Samakal:
2025-07-03@08:13:44 GMT

মেয়েদের পায়ে লুটাল ইতিহাস

Published: 3rd, July 2025 GMT

মেয়েদের পায়ে লুটাল ইতিহাস

মুহূর্তটি বাংলাদেশ নারী ফুটবলের জন্য স্মরণীয়। চোখধাঁধানো সেই মুহূর্তটি আসে ম্যাচের ৭২ মিনিটে। প্রতিপক্ষ এক ডিফেন্ডারের সামনে থেকে বাঁ পায়ে নিখুঁত শট নেন ঋতুপর্ণা চাকমা। হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে বলটি মিয়ানমার গোলরক্ষককে পরাস্ত করে চলে যায় জালে। তাঁর অনিন্দ্যসুন্দর এই গোলেই কার্যত ম্যাচের গল্পটি লেখা হয়ে যায় বাংলাদেশের নামে। লেখা হয়ে যায় নতুন ইতিহাসের।

বুধবার ইয়াঙ্গুনে এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ঋতুপর্ণা চাকমার জোড়া গোলে স্বাগতিক মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারিয়ে স্বপ্নের দোরগোড়ায় চলে যায় পিটার বাটলারের দল।

কিন্তু গতকালই যে স্বপ্নটা ধরা দেবে, তা কল্পনা করেননি বাংলাদেশের মেয়েরা। বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তানের মধ্যকার দিনের অপর ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হওয়ায় নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের এশিয়ান কাপে খেলা। ১৯৮০ সালে প্রথমবার এশিয়ান কাপে খেলেছিল বাংলাদেশ পুরুষ দল। ৪৫ বছর পর তাদের কাতারে যোগ হলো মনিকা চাকমা-মারিয়া মান্দাদের নাম। দক্ষিণ এশিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা এখন এশিয়াডে। ২০২৬ সালের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে মেয়েদের এশিয়ান কাপ।

নতুন এই ইতিহাস গড়ায় নারী ফুটবল দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.

মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল এক অভিনন্দন বার্তায় তিনি বলেন, এই অর্জন শুধু নারী ফুটবলের নয়, গোটা জাতির জন্য গর্বের। এটি আমাদের সম্ভাবনা, প্রতিভা ও অদম্য চেতনার একটি অনন্য উদাহরণ।

র‍্যাঙ্কিংয়ে ৩৬ ধাপ এগিয়ে থাকা বাহরাইন, ৭৩ ধাপ ওপরে থাকা মিয়ানমারকে হারানোর পর ৫ জুলাই তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভাবনা শুরু করেন কোচ পিটার বাটলার। ম্যাচের ছক কষার আগেই তাঁর জন্য স্বস্তি হয়ে এলো এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার টিকিটপ্রাপ্তিতে। এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে গ্রুপ ‘সি’তে দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বাংলাদেশ। সমান ম্যাচে মিয়ানমারের পয়েন্ট ৩। ১ পয়েন্ট করে বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তানের। গ্রুপের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ যদি তুর্কমেনিস্তানের কাছে হেরে যায় আর মিয়ানমার জিতে যায় বাহরাইনের বিপক্ষে, তখন সমান ৬ পয়েন্ট হবে বাংলাদেশ আর মিয়ানমারের। তাতেও সমস্যা নেই বাংলাদেশের। হেড টু হেডে এগিয়ে থাকায় বাংলাদেশের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিশ্চিত।

বাংলাদেশের নারী ফুটবলে বইছে বসন্তের হাওয়া। এশিয়ান পর্যায়ে লাল-সবুজের দলটি। অথচ ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর অলিম্পিক বাছাইয়ে এই মিয়ানমারের কাছে ৫-০ গোলে হারে বাংলাদেশ। সাত বছরের ব্যবধানে এই বাংলাদেশ আরও পরিণত ও পরিপক্ব হয়েছে। ভারত, নেপালের মতো দলকে পেছনে ফেলে দু’বার নারী সাফের শিরোপা জিতেছে। তার পরও ম্যাচটি মিয়ানমারের মাঠে বলে ভয় ছিল বেশি। তবে মূল পর্বে এক টিকিটের দুই দাবিদার লড়াইয়ে শুরু থেকে দেখা যায় দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস। বাংলাদেশের খেলায় ফুটে ওঠে পরিকল্পনার ছাপ। রক্ষণভাগ অটুট রেখে কাউন্টার অ্যাটাকে বেশ কয়েকবারই বিপজ্জনক হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের মেয়েরা। তারই ধারাবাহিকতায় ম্যাচের ১৮ মিনিটে লিড নেয় লাল-সবুজের দলটি। বক্সের খুব কাছে শামসুন্নাহার জুনিয়রকে ফেলে দেন মিয়ানমারের ডিফেন্ডার খিন মুয়ো থান্ডার তুন।

রেফারি ফ্রি কিকের বাঁশি বাজান। ঋতুপর্ণা চাকমার সেট পিস মিয়ানমারের রক্ষণ দেয়ালে লেগে ফিরে আসে। এ ফরোয়ার্ডের নেওয়া ফিরতি শট চলে যায় স্বাগতিকদের জালে। স্তব্ধ হয়ে যায় গ্যালারি। যে গ্যালারি থেকে একটু আগেও ‘মিয়ানমার, মিয়ানমার’ বলে স্লোগান উঠছিল। ২৪ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল বাংলাদেশ। বাঁ প্রান্ত থেকে ঋতুপর্ণার ক্রসে ছোট বক্সের ভেতরে শামসুন্নাহার জুনিয়র বলে পা লাগালেও তা ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হয়। দারুণ সুযোগ নষ্ট হওয়ায় হতাশায় মুখ লুকান শামসুন্নাহার। 

বিরতির পর বাংলাদেশের রক্ষণে চাপ বাড়াতে থাকে মিয়ানমার। এই অর্ধে কৌশলী ফুটবল খেলে পিটার বাটলারের দল। রক্ষণভাগ আগলে রেখে কাউন্টার অ্যাটাকের পরিকল্পনায় খেলতে থাকেন মেয়েরা। তার ফল আসে ম্যাচের ৭২ মিনিটে। ঋতুপর্ণার সেই চোখধাঁধানো গোলে আত্মবিশ্বাসও যেন ভর করে পুরো দলে। বাহরাইনের বিপক্ষে ম্যাচেও বাঁ পায়ে চোখধাঁধানো গোল করেন ঋতুপর্ণা। ৮৯ মিনিটে এক গোল পরিশোধ করে মিয়ানমার। সান থাউয়ের ক্রসে আলতো টোকায় বল জালে জড়ান উইন উইন। জমে ওঠে লড়াই। রেফারি অতিরিক্ত চার মিনিট দিলে মিয়ানমার প্রবল চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। তবে কৌশলী বাটলার এই সময় খেলোয়াড় পরিবর্তন করে সময় ক্ষেপণ করেন। একটু পর রেফারির শেষ বাঁশি বাজতেই ঐতিহাসিক জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে বাংলাদেশ শিবির।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ টবল ত র কম ন স ত ন র ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

আজ যারা উপহাস করে, ভবিষ্যতে তারাই ভক্ত: আরশ খান

ক্যারিয়ারে বারবার হোঁচট খেয়েছেন ছোট পর্দার অভিনেতা আরশ খান। অনেকের উপহাসের পাত্রও হয়েছে। তবুও থেমে থাকেননি। নিজেকে গড়তে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। সেই চেষ্টা এখনও চলমান। সম্প্রতি কিছু ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে কটাক্ষের শিকার হচ্ছেন তিনি। তবে এগুলো মাথায় না নিয়ে ছুটে চলছেন আপন গতিতে।

এসবের মাঝে আজ সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন আরশ। সেখানে উপহাসের কথা বলেছেন তিনি। উদাহরণস্বরূপ টেনেছেন শাকিব খানকে। অন্য কারও উদাহরণ না দিয়ে নিজের সঙ্গেই উদারণ দিয়ে একরকম শিক্ষার বানী শুনিয়েছেন আরশ।

তিনি লিখেছেন, ‘উপহাসে আমার এখন আর খারাপ লাগেনা, কষ্ট হয় না। কারণ, শাকিব খান নামটা শুনলে এক সময় মজা করা আমি আজ লাইনে দাঁড়িয়ে তার সিনেমার টিকিট কাটি।’

শেষে অভিনেতা লিখেছেন, ‘মনে রাখবেন, আজ যারা আপনাকে নিয়ে উপহাসের হাসি হাসে, ভবিষ্যতে তারাই আপনার ভক্ত।’

এর আগে গেল বছর মুক্তি পাওয়া শাকিব খানের ‘রাজকুমার’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন আরশ খন। এখানে তিনি ছিলেন শাকিব খানের বাবা আব্দুল গনি চরিত্রে (ছোটবেলার)। এই সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন আরশ খান।

প্রসঙ্গত, গেল মাসেই একটি অনুষ্ঠানে নিজের কঠিন সময়ের কথা বলতে গিয়ে শাকিব খান বলেন, ‘এই চলচ্চিত্র (জগৎ) সত্যি অনেক রং দেখিয়েছে। একসময় যখন সত্যিই খুব হতাশ হয়ে যেতাম। ভাবতাম, সত্যিই হয়তো বা আমাকে দিয়ে আর কিছু হবে না। আপনাদের হয়তো কারও কারও মনে থাকতে পারে, কিছুদিন আগে আমেরিকা থেকে যখন এসেছি কিছু কারণে অনেক কাছের মানুষকেও বলতে শুনেছি, “তোমার দিন শেষ শাকিব, ইউ আর ডেড হর্স।” নিজের চেনা মুখগুলোকেই পাল্টে যেতে দেখেছি। অবাক হয়েছি, দুঃখিত হয়েছি। ভেবেছি হয়তো এখানেই শেষ। ইতি টানতে হবে। আবার ভেবেছি, যাওয়ার আগে একটা ট্রাই (চেষ্টা) তো করে যাই। এত বছর ধরে মানুষ আমাকে এত ভালোবাসল, একটা ট্রাই করে যাই। না হলে ছেড়ে দেব, ছেড়ে দেব চলচ্চিত্র। শূন্য হাতে এসেছিলাম, যা পেয়েছি তা অনেক।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ