পেনসিলভানিয়ায় গত বছর একটি নির্বাচনী জনসভায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে হওয়া হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়িত্বে থাকা ছয়জন সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংস্থা।

সিক্রেট সার্ভিস বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ছয় কর্মকর্তার প্রত্যেককে ১০ থেকে ৪২ দিনের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে তাদের নাম এবং বরখাস্ত করার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানানো হয়নি।

২০২৪ সালের ১৩ জুলাই ট্রাম্প যখন বাটলার শহরে জনসভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখন কাছের একটি ভবনের ছাদ থেকে এক বন্দুকধারী গুলি ছোড়েন। সেদিনের হামলায় ট্রাম্প আহত হলেও তার এক সমর্থক নিহত হন। পাশাপাশি সেই বন্দুকধারীকে ঘটনাস্থলেই গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিক্রেট সার্ভিসের বিরুদ্ধে শুরু হয় একাধিক তদন্ত এবং সংস্থার পরিচালক পদত্যাগ করেন।

এ নিয়ে ফক্স নিউজের ‘মাই ভিউ উইথ লারা ট্রাম্প’ অনুষ্ঠানের এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘ওই ছাদে যদি একজন এজেন্ট থাকত, তাহলে এটা কখনও ঘটত না। স্থানীয় পুলিশকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এটা একটা বড় ভুল।’

ওই সময় ট্রাম্পের নিরাপত্তা প্রধান এবং বর্তমানে সিক্রেট সার্ভিসের পরিচালক শন কারান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা আর কখনও না ঘটে সেটা নিশ্চিত করতেই আমরা অনেক ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

শন কারান জানান, কংগ্রেসের নজরদারি কমিটি থেকে দেওয়া ৪৬টি সুপারিশের মধ্যে ২১টি ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে। ১৬টি এখনও প্রক্রিয়াধীন, ৯টি সিক্রেট সার্ভিসের আওতার বাইরে।

পেনসিলভানিয়ার জনসভায় হামলার দুই মাসের মধ্যেই ফ্লোরিডা রাজ্যের ওয়েস্ট পাম বিচ এলাকার একটি গলফ ক্লাবে ট্রাম্পকে আবার লক্ষ্য করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ওঠে। ট্রাম্পকে মারতে এক বন্দুকধারী ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে ছিলেন। ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারও করে ট্রাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টরা। এরপর থেকেই গলফ ক্লাবগুলোতেও সুরক্ষাব্যবস্থা জোরদারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র বরখ স ত জনসভ য়

এছাড়াও পড়ুন:

আমাদের পরাবাস্তব টাউনের দিনরাত্রির দৃশ্য

আমাদের টাউনকে আমার পরাবাস্তব টাউন মনে হয়। যেন এই টাউন কখনও পাহাড়ে থাকে। কখনও পাহাড়ের উপত্যকায়, জলাভূমির মাঝখানে দ্বীপ হয়ে থাকে। বাসিন্দা কারা টাউনের?– আমার বন্ধুরা। ফরিদ, বাপি, অমিয়, মান্না, শামীম, নাসের, অঞ্জন, তুষার, রোমেন, নুমান, লিখন, সর্বোপরি মুস্তফা। তারা কি পরাবাস্তব?
সবকিছুই পরাবাস্তব। যারা বেঁচে আছে, যারা মরেছে। পরাবাস্তব টাউনে কোনো নোটিশ বোর্ড নাই– ‘মৃতদের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত।’ মৃত আকল পণ্ডিত বরং অধর্ম করেন। ছামুলালের ঘরে বসে মদ্যপান করে জমে যান বব মার্লের সঙ্গে জ্যামিং-এ। কিছু উটপাখি, কিছু ঝাউগাছ রাতে সেই পরাবাস্তব টাউনে ঢুকে যায়।
দেখা এসব দৃশ্য লিখে যাই। মান্নাকে মনা, ফরিদকে ইরাব, তুষারকে কুটু বড়াল বানিয়ে। মুস্তফা শুধু মুস্তফা থেকে যায়। আউট ল সে, ধার ধারে না কোনো গ্রন্থিকের।
‘আমাদের পরাবাস্তব টাউনের দিনরাত্রি’ ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে লেখা। দৈনিক সমকাল-এর ঈদসংখ্যায় ছাপা হয়েছিল। বই হয়েছে বিদ্যাপ্রকাশ থেকে। প্রকাশক: মজিবর রহমান খোকা। প্রচ্ছদ: সব্যসাচী হাজরা। কাহিনি? মনে নাই।
আমার ছাপা বই আমি পড়ি না। অস্বস্তি লাগে, বাজে লাগে। জীষ্ণু, বিন্দুবাসিনী, অংশুদা এসব কিছু কিছু মনে আছে। কোন পৃষ্ঠার একটা বাক্য মনে আছে– সন্ধ্যা রাতের হুডি পরে নিয়েছে। আর সেভাবে কিছু মনে নাই।– আমাদের পরাবাস্তব টাউন বহমান, উড়ুক্কু, জলমগ্ন, সর্পিল। তবে রাসেল ভাইপার সাপ তখনও আমাদের টাউনে দেখা যায় নাই। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ সেটা।
কবিতা ও উপন্যাস বিভাগে ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ পেয়েছে ‘আমাদের পরাবাস্তব টাউনের দিনরাত্রি’। অবশ্যই আনন্দের কথা। নিরানন্দের কথা এই সম্মান গ্রহণের জন্য আমাকে একদিন মাত্র একবার মঞ্চে উঠতে হবে। মাহবুব আজীজ যত সহজ করে বললেন, তত কি সহজ? আমার সোশ্যাল ফোবিয়া প্রচণ্ড। মারাত্মক মঞ্চভীতি যার অংশ। ভূত প্রেত ডরাই না, মঞ্চ ডরাই। বিপদে মধুসূদন আছেন মামুন ভাই।
‘দুর্বলেরে রক্ষা করো, মামুন ভাই!’
মামুন ভাইয়ের প্রেসক্রিপশন কম্পিউটারে আছে।– আমার কয়েকজন মামুন ভাই আছেন। বিপদে মধুসূদন কোন মামুন ভাই, না বলি। অনুষ্ঠান ৪ জুলাই ২০২৫। সন্ধ্যা ছয়টায়। আমার সঙ্গে মঈন ভাই যাবেন। কথাসাহিত্যিক মঈন আহমেদ। দেশে থাকলে খোকা ভাই (প্রকাশক মজিবর রহমান খোকা) যেতেন। আমি মাসুক ভাইকে বলেছি থাকতে। প্রতিকৃতিকর মাসুক হেলাল। দীর্ঘদিনের সখ্য আমাদের। 

মঈন ভাই আছেন, মাসুক ভাই থাকলে বুকে আরেকটু বল পাব।
মাহবুব আজীজ বিকেলে আসাদকে পাঠালেন। মঈন ভাই ও আমাকে নিয়ে গেল আসাদ। সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠান। লাউঞ্জেই প্রিয় দুজন মানুষকে একসঙ্গে পেয়ে গেলাম। মাসুক ভাই ও তারেক– আর্টিস্ট নাজিব তারেক। মাসুক ভাইয়ের হাত ধরলাম তো ধরলাম আর ছাড়াছাড়ি নাই।
‘মাসুক ভাই আপনি কিন্তু মঞ্চ পর্যন্ত যাবেন আমার সঙ্গে।’
‘যাব, ধ্রুব।’
আস্তে ধীরে কিছু অস্বস্তি কাটল। আশপাশে সব আপন মুখ দেখে। অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেল মাহবুব আজীজের সঞ্চালনায়। কিছু মেয়ে চমৎকার নাচল। শামা রহমান গান করলেন। সকাতরে ওই ডাকিছে সকলে– এই সন্ধ্যার জন্য মনে থাকবে, আপা। আপার গানের পর সম্মাননা প্রদান।
মঞ্চের সিঁড়ি পর্যন্ত মাসুক ভাইয়ের হাত ধরে থাকলাম। মঞ্চে উঠলাম, সম্মাননা নিলাম। সকলের যে ভালোবাসা দেখলাম ভুলব না। ২০২৫-এ ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩-এর ‘বাস্তব’ সন্ধ্যা ভুলব না।
সেই সন্ধ্যা রাতের হুডি পরে নিল। আমি আবার আমাদের পরাবাস্তব টাউনে ফিরলাম। রাত বিদিক করে ফিরলাম।
আছি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমাদের পরাবাস্তব টাউনের দিনরাত্রির দৃশ্য
  • ভালো সিনেমার কারণে নাটকে আমাদের দায়িত্ববোধ বেড়েছে: আরশ
  • এগিয়ে চলার প্রত্যয়
  • কাদামাটি: শিকড়ের খোঁজে এক আবেগভরা মঞ্চভ্রমণ
  • ভাঙা দেবী, রহস্যময় হাসি আর বুঁদ হয়ে থাকা এক দুপুর
  • শতাব্দীর বিবর্তনের গল্প বলে লুভর মিউজিয়াম