‘বেহুলার লাচারি’–শিল্পীদের নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত
Published: 30th, June 2025 GMT
টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী লোক উৎসব ‘বেহুলার লাচারি’। প্রতিবছর শ্রাবণ মাসের শেষ দিনে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। উৎসবটিকে ‘শাওনে ডালা’ও বলা হয়। টাঙ্গাইলের বিভিন্ন নদ-নদীতে স্থানীয় লোকশিল্পীরা এই উৎসবের আয়োজন করেন। ‘বেহুলার লাচারি’–শিল্পীদের সক্ষমতা বাড়াতে সম্প্রতি দিনব্যাপী একটি কর্মশালা হয়েছে।
ইউনেস্কোর অর্থায়নে গত শুক্রবার টাঙ্গাইলের একটি রিসোর্টে ‘শাওনে ডালা ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ওয়ার্কশপ ২০২৫’ নামে যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্রতী, সাধনা, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও এলেঙ্গা রিসোর্ট। কর্মশালাটি পরিচালনা করেন ‘শাওনে ডালা’–গবেষক লাবণ্য সুলতানা।
সাধনার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বেহুলার লাচারির আয়োজক টাঙ্গাইলের স্থানীয় ১০টি দল। দলগুলো হলো মনির অপেরা, ভাই-বোন যাত্রাপালা, মায়ের দোয়া যাত্রাপালা, ভাই ভাই বেহুলা পালা, সুজন বন্ধু যাত্রাপালা, একডালা যাত্রাপালা, নূরনবী যাত্রাপালা, গণেশবাবু নাট্য অভিনয় গোষ্ঠী, শাখারিয়া বেহুলার লাচারি গোষ্ঠী ও লালমিয়া শিল্পীসংঘ।
শিল্পীদের পাশাপাশি কর্মশালায় অংশ নেন শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটি, রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়, নাট্য গবেষণাকেন্দ্র যশোর, শাহিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ জামালপুরের শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা। প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে তাঁরা ‘শাওনে ডালা’–শিল্পীদের কাছ থেকে তাঁদের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
কর্মশালায় ‘বেহুলার লাচারি’ নিয়ে দীর্ঘদিনের গবেষক ও নৃত্যশিল্পী লুবনা মারিয়ামের লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। অতিথি ছিলেন সারওয়াত সিরাজ, নৃত্যগুরু সাজু আহমেদ, শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক আফরিনা আফরোজ চৌধুরী, লোকনৃত্যভঙ্গি সংগ্রাহক কামরুল হাসান ফেরদৌস, নৃত্যশিল্পী অর্থি আহমেদ ও সংগীতশিল্পী নির্ঝর চৌধুরী।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মাছবোঝাই পিকআপ খাদে, এলাকাবাসীর মাছ ধরার ‘উৎসব’
ফরিদপুরের নগরকান্দায় মাছবোঝাই একটি পিকআপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়। এরপর খাদে ছড়িয়ে পড়া মাছ ধরতে স্থানীয় লোকজন ভিড় করেন। আজ শুক্রবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের যদুরদিয়া এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পশ্চিম পাশে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাবদা মাছবোঝাই পিকআপটি গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ফরিদপুর থেকে ভাঙ্গার দিকে যাচ্ছিল। রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যদুরদিয়া এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি খাদে পড়ে যায়। এতে গাড়িতে থাকা মাছের ঝুড়িগুলো পানিতে তলিয়ে যায় এবং মাছ ছড়িয়ে পড়ে।
দুর্ঘটনার দুই ঘণ্টা পর ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে রেকার দিয়ে পিকআপটি তোলা হয়। ওই সময় গাড়ির লোকজন যতটা সম্ভব মাছ উদ্ধার করে গাড়ি নিয়ে চলে যান। এরপর সকাল ছয়টা থেকে আশপাশের গ্রাম থেকে মানুষ মাছ ধরতে খাদে নামেন। নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ—সবাই মাছ ধরায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মহাসড়কের ধারে দাঁড়িয়ে বহু মানুষ এ দৃশ্য উপভোগ করেন। কেউ খ্যাপলা জাল, কেউ গামছা, আবার কেউ হাত দিয়ে মাছ ধরতে থাকেন।
সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মাছ ধরার প্রতিযোগিতায় যেন কেউ কারও থেকে পিছিয়ে থাকতে চান না। এক বালতি মাছ হাতে খাদ থেকে উঠলেন ফাতেমা বেগম (২৮)। তিনি জানান, প্রায় ১০ কেজি মাছ ধরতে পেরেছেন। হাসতে হাসতে বলেন, ‘আমার থেকে অনেক বেশি মাছ ধরেছে অনেকে।’
স্থানীয় বাসিন্দা হারুন অর রশিদ (৫৫) বলেন, খবর পেয়ে গ্রামের মানুষ ছুটে আসে। এরপর শুরু হয় মাছ ধরার ধুম।
মাছ ধরার খবর শুনে সেখানে এসেছিলেন ভাঙ্গার মহেশ্বর্দী গ্রামের মাইনুদ্দীন আহমেদ (৩৫)। তিনি বলেন, সবাই পাবদা মাছ ধরছেন। কেউ খালি হাতে ফেরেননি। কেউ ১৫ কেজি, কেউ আধা মণ পর্যন্ত মাছ পেয়েছেন।
পিকআপটি কোথা থেকে এসেছিল, কোথায় যাচ্ছিল কিংবা মাছের পরিমাণ ও মালিকের পরিচয় জানা যায়নি। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রকিবুজ্জামান বলেন, আজ ভোরে নগরকান্দার যদুরদিয়ায় মাছবোঝাই একটি পিকআপ খাদে পড়ে যায়। তবে এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।