নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার শিয়াচর লালখা এলাকায় বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় নিহত যুবক জনি সরকারের বাবা ও মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১৮ জুন) রাতে তাদেরকে ফতুল্লার লালখা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।  এর আগে মঙ্গলবার সকালে ফতুল্লার শিয়াচর লালখা এলাকা থেকে বস্তাবন্দি নিহত জনি সরকারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর নিহত জনির বাবা বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

গ্রেফতারকৃতরা হলো নিহত রাজু সরকারের বাবা করুনা সরকার (৫৩) ও মা অনিতা  রানী সরকার(৪৮)। তারা স্বপরিবারে ফতুল্লার শিয়াচর লালখা এলাকায় দুলালের বাড়ীতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতো।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবদে পুলিশের নিকট হত্যাকান্ডের কথা উভয়েই স্বীকার করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম জানান, নিহত জনি সরকার মাদকসক্ত এবং বখাটে স্বভারের ছিলো। মাদকের টাকার জন্য প্রতিনিয়ত জনি সরকার তার বাবা-মাকে চাপ প্রয়োগ সহ মারধর করতো। সোমবার রাতেও টাকার জন্য খারাপ ব্যবহার করে।  ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১০ টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে জনি সরকার ঘুমিয়ে পরে। ঘুমন্তবস্থায় রাজু সরকারকে  প্রথমে  রুটি বানানোর কাঠের তৈরি বেলুন দিয়ে মাথায় এবং মুখে আঘাত করে। এতে জনি সরকার অচেতন হয়ে পরলে নিহতের বাবা শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে। পরে রাত দুইটার দিকে  হাত -পা বেধে একটি বস্তায় ভরে নিহতের বাবা নিজেই মাথায় করে লালখা মোস্তফার বাড়ীর গলির ড্রেনে ফেলে রেখে যায়।পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর নিহতের বাবা নিজেই বাদী হয়ে  অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ তদন্ত নেমে সিসিফুটেজের মাধ্যমে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে নিহতের বাবা-মাকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা উভয়েই হত্যা কান্ডের বিষয়টি স্বীকার করে  ঘটনার বর্ননা দেন।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: য বক ন র য়ণগঞ জ ন হত র ব ব সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মৌলভীবাজারে উপজেলা সম্মেলন বাতিলের দাবিতে বিএনপির একাংশের বিক্ষোভ

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন কমিটি এবং উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল বাতিলের দাবি জানিয়েছে দলটির একাংশ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা বিএনপি ও তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ এই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে।

দুপুরে মৌলভীবাজার শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে মিছিলটি শুরু হয়। এরপর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কুসুমবাগ এলাকায় গিয়ে প্রতিবাদ সভার মাধ্যমে শেষ হয়। এ সময় বক্তারা দাবি করেন, অবিলম্বে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন কমিটি এবং উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল বাতিল করতে হবে। নিরপেক্ষ ও নির্যাতিত নেতা–কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত ও সমন্বয় করে ইউনিয়ন কমিটি গঠনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে নতুন করে কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণার দাবি জানান তাঁরা।

প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সদর উপজেলা কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মুহিতুর রহমান। সদর উপজেলা কমিটির সদস্য ওয়াহিদুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহমুদুর রহমান, সদর উপজেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খালিছুর রহমান, সাবেক পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, বিএনপির নেতা মাহবুব ইজদানী, সেলিম মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন প্রমুখ।

উপজেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ২২ জুনের সম্মেলন ও কাউন্সিলকে সফল করতে সদর উপজেলা কমিটির পক্ষ থেকে সব রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচটি পদে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। এতে সভাপতি পদে দুজন, সাধারণ সম্পাদক পদে দুজনসহ বিভিন্ন পদে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

কাউন্সিল সম্পন্ন করতে গঠিত নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ব্যালট পেপার ও ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা মুদ্রণের কাজ চলছে। প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা, পোলিং এজেন্ট নির্বাচন করার কাজ শেষ। কাউন্সিলে ছয়টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে। সদর উপজেলার ৭১ সদস্যবিশিষ্ট ১৩টি ইউনিটের ৯২৩ জন ভোটার। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী, জাতীয় কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান, জেলা কমিটির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন এবং সদস্যসচিব আব্দুর রহিম রিপন উপস্থিত থাকবেন।

বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা প্রসঙ্গে সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বদরুল আলম আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা এই প্রতিবাদ সভা করেছেন, তাঁদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। মুহিতুর রহমানসহ তাঁদের পক্ষের নেতা-কর্মীদের মতামত অনুযায়ী ১৩০ জনকে উপজেলার বিভিন্ন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখন আর তাঁদের দাবি অনুযায়ী সম্মেলন বাতিলের সুযোগ নেই। আর মাত্র দুই দিন আছে। কেন্দ্রের নির্দেশে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন বলেন, ‘আমরা উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটিকে বলেছি সবার সঙ্গে সমন্বয় করে কমিটি করতে। ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি সেইভাবে করা হয়েছে। এই আলোকে নির্বাচন কমিশন করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য আমরা এখন কার কী বক্তব্য, সেটা জানার চেষ্টা করছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ