যশোর সদর উপজেলার সুজলপুর গ্রামে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শারমিন আক্তার (২৯) নামের এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। পরিবারের অভিযোগ, বড় ভাইয়ের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হয়েছেন তিনি। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার সুজলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

শারমিন আক্তার যশোর সদর উপজেলার সুজলপুর গ্রামের শিমুল হোসেনের স্ত্রী। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম খোকন। তিনি শারমিনের ভাই ও একই এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার পর থেকে খোকন পলাতক।

পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, সুজলপুর গ্রামে শিমুল ও শারমিন দম্পতি একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। পাশেই পরিবার নিয়ে বসবাস করেন শারমিনের বড় ভাই খোকন মোল্লা। সম্প্রতি খোকনের কাছ থেকে শিমুল দুই হাজার টাকা ধার নেন। আজ সকালে সেই টাকা নিয়ে খোকনের স্ত্রী সালেহা বেগমের সঙ্গে শারমিনের কথা–কাটাকাটি হয়। পরে শিমুল ও খোকনও এই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘরে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিমুলকে আঘাত করতে যান খোকন। এ সময় অস্ত্রের সামনে গিয়ে দাঁড়ান শারমিন। তাৎক্ষণিকভাবে অস্ত্রের আঘাতটি শারমিনের গলায় লাগে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে শারমিনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিচিত্র মল্লিক জানান, শারমিনের গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতটি গুরুতর ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

শারমিনের স্বামী শিমুল হোসেন বলেন, ধারের টাকা পরিশোধ করা নিয়েই ঝগড়ার সূত্রপাত। একপর্যায়ে খোকন তাঁর স্ত্রীর পক্ষ নিয়ে শারমিনের গলায় আঘাত করেন। এতে শারমিন নিহত হন।

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত খান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবেই আমরা জানতে পেরেছি, দুই হাজার টাকা দেনা-পাওনা নিয়ে দুই ভাই–বোনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। একপর্যায়ে ভগ্নিপতিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে গেলে বোনের গলায় লেগে যায়। এতে তাঁর বোন শারমিন নিহত হন। লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স জলপ র গ র ম ন র গল য়

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।

ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র‍্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র‍্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।

যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।

আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র‍্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই শিশুর ঝগড়ায় জড়ালেন বড়রা, বড় ভাইয়ের হাতে খুন ছোট ভাই
  • রাজশাহীতে ‘প্রেমিকার’ সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার