হাঁড়ির মধ্যে বিষধর সাপ। হাতে লাঠি। মুখে গান। গানের ফাঁকে ফাঁকে মো. শাকিল (২৫) নামের এক তরুণ বলছেন, ‘উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিমে যাবি না, আকাশে–পাতালে কোত্থাও যাবি না।’ কিন্তু সাপ কি আর পোষ মানে। সে ফোঁস করে ছোবল মেরে বসল শাকিলকে। গত শনিবার বিকেলে ভোলার মনপুরার মেঘনাপারে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় লোকজন সঙ্গে সঙ্গে শাকিলকে উদ্ধার করে নিয়ে যান ওঝার কাছে। ওঝা বিষ নামান। তাতেও তিনি সুস্থ হন না। অবশেষে গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভোলার মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাঁকে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো না। আজ রোববার ভোররাতে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া।

শাকিল মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা খোকন মাঝির ছেলে। খেলাচ্ছলে বিষধর গোখরা সাপকে পোষ মানাতে গিয়ে সাপের কামড়েই তাঁর মৃত্যু হয়।

ভিডিওতে শাকিল বলছেন, ‘যে করে ঠাট্টা, তাঁকে কামড় দিবি আটটা। যে করে চলতে মানা, তার চোখ করবি কানা।’ তিনি আবার কাছে গিয়ে ঠাট্টাচ্ছলে বলেন, ‘শঙ্খমালা, তোর দেহ কালা।’ একটু সুর করে গান ধরেন। পাকা সাপুড়ের মতো সাপের সামনে হাত ঘোরান। গান করেন। আবার সে দৃশ্য ভিডিও করে আরেকজন। বাবা–মা পাশ থেকে ভিডিও করতে নিষেধ করেন। খেলা করতে নিষেধ করেন। তবু তিনি একটি লাঠি সাপের মাথায় ঘোরাতে থাকেন। লাঠি দেখে সাপটি আরও রেগে যায়। মস্ত ফণা ধরে। আবার ঢাকনি দিয়ে ঢেকে রাখেন। গত ১৫ দিন আগে সাপটি ধরে এনে এমনভাবে পোষ মানাতে চেষ্টা করেন তিনি।

শাকিলের পরিবার জানায়, ১৫ দিন আগে স্থানীয় মোয়াজ্জেম সৈয়াল নামে জনৈক ব্যক্তির বাড়ি থেকে শাকিল সাপটি ধরে এনে লালন-পালন করেন। পোষ মানাতে চেষ্টা করেন। সাপটি বিষধর হওয়া সত্ত্বেও তিনি সেটিকে নিয়ে খেলায় মেতে থাকেন। শনিবার বিকালে বেড়িবাঁধ এলাকায় নিয়ে সবার সামনে খেলা দেখাতে গেলে উৎসুক জনতার সামনে তাঁর পায়ের ঊরুতে সাপটি কামড় দেয়। সাপে কামড় দেওয়া ক্ষতস্থানে মুখ দিয়ে চুষে বিষ নামান। বিষ নেমেছে ভেবে সাপটিকে নিয়ে বাসায় আসেন। এর কিছুক্ষণ বাদে অসুস্থ বোধ করেন তিনি। পরিবারের সদস্যরা সঙ্গে সঙ্গে তাঁর পায়ে রশি বেঁধে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যান। ওঝা বিষ নামালে তিনি পায়ের বাঁধনটি খুলে দেন। কিন্তু তাঁর শরীরের যন্ত্রণার ছটফটানি কমে না। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাঁকে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে আজ রোববার রাত চারটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

মনপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান কবীর বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ