রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় শ্রীশ্রী সর্বজনীন দুর্গামন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় মন ভেঙে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও। তিনি বলেন, এই মন্দির ভাঙার জন্য সরকারকে ক্ষমা চাইতে হবে।

আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে নির্মল রোজারিও এ কথাগুলো বলেন।

সম্প্রতি রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় শ্রীশ্রী সর্বজনীন দুর্গামন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের প্রতিবাদে এই মানববন্ধন করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। মানববন্ধন থেকে লালমনিরহাটে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে আটক পরেশ চন্দ্র শীল ও তাঁর ছেলে বিষ্ণু চন্দ্র শীলকে পিটিয়ে পুলিশে দেওয়া, যশোরের অভয়নগরে বর্বরোচিত হামলা, প্রশাসনের সংখ্যালঘু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক আচরণসহ সারা দেশে চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

মানববন্ধনে নির্মল রোজারিও বলেন, প্রত্যাশা ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সাম্প্রদায়িক ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। কিন্তু সে আশার গুড়ে বালি। মন্দিরের ওপর হামলা হৃদয়কে ভেঙে দিয়েছে। মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা, মসজিদ—এগুলো পবিত্র স্থান এবং অনুভূতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে। সুতরাং মন্দির ভাঙার স্পষ্ট ব্যাখ্যা সরকারকে দিতে হবে।

গত বড়দিনে ১৭টি গির্জায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে দাবি করে নির্মল রোজারিও বলেন, এই সরকার মুখে শুধু সম্প্রীতির কথা বলে, কিন্তু সম্প্রীতি রক্ষায় যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সে ক্ষেত্রে দুর্বলতা রয়েছে। কেন এই মন্দির ভাঙা হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানিয়ে তিনি মন্দিরটিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার দাবি জানান। সব ধর্মের মানুষ এখানে নিরাপদে বসবাস করবে, সম্প্রীতির মধ্যে বসবাস করবে—এমন দেশ দেখতে চান বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক। তিনি বলেন, ‘দেশে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। সরকারের উসকানিতে, সরকারি লোকদের কথাবার্তায় সাম্প্রদায়িক শক্তি বা মব ভায়োলেন্সের নামে যারা কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, তারা আরও উৎসাহিত হচ্ছে।’

দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক শক্তি তৎপর রয়েছে উল্লেখ করে নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, সরকারের উদ্যোগে একটি মন্দির বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার দেশকে যে অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছে, এ অবস্থা দেশের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি ডেকে আনবে। এ থেকে পরিত্রাণে সব গণতান্ত্রিক শক্তি, অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মানববন্ধন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মন দ র ভ ঙ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে কদম রসুল সেতুর সংযোগ সড়কের প্রবেশপথ পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর প্রস্তাবিত কদম রসুল সেতুর নগর প্রান্তের সংযোগ সড়কের প্রবেশপথ পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শহরের কালীর বাজার এলাকার ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা ব্যস্ততম ফলপট্টি এলাকার পরিবর্তে অন্যত্র এই প্রবেশপথ নির্মাণের দাবি জানান।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ‘কালীর বাজার বৃহত্তর ব্যবসায়ীরা ও স্থানীয় জনসাধারণ’–এর ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়। এতে কালীর বাজার ও আশপাশের এলাকার ব্যবসায়ী ও লোকজন অংশ নেন।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ব্যবসায়ী নাজির খান এবং সঞ্চালনা করেন রবিন হোসেন। এতে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, ব্যবসায়ী তপু চৌধুরী, মো. সুমন চৌধুরী প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সংবাদমাধ্যমে তাঁরা জানতে পেরেছেন, শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিতব্য কদম রসুল সেতুর পশ্চিমপাড়ের প্রবেশপথ নামবে নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনে। এ সংবাদটি তাঁদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের ও আতঙ্কের। তাঁরা বলেন, কালীর বাজার ও তৎসংলগ্ন ফলপট্টি এলাকাটি অত্যন্ত ব্যস্ত সড়ক। এখানে আছে শহরের একটি বড় স্কুল—নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল এবং নারায়ণগঞ্জ কলেজ। আছে শহরের দুটি বড় বাজার—কালীর বাজার ও দিগুবাবু বাজার। এটি শহরের রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল ও লঞ্চঘাটের সংযোগ সড়ক হওয়ায় প্রতিনিয়ত এখানে ভয়াবহ যানজট লেগে থাকে। স্বাভাবিক সময়েও ব্যবসা পরিচালনা ও চলাচলে তাঁরা দুর্ভোগ পোহান। এর মধ্যে যদি সেতুর উঠানামার প্রবেশপথ এখানে স্থাপন করা হয়, তা হলে দুর্ভোগ আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।

এর আগে একই দাবিতে গত ৩ মে সংবাদ সম্মেলন করেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলনের নেতারা।

শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর কদম রসুল সেতু নির্মাণ প্রকল্প ২০১৭ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত। যদিও সেতু নির্মাণের কাজ এখনো শুরু হয়নি। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩৫ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত সেতুটি নগরের ফলপট্টি এলাকা থেকে শুরু হয়ে বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ এলাকায় গিয়ে মিলিত হবে। সেতুটি নির্মাণ করবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। সেতুর দৈর্ঘ্য ৩৮০ মিটার, প্রস্থ ১২ দশমিক ৮০ মিটার এবং সংযোগ সড়ক ১ হাজার ৩৭৯ মিটার।

আরও পড়ুননারায়ণগঞ্জে কদম রসুল সেতুর প্রবেশমুখ ফলপট্টি থেকে সরানোর দাবি নাগরিক আন্দোলনের০৩ মে ২০২৫আরও পড়ুননারায়ণগঞ্জের কদম রসুল সেতুর সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ পুনর্নির্ধারণের দাবিতে স্মারকলিপি২৯ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দরে সরকারি খাল ও বাজার অবমুক্তির জন্য  মানববন্ধন
  • কদম রসূল সেতুর নকশা পুন:সংস্কারের দাবিতে শহরে মানববন্ধন
  • নোয়াখালীতে মাদ্রাসাছাত্র ‘হত্যার’ বিচার দাবিতে মানববন্ধন
  • নারায়ণগঞ্জে কদম রসুল সেতুর সংযোগ সড়কের প্রবেশপথ পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন
  • কদম রসুল সেতুর পশ্চিমাংশের মুখ পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন
  • মন্দির ভাঙচুরের অভিযোগে সরকার জানাল: রেলের জমি থেকে মণ্ডপ উচ্ছেদ
  • আকিজ সিমেন্ট ও ফিড ফ্যাক্টরীর বায়ু দূষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • মন্দির ভাঙচুরের অভিযোগে সরকার জানাল, রেলের জমি থেকে মণ্ডপ উচ্ছেদ
  • খিলক্ষেতে দুর্গামন্দির ভাঙচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন