বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক দক্ষিণের পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার সঙ্গে যোগাযোগের সেতুবন্ধ তৈরি করেছিল। সেটিই এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বহুগুণ বেড়েছে; কিন্তু সড়কের অবকাঠামো সেই অনুপাতে উন্নত হয়নি। বিশেষ করে মহাসড়কটিতে বেশ কটি বিপজ্জনক বাঁক এখন পরিবহন চালক ও আরোহীদের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একের পর এক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, মহাসড়কের পটুয়াখালীর শাখারিয়া থেকে বরগুনার আমতলী উপজেলার বান্দ্রা পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটারে ১৭টি ভয়ংকর বাঁকটি রয়েছে। এসব বাঁকের কারণে মহাসড়কটি দিয়ে চলাচল এখন চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। গত ছয় মাসে মহাসড়কের এ অংশেই শতাধিক দুর্ঘটনায় অন্তত ১০টি তাজা প্রাণ ঝরে গেছে, আহত হয়েছেন সাড়ে চার শতাধিক মানুষ, যাঁদের অনেকে আজ পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দুর্ঘটনার এ পরিসংখ্যানই স্পষ্ট করে যে এ মহাসড়ক কতটা বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে।

শাখারিয়া, ব্রিকফিল্ড, কেওয়াবুনিয়া, মহিষকাটা, চুনাখালী, আমড়াগাছিয়া খানকা, ডাক্তারবাড়ি, তুলাতলী, ছুরিকাটা, খুড়িয়ার খেয়াঘাট—এসব জায়গায় বিপজ্জনক বাঁকগুলোর অবস্থান। সরেজমিনে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাঁকেই কোনো কার্যকর সংকেতচিহ্ন নেই। যেটুকু আছে, তা–ও অস্পষ্ট এবং দূর থেকে দেখা যায় না, এমনকি এক পাশ থেকে অন্য পাশও দেখা যায় না। বিশেষ করে রাতে চালকদের জন্য আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে এসব বাঁক। চালকদের বক্তব্য অনুযায়ী, ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার গতিতে চলা একটি গাড়ি হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ করা এই ভয়ংকর বাঁকগুলোতে অসম্ভব।

২০২৪ সালে পায়রা ফিলিং স্টেশন ও ছুরিকাটা বাঁকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সংকেতবাতি স্থাপন করলেও তা কয়েক দিনের মধ্যে অকেজো হয়ে পড়ে এবং এরপর আর সংস্কার করা হয়নি। চালকেরা এ ধরনের বাঁকে কনভেক্স মিরর (উত্তল দর্পণ) স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন, যাতে দূর থেকে বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহন দেখা যায় এবং দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়।

এই ভয়ংকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আর কালক্ষেপণ করা উচিত নয়। ১৭টি বাঁকে সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। প্রতিটি বাঁকে স্পষ্ট, বড় সংকেতচিহ্ন ও নির্দেশক স্থাপন করতে হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী গতিরোধক স্থাপন এবং চালকদের জন্য সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। সংকেতবাতি ও নির্দেশকগুলোর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। মহাসড়কে ট্রাফিক আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো এ ব্যাপারে আন্তরিকভাবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা এ সড়কে আর কোনো মৃত্যু দেখতে চাই না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে চলাচল উপযোগী হলো সখিপুর-ভালুকা সড়ক

টাঙ্গাইলে খানাখন্দেভরা সখিপুর-ভালুকা সড়কটি জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে যান চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে।

সম্প্রতি ভারী ও অতি বৃষ্টিপাতের কারণে এই সড়কের মিলপাড়া মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। পানি জমে ছোট-বড় মালবাহী ও যাত্রীবাহী যানবাহন, পথচারী এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ব্যাহত হয়ে পড়ে।  

বিষয়টি টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হকের দৃষ্টিগোচর হলে, তিনি তাৎক্ষণিকভাবে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরকে অবহিত করেন এবং জরুরি ভিত্তিতে বিভাগীয় মেরামতের মাধ্যমে সড়কটি যানবাহন চলাচলের উপযোগী করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।

আরো পড়ুন:

সড়কে গর্ত, চলাচলে দুর্ভোগ

কুষ্টিয়ায় ৪ জনের পাশাপাশি দাফন

সড়ক ও জনপথ টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী সিনথিয়া আজমিরী খান জানান, সম্প্রতি ভারী ও অতি বৃষ্টিপাতের কারণে ভালুকা-সখিপুর সড়কের মিলপাড়া নামক স্থানে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়। জরুরি ভিত্তিতে বিভাগীয় মেরামতের মাধ্যমে শনিবার (২৬ জুলাই) সড়কটি যানবাহন চলাচল উপযোগী করা হয়। 

সড়কটির স্থায়ী সংস্কার কাজ সম্পাদনের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চলতি অর্থবছরে পিরিয়ডিক মেনটেনেন্স প্রোগ্রাম সড়ক মেজর এর আওতায় আড়াইপাড়া হতে সখিপুর পর্যন্ত প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, প্রস্তাব অনুমোদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে দরপত্র প্রক্রিয়া শেষে আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে সড়কটির স্থায়ী সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক বলেন, “দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সড়কটিকে যান চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। অতি দ্রুতই স্থায়ী সংস্কার করা হবে।”

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেঘনার জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়কে ধস, দুই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
  • লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি-জোয়ারে সড়ক বিচ্ছিন্ন, মানুষের দুর্ভোগ
  • আশকোনার অলিগলিও বেহাল 
  • জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে চলাচল উপযোগী হলো সখিপুর-ভালুকা সড়ক