মুখে লোম হলে কখনও থ্রেডিং করান, আবার কখনও ওয়াক্স করান? কিন্তু এই পদ্ধতিতে লোম দূর করতে হরে মুখে ব্যথা লাগে। কেউ কেউ ব্যথা এড়াতে রেজারের সাহায্য নেন। কিন্তু যা-ই করুন, এতে ত্বকের ক্ষতি হয়। ত্বকে দেখা দেয় র‌্যাশ আর চামড়া সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। মূলত হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে নারীদের দুই গালে লোমের ঘনত্ব বাড়ে। 

নারীদের মুখে অবাঞ্ছিত লোক কেন হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘‘ শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে, পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে দেখা দিলে, থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে মুখে লোমের ঘনত্ব বাড়ে।’’

আরো পড়ুন:

‘ন্যানো বানানা এআই শাড়ি’ ট্রেন্ড, কীভাবে বানাবেন পছন্দের ছবি

পোশাক উৎপাদনের ফলে নেমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর

সমস্যা এড়াতে করণীয়
মুখের লোম দূর করতে প্রতিবার তোলার তোলার দরকার নেই। বরং, ডায়েটে কিছু পরিবর্তন আনুন। এমন কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলো ডায়েটে যোগ করলে মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর হতে পারে। 

পুদিনা পাতার চা
শরীরে টেস্টোস্টেরন ও অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমাতে দিনে দুই বার পুদিনা পাতার চা খান। এই হারবাল টি হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার মাধ্যমে রোমের ঘনত্ব কমাবে। পাশাপাশি পিসিওএস-এ অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা কমাবে।

সাইট্রাস ফল
মুখের লোম দূর করার জন্য কমলালেবু, পাতিলেবু, মুসাম্বি লেবুর মতো সাইট্রাস ফল খেতে পারেন। লেবুজাতীয় ফল দেহে ইনসুলিন হরমোনের মাত্রা বজায় রাখে এবং টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমায়। সাইট্রাস ফল যেমন ত্বকের সমস্যা কমায়, তেমনই ত্বকের জেল্লা বাড়িয়ে তোলে।

দারুচিনি ভেজানো পানি
রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখতে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পারে দারুচিনি ভেজানো পানি। খাবার খাওয়ার পরে এই পানি পান করলে মেটাবলিজমও বাড়ে। এই পানীয়ও নিয়মিত খেলে কমে যাবে অবাঞ্ছিত রোমের সমস্যা।

মেথি ভেজানো পানি
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দূর করতে মেথি ভেজানো পানিও পান করতে পারেন। এই পানীয় ইনসুলিনের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং অবাঞ্ছিত রোমের সমস্যা দূর করে। রোজ সকালে খালি পেটে এই পানীয়তে চুমুক দিতে পারেন।

হলুদ
দুইগালে হলুদ মেখেও রোম তুলতে পারেন। কিন্তু প্রতিদিন মুখে হলুদ মাখলে ত্বকের উপর হলদেটে দাগ দেখা দিতে পারে। এর চেয়ে প্রতিদিনের ডায়েটে হলুদ রাখুন। কাঁচা হলুদ খেলেও উপকার পাবেন। হলুদ খেলে ব্রণ, দাগছোপ, ত্বকের প্রদাহও কমাতে পারবেন।

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হরম ন র ম ত র অব ঞ ছ ত র সমস য ত বক র দ র কর এই প ন

এছাড়াও পড়ুন:

প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত

বাংলাদেশের মেকআপ আর্ট জগতে নীরবে নতুনত্ব যোগ করে যাচ্ছেন সোনালী মিতুয়া। তার শৈল্পিক ইলিউশন এবং বডি পেইন্টিংগুলো আন্তর্জাতিক মানের, যা দেখে চোখ ফেরানো দায়। বর্তমানে ফিনল্যান্ডে মেকআপের ওপর উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন এই শিল্পী, যার ক্যানভাসে শৈশবের প্রথম গন্ধ ছিল তেল রং আর থিনারের তীব্রতা। মেকআপ ব্যবহার করে তিনি যে ক্যানভাস তৈরি করেন-তা এক কথায় অনন্য, অসাধারণ। 

সোনালী মিতুয়া কখনও তার মুখে ফুটে ওঠে ফাটল ধরা পৃথিবী, যেখান থেকে গজিয়ে ওঠে সবুজ লতা। কখনও দেখা যায় তার মুখটাই এক অর্ধেক যন্ত্র, অর্ধেক প্রকৃতি, যেন মানুষ আর মেশিনের মাঝের এক অদ্ভুত, কাব্যময় দ্বন্দ্ব।আর কখনও সেই মুখটাই অন্ধকারে মিলিয়ে যায়, শুধু দেখা যায় এক ভয়ঙ্কর কালো গহ্বর — যেন মানুষের শূন্য আত্মা। এগুলো কোনো সিনেমার দৃশ্য না।এগুলো এক তরুণী মেকআপ আর্টিস্টের সৃষ্ট জীবন্ত শিল্পকর্ম।

আরো পড়ুন:

একা বাস করতে পারে যে পাখি

কেউ কটূক্তি করলে কী করবেন?

সোনালী মিতুয়ার মেকআপে একটা গল্প, একটা দর্শন, একটা গভীর বার্তা লুকিয়ে থাকে। যেখানে অধিকাংশ মানুষ মেকআপকে শুধু প্রসাধনের জগতে দেখে, সে সেখানে মেকআপকে তুলেছে এক উচ্চমাত্রার শিল্প হিসেবে। তার হাতে রঙ মানে—চামড়ার ওপরে নয়, বরং আত্মার ভাষা প্রকাশের এক মাধ্যম।

তার কাজে দেখা যায় প্রস্থেটিক মেকআপের প্রভাব— যেখানে মুখ বদলে যায়, গড়ে ওঠে নতুন রূপ, নতুন চরিত্র। এমন কৌশল একদিন তাকে সিনেমার পর্দায় প্রস্থেটিক আর্টিস্ট হিসেবে বড় জায়গায় নিয়ে যাবে—
এ কথা বলার জন্য বিশেষজ্ঞও হতে হয় না। 

এই মেয়েটির সবচেয়ে বড় শক্তি তার কল্পনাশক্তি। সে মুখের ভেতরেই ফুটিয়ে তোলে গল্প—একদিকে প্রকৃতি, ফুল, প্রজাপতি; অন্যদিকে প্রযুক্তি, ধ্বংস আর শূন্যতা। দেখলে মনে হয়, এই দুইয়ের টানাপোড়েনেই গড়ে উঠেছে তার শিল্পজগৎ।

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এই মেয়েটি এক অনুপ্রেরণা। সে প্রমাণ করছে—শিল্পের ভাষা যদি শক্ত হয়, তাহলে দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্বেও পৌঁছানো যায়। যেখানে মেকআপকে এখনো অনেকেই কেবল সাজের কাজ মনে করেন, এই মেয়েটি সেখানে দেখিয়েছে — মেকআপও হতে পারে দর্শন, প্রতিবাদ আর সৃষ্টির ক্যানভাস। 

তিনি জানেন,  প্রস্থেটিক আর্টে (বিশেষত কৃত্রিম অঙ্গ, ক্ষত বা ফ্যান্টাসি চরিত্র তৈরি) করা যায় দক্ষতার সাথে।  বর্তমানে বাংলাদেশের সিনেমায় যেখানে প্রস্থেটিকের ব্যবহার খুবই সীমিত, সেখানে সোনালী মিতুয়ার মতো একজন আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিল্পী আছেন, তার হাতেই তৈরি হতে পারে বাংলাদেশের ইতিহাসের চরিত্রদের নিখুঁত রূপ, অথবা আমাদের ফ্যান্টাসি সিনেমার ভিনগ্রহের প্রাণী।

সোনালী মিতুয়ার কাজগুলো দেখলেই বোঝা যায়, তিনি মেকআপকে স্রেফ সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যম হিসেবে দেখেন না, বরং এটিকে একটি শক্তিশালী গল্প বলার হাতিয়ার মনে করেন। 

একটা ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন মানুষ প্রকৃতির মাঝে ফাটল ধরা পাথরের মতো এক রূপ ধারণ করেছেন। সবুজ, হলুদ ও লালের মিশ্রণে চোখের অংশটি গভীর এবং রহস্যময়, আর ফাটলের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসা লতা-পাতা জীবনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি তার পরিবেশ-সচেতনতা এবং ফ্যান্টাসি আর্টের দক্ষতা প্রমাণ করে।

সাদাকালো স্কেচের মতো দেখতে এই মেকআপটি অত্যন্ত কঠিন এবং চোখে পড়ার মতো। মুখের প্রতিটি অংশে পেন্সিল বা চারকোল দিয়ে আঁকা হ্যাচিংয়ের মতো স্ট্রোকগুলো ত্রিমাত্রিক চেহারাটিকে দ্বিমাত্রিক কমিক-বুক বা নয়ার চলচ্চিত্রের চরিত্র হিসেবে ফুটিয়ে তুলেছে।

চোখ ও মুখের চারপাশে মাকড়সার জাল এবং ফুলা, রক্তবর্ণ চোখের পাপড়ি ভীতি ও কষ্টের এক শক্তিশালী অনুভূতি জাগায়। এটি বিশেষ করে হ্যালোইন বা হরর থিমের জন্য পারফেক্ট।

গভীর অন্ধকারে তোলা এই ছবিটি ‘অন্ধকার গহ্বর’ বা ‘কৃষ্ঞগহ্বর’ থিমের একটি চমকপ্রদ ইলিউশন মেকআপ। নিখুঁত কনট্যুরিং এবং রঙের ব্যবহারে মুখের এক অংশে যেন সত্যিই একটি ফাঁকা, গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বর্তমান সংকটের জন্য সরকার দায়ী, দলগুলোর চাপে সিদ্ধান্ত বদল
  • প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত