হবিগঞ্জ আদালত থেকে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা
Published: 10th, July 2025 GMT
হবিগঞ্জে স্কুলছাত্র জনি দাশ (১৭) হত্যা মামলার আসামিকে আদালত প্রাঙ্গণে মারধর ও পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় এই মামলা করে আদালত পুলিশ। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম শাহাবুদ্দীন। তিনি বলেন, আসামি সাজু মিয়াকে (২২) ছিনিয়ে নিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ঘটনায় এ মামলা হয়। অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
মামলার অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জনি দাস হবিগঞ্জ শহরের ডাকঘর এলাকার নর্ধন দাশের ছেলে ও দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ৩ জুলাই ভোরে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা তাঁকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। হবিগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জনিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত শনিবার অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। ওই মামলায় গত সোমবার সাজু মিয়া নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বাড়ি আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমবাক গ্রামে। পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাজু হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
ওই মামলায় গতকাল বুধবার দুপুরে সাজুর পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে হবিগঞ্জ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় একদল শিক্ষার্থী সাজুর ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে মারধর করে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে হামলাকারীদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। পাশাপাশি একদল আইনজীবী ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রাতেই মামলা করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি সাজু মিয়ার ফাঁসি দাবি করে ৪০-৫০ জনের একটি দল আদালত প্রাঙ্গণ থেকে আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় আদালত পুলিশ উপস্থিত আইনজীবীদের সহায়তায় উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে সরিয়ে দিয়ে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। তাঁদের সৃষ্ট উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আদালতের কার্যক্রম বাধাপ্রাপ্ত হয়। আসামির রিমান্ড শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে সাজুকে আদালতের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় হামলাকারীরা আবার সাজুকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি মারধর করে। এ সময় আসামিকে নিয়ে এজলাস কক্ষে ঢুকলে আদালতের দরজায় ধাক্কা দেয় হামলাকারীরা। এতে বিচারকাজে বিঘ্ন ঘটে। পরে পুলিশ, আইনজীবী ও আদালতের কর্মচারীদের যৌথ প্রচেষ্টায় সাজু মিয়াকে রক্ষা করা হয়।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম শাহাবুদ্দীন শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনার সময় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল
বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।
তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল