বন্দরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
Published: 23rd, July 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে গৃহবধূ হত্যার দায়ে স্বামী আমিরুল ইসলামকে ওরফে বাবুকে (৩৫) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মো. আবু শামীম আজাদ এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আমিরুল ইসলাম ওরফে বাবু নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ বারুদী এলাকার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি বন্দর গার্লস স্কুলের শিক্ষক ছিলেন।
নিহত গৃহবধূ সুলতানা আক্তার শান্তা হলেন- সোনারগাঁ উপজেলার বারদি এলাকার মো.
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান বলেন, ২০২০ সালে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আজ আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে রাষ্ট্র পক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকির বলেন, পারিবারিক অশান্তির কারণে স্ত্রী শান্তাকে তিনি হত্যা করেছেন। আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, স্ত্রী শান্তাকে শিলপাটা দিয়ে আঘাত করে মাথা থেঁতলে প্রথমে হত্যা করেছেন। এরপর মাছ কাটার বঁটি দিয়ে শরীরের কয়েক জায়গায় চামড়া ছিলে তাতে লবণ লাগিয়ে দেন। এ ঘটনায় নিহত শান্তার বাবা মো. করিম মোল্লা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। সেই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে বন্দর গার্লস স্কুলের শিক্ষক আমিনুল ইসলামের সঙ্গে সোনারগাঁ উপজেলার বারদি এলাকার মো. করিম মোল্লার মেয়ে সুলতানা আক্তার শান্তার বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের কারণে বিয়ের দুই বছর পর ২০১৯ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। এরপর শান্তার অন্যত্র বিয়ে হয়। সাত মাস দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে সংসার করার পর আমিরুল ইসলাম ওরফে বাবু ফুসলিয়ে পুনরায় শান্তাকে বিয়ে করেন। এরপর বন্দরের রাজবাড়ি এলাকার সুলতান মিয়ার বাড়িতে ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন তারা। বিয়ের দুই মাস ৬ দিনের মাথায় স্ত্রী শান্তাকে হত্যা করেন আমিনুল ইসলাম।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আম র ল ইসল ম এল ক র
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।