জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। বিচারপতি মো গোলাম মোর্তোজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইবুনাল আজ বৃহস্পতিবার এ অভিযোগ গঠন করেন। 

অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম কোনো মামলার বিচার শুরু হল। পাশাপাশি এ মামলার সব সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৩ আগস্ট দিন ধার্য করেন ট্রাইবুনাল। 

মামলার অপর দুই আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও কারাগারে থাকা সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। অভিযোগ গঠনের সময় মামুন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। 

ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো.

শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য আস দ জ জ ম ন খ ন ক ম ল

এছাড়াও পড়ুন:

কীটনাশকে বিলুপ্তির মুখে পোকামাকড়

ফল-ফসল ও এসব থেকে তৈরি খাবার খেয়ে আমরা বেঁচে থাকি। আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে এসব ফল-ফসল উৎপাদনে ব্যবহার করা হয় কীটনাশক। আর এতে মারা যায় পোকামাকড়। অনেকটা নির্বিচারেই তাদের প্রাণ যায়। এগুলোর মধ্যে অনেক ভালো পোকামাকড়ও থাকে, যারা প্রকৃতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। ফসল রক্ষায় কীটনাশক ব্যাপক ব্যবহারের কারণে বিশ্বব্যাপী পোকামাকড়ের অনেক প্রজাতি এখন বিলুপ্তির মুখে।

নতুন এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে দেখা গেছে, ফল ও সবজিতে ছত্রাকনাশক স্প্রে করে পোকামাকড়ের ক্ষতি হচ্ছে বেশি। নিরাপদ বলে বিবেচিত মাত্রায় ব্যবহার কীটনাশকও বড় ক্ষতির কারণ হয়। অস্ট্রেলিয়ার সিডনির ম্যাককোয়ারি ইউনিভার্সিটির এক নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, ছত্রাকজনিত রোগ প্রতিরোধে ব্যবহৃত রাসায়নিক ক্লোরোথ্যালোনিল পোকামাকড়ের বংশ বৃদ্ধির ক্ষমতা নষ্ট করছে ও মেরে ফেলছে। 

ম্যাককোয়ারির স্কুল অব ন্যাচারাল সায়েন্সেসের গবেষকরা ল্যাবে ব্যবহৃত সাধারণ পোকামাকড়ের মডেল, ফলের মাছিগুলোয় ক্লোরোথ্যালোনিলের প্রভাব পরীক্ষা করেছেন। ফলের মাছি বন্য অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক অনুরূপ পোকামাকড়ের প্রতিনিধিত্ব করে। এগুলো সাধারণ ফলের মাছি বা ভিনেগার মাছি নামে পরিচিত। ফসলের ক্ষতি করা পোকামাকড়ের বিপরীতে এগুলো পচা ফল খায়। খামার ও বাগানে বর্জ্য ভেঙে ফেলা ও পুষ্টির পুনর্ব্যবহারে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক পিএইচডি প্রার্থী দর্শিকা দিসাওয়া বলেন, ডি. মেলানোগাস্টার (সাধারণ ফলের মাছি) খাদ্যশৃঙ্খলের অন্তর্ভুক্ত। তারা অন্য অনেক প্রজাতির খাদ্য।

পরীক্ষায় ফলের মাছি লার্ভা ক্লোরোথ্যালোনিলের সংস্পর্শে আসে, যা প্রকৃত কৃষিজাত পণ্য যেমন– ক্র্যানবেরি ও ওয়াইন গ্রেপে পাওয়া যায়। দর্শিকা দিসাওয়া বলেন, ‘আমরা যেসব মাছি পরীক্ষা করেছি, তার প্রজননের ওপর খুব কম ঘনত্বের কীটনাশকেরও বিশাল প্রভাব পড়ে। এটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মোট সংখ্যার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, এটি স্ত্রী-পুরুষ– উভয়ের উর্বরতাকেই প্রভাবিত করে।’

গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মাছি কীটনাশকের সংস্পর্শে আসেনি, তাদের তুলনায় রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা মাছিগুলোর ডিম উৎপাদন ৩৭ শতাংশ হ্রাস পায়। অধ্যাপক ফ্লেউর পন্টন বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম, বেশি মাত্রার কীটনাশক মাছির ডিম উৎপাদনের ওপর বেশি প্রভাব ফেলবে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করলাম, খুব কম পরিমাণও তীব্র নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।’

ছত্রাকনাশক ক্লোরোথ্যালোনিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে নিষিদ্ধ। তবে অস্ট্রেলিয়ায় ছত্রাকজনিত রোগ ও পাতার ঝলসানো ঠেকাতে এটি ব্যাপকভাবে স্প্রে করা হয়। এ ছত্রাকনাশকের অবশিষ্টাংশ খামারের কাছাকাছি মাটি ও পানিতে পাওয়া যায়। খাবারের প্রতি কিলোগ্রামে এর মাত্রা প্রায় শূন্য থেকে ৪৬০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। অধ্যাপক পন্টন বলেন, ক্লোরোথ্যালোনিল প্রায়ই কোনো রোগ না থাকলেও প্রতিরোধমূলকভাবে ব্যবহার করা হয়। মানুষ ধরে নেয় ক্লোরোথ্যালোনিলের মতো ছত্রাকনাশক শুধু ছত্রাকজনিত রোগের ওপর প্রভাব ফেলে। এগুলো অন্যান্য প্রজাতির জন্যও ধ্বংসাত্মক।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ