকীয়তা, স্বাধীনতা ও শক্তিশালীকরণের কথা বলত এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ওপরে নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপ বন্ধের কথা বলত, তারাও আজ এনসিসি (জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল) গঠনের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। কেউ কেউ বলতে চাইছেন, এটা এখন গঠন না করে পরে গঠন করা যেতে পারে। বিশেষ করে বামপন্থী কিছু সংগঠন এমন অবস্থান নিয়েছে। বিষয়টি আমাদের কাছে রহস্যজনক মনে হয়েছে।’
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারই শুধু নয়, বরং স্বাধীনতার পরে অতীতের সব সরকারই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত ও দলীয়করণ করেছে বলে অভিযোগ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এই মুখপাত্র। তাঁর মতে, যারা দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে অনাগ্রহী, তারাই কেবল এনসিসি নিয়ে দ্বিমত করতে পারে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পদ্ধতি পরিবর্তনে দুটি দল ছাড়া অন্যরা একমত: আলী রীয়াজ
প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে দুটি দল ছাড়া অন্যরা বিদ্যমান পদ্ধতি পরিবর্তনের বিষয়ে একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে আবারও এ বিষয়ে আলোচনা হবে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে সংস্কার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় দিনের আলোচনা শেষে এ কথা বলেন আলী রীয়াজ।
সংসদের জনগুরুত্বপূর্ণ চারটি স্থায়ী কমিটির প্রধান বিরোধী দল থেকে রাখার বিষয়ে দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে বলেও জানান আলী রীয়াজ। কমিটিগুলো হলো পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি, প্রিভিলেজ কমিটি, এস্টিমেটস কমিটি ও পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটি।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের অধীন অর্থবিল ও আস্থাভোট ছাড়া অন্য বিষয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতার বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে বলে জানান ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি।
সংসদে নারী প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে ১০০টি স্থায়ী আসন নির্ধারণের বিষয়েও ঐকমত্য গঠনের কথা জানান আলী রিয়াজ। তিনি বলেন, ‘কোন পদ্ধতি ও কাঠামোতে নারী প্রতিনিধিত্ব থাকবে, সেটা পরবর্তী সময়ে আলোচনা হবে। আমরা আশা করছি, আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হবে।’
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে নীতিগতভাবে কিছু দল আপত্তি জানিয়েছে বলে জানান আলী রিয়াজ। তিনি বলেন, ‘দলগুলো মনে করছে, এ বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করার দরকার আছে। আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে। এটা অত্যন্ত ইতিবাচক। জুলাইয়ের মধ্যে আমরা জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব।’
আজকের আলোচনায় জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব না থাকা প্রসঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আমরা সার্বক্ষণিক জামায়াতসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমরা আশা করছি, তারা আগামীকাল অংশ নেবে।’
আরও পড়ুনআসনের সংখ্যানুপাতে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পদ বিরোধী দল পাওয়ার বিষয়ে সবাই একমত: সালাহউদ্দিন আহমদ১ ঘণ্টা আগেঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রমকে দুটি রাজনৈতিক দল পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ করছে। এ বিষয়ে আলী রিয়াজ বলেন, ‘যেকোনো রাজনৈতিক দল এমন অভিযোগ করতে পারে। তবে আমরা নিরপেক্ষতার সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করছি।’
আরও পড়ুনঐকমত্য কমিশনের আগামীকালের আলোচনায় জামায়াত অংশ নেবে, আশা প্রেস সচিবের৫২ মিনিট আগে