ঢাকার দোহার উপজেলায় বিএনপি নেতা হারুনুর রশিদকে (৬৩) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার সকাল সাড়ে ৬টায় উপজেলার বাহ্রা হাবিল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কের কাছে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বিএনপি নেতা হারুন উপজেলার বাহ্রা গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি নয়াবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ছিলেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার সকালে নামাজ পড়ে বাড়ির পাশে নদীর ধারে ওয়াকওয়ে সড়কে হাঁটতে বের হলে মোটরসাইকেলে করে তিন যুবক এসে তাকে লক্ষ্য করে হঠাৎ গুলি শুরু করে। এসময় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। গুলির শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজনকে এগিয়ে আসতে দেখে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়।

এ সময়ে স্থানীয়রা তাকে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.

নুসরাত তারিন বলেন, তার মাথায়, ঘাড়ে ও শরীরে মোট ৬টি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।

নিহত হারুনের ভাতিজা মো. শাহিন আলম বলেন, প্রতিদিনের মতো ভোরে নামাজ শেষে চাচায় হাটঁতে বের হন। এসময় মোটরসাইকেলযোগে তিন যুবক এসে তাকে গুলি করে ফেলে চলে যায়। কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেননি তার পরিবারের সদস্যরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, বেশ কিছুদিন আগে তিনি স্থানীয়দের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নদীর বালু উত্তোলন বন্ধ করেন। এ নিয়ে প্রভাবশালীদের সঙ্গে তার বিরোধ হয়। প্রভাবশালীদের পথের কাঁটা হয়ে পড়ায় তাকে পরিকল্পিত হত্যা করা হতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, কিছুদিন ধরে নয়াবাড়ীসহ দোহার উপজেলায় বিএনপির মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়। এতে সক্রিয় হয় দুটি গ্রুপ। নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে একে অপরের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সেই জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে কি না খতিয়ে দেখার অনুরোধ করছি।

হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে দোহার থানার ওসি মো. হাসান আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, নিহত হারুনুর রশিদের সঙ্গে পূর্বশত্রুতা আছে কি না এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও বালু উত্তোলন ও আধিপত্য নিয়ে বিএনপির অপর একটি গ্রুপের যোগসাজশ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন ত দ হ র উপজ ল ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্ধিরগঞ্জে দুই গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পৃথক দুটি পরিবহনে আগুন দিয়ে নাশকতার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৪০ জন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও দুষ্কৃতিকারীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

হামলাকারীরা দলীয় স্লোগান ও রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিয়ে পরিবহনে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং পুলিশ জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছে। 

জানাগেছে, গত শনিবার (১৫ নভেম্বর) ভোরে নাফ পরিবহন নামের একটি মিনিবাস (ঢাকা-মেট্রো-জ-১১-০৩৩৮) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ অফিসের মেইন গেটের সামনে পার্কিং করা অবস্থায় দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

এরআগে , গত ১২ নভেম্বর রাতে তিনি দুই যাত্রী নিয়ে জালকুড়ি এলাকায় পৌঁছালে ২০/২৫ জন ব্যক্তি রাস্তা অবরোধ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এসময় তারা জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকে। পরবর্তীতে তারা তাঁর সিএনজিতে (ঢাকা-থ-১১-৯৯২১) পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। 

দুটি নাশকতার ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং জড়িতদের শনাক্তে আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলছে বলে জানা গেছে।

মিনিবাসে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শনিবার ভোরে মিনিবাস চালক সোহাগ মিয়া (৩৮) স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন যে নাফ পরিবহন নামের একটি মিনিবাস (ঢাকা-মেট্রো-জ-১১-০৩৩৮) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ অফিসের মেইন গেটের সামনে পার্কিং করা অবস্থায় দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ভুক্তভোগী চালক দাবি করেন, এতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পরে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুড়ে যাওয়া মিনিবাসটি জব্দ করে হেফাজতে নেয়।

অন্যদিকে সিএনজি চালক মো. বাবুল মিয়া (৫৪) অভিযোগ করেন, গত ১২ নভেম্বর রাতে তিনি দুই যাত্রী নিয়ে জালকুড়ি এলাকায় পৌঁছালে ২০/২৫ জন ব্যক্তি রাস্তা অবরোধ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এসময় তারা জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকে।

পরবর্তীতে তারা তাঁর সিএনজিতে (ঢাকা-থ-১১-৯৯২১) পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ সিএনজিটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, আমরা প্রতিটি নাশকতার ঘটনা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ইতোমধ্যে পৃথক দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত দ্রুত গতিতে চলছে। জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করছে, তারা যেই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফতুল্লায় সন্ত্রাস ও নাশকতা ঠেকাতে রিয়াদ চৌধুরীর নির্দেশে বিক্ষোভ
  • সিদ্ধিরগঞ্জে দুই গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা
  • সোনারগাঁ উপজেলা তাঁতীদলের কমিটি ঘোষণা