মন্দির ভেঙে দেওয়ার ঘটনা মনকেও ভেঙে দিয়েছে: ঐক্য পরিষদের সভাপতি
Published: 28th, June 2025 GMT
রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় শ্রীশ্রী সর্বজনীন দুর্গামন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় মন ভেঙে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও। তিনি বলেন, এই মন্দির ভাঙার জন্য সরকারকে ক্ষমা চাইতে হবে।
আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে নির্মল রোজারিও এ কথাগুলো বলেন।
সম্প্রতি রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় শ্রীশ্রী সর্বজনীন দুর্গামন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের প্রতিবাদে এই মানববন্ধন করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। মানববন্ধন থেকে লালমনিরহাটে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে আটক পরেশ চন্দ্র শীল ও তাঁর ছেলে বিষ্ণু চন্দ্র শীলকে পিটিয়ে পুলিশে দেওয়া, যশোরের অভয়নগরে বর্বরোচিত হামলা, প্রশাসনের সংখ্যালঘু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক আচরণসহ সারা দেশে চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
মানববন্ধনে নির্মল রোজারিও বলেন, প্রত্যাশা ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সাম্প্রদায়িক ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। কিন্তু সে আশার গুড়ে বালি। মন্দিরের ওপর হামলা হৃদয়কে ভেঙে দিয়েছে। মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা, মসজিদ—এগুলো পবিত্র স্থান এবং অনুভূতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে। সুতরাং মন্দির ভাঙার স্পষ্ট ব্যাখ্যা সরকারকে দিতে হবে।
গত বড়দিনে ১৭টি গির্জায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে দাবি করে নির্মল রোজারিও বলেন, এই সরকার মুখে শুধু সম্প্রীতির কথা বলে, কিন্তু সম্প্রীতি রক্ষায় যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সে ক্ষেত্রে দুর্বলতা রয়েছে। কেন এই মন্দির ভাঙা হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানিয়ে তিনি মন্দিরটিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার দাবি জানান। সব ধর্মের মানুষ এখানে নিরাপদে বসবাস করবে, সম্প্রীতির মধ্যে বসবাস করবে—এমন দেশ দেখতে চান বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক। তিনি বলেন, ‘দেশে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। সরকারের উসকানিতে, সরকারি লোকদের কথাবার্তায় সাম্প্রদায়িক শক্তি বা মব ভায়োলেন্সের নামে যারা কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, তারা আরও উৎসাহিত হচ্ছে।’
দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক শক্তি তৎপর রয়েছে উল্লেখ করে নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, সরকারের উদ্যোগে একটি মন্দির বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার দেশকে যে অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছে, এ অবস্থা দেশের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি ডেকে আনবে। এ থেকে পরিত্রাণে সব গণতান্ত্রিক শক্তি, অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মানববন্ধন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মন দ র ভ ঙ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
দোষ ঢাকতে ছাত্রলীগ কর্মী দিয়ে মানববন্ধনের ঘোষণা জবি আইইআর পরিচালকের
র্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. মনিরা জাহান নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাদের সহযোগিতায় মানববন্ধন আয়োজন করেছেন।
সোমবার (১১ আগস্ট) দিবাগত গভীর রাতে ইনস্টিটিউটের অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপে একটি মানববন্ধনের ঘোষণা দেওয়া হয়। সেখানে র্যাগিং সংক্রান্ত সংবাদকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা দাবি করা হয়।
মানববন্ধনটি মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে (ভাস্কর্য চত্বর) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই পোস্ট ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।
আরো পড়ুন:
সাংবাদিক তুহিন হত্যার বিচারের দাবিতে মেট্রোপলিটন প্রেস ক্লাবের মানববন্ধন
কুড়িগ্রামে গৃহবধূকে নির্যাতনের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
জানা যায়, মানববন্ধনের ডাক যিনি দিয়েছেন, তিনি আইইআরের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং তার ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও সহকারী পরিচালকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি ইনস্টিটিউটের নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন এবং র্যাগিংয়ের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।
গত ৩০ জুলাই আইইআরে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের ওপর ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা অমানবিক নির্যাতন চালান। এতে এক শিক্ষার্থী প্যানিক অ্যাটাকে জ্ঞান হারান এবং প্রায় সব নবীন শিক্ষার্থী নির্যাতনে শিকার হন। অভিযুক্তদের সংখ্যা প্রায় ১৭ জন।
তবে, অভিযোগ রয়েছে—ঘটনাটি যথাযথ তদন্ত ও বিচার না করে পরিচালক মনিরা জাহান ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে বিব্রত করেছেন এবং উল্টো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ তুলেছেন। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও বিদ্রুপ করতে উৎসাহিত করেছেন।
আইইআরয়ের র্যাগিং কাণ্ডে সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়পরায়ণ বিচার দাবিতে সংশ্লিষ্ট মহলের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দ্রুত এবং স্বচ্ছ তদন্ত জরুরি বলে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী