সীতাকুণ্ডে মহাসড়ক অবরোধ, মুমূর্ষু রোগী নিয়ে আটকে পড়া অ্যাম্বুলেন্স চালককে মারধরের অভিযোগ
Published: 23rd, July 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মহাসড়কে গাড়ি পার্কিংকে কেন্দ্র করে চালকদের সঙ্গে কারখানার নিরাপত্তাকর্মীদের বিরোধের জেরে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক দেড় ঘণ্টা অবরোধ করেছেন চালকেরা। এতে অন্তত ১০ কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
আজ বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাদামতলা এলাকায় ইস্পাহানি সামিট অ্যালায়েন্স টার্মিনালের সামনে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড থানা ও বারআউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। এ সময় মুমূর্ষু রোগী নিয়ে আটকে পড়া একটি অ্যাম্বুলেন্স চালককে মারধরের অভিযযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বেলা তিনটার দিকে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চম্পা রোলিং মিলের প্রবেশপথে একটি কাভার্ড ভ্যান পার্কিং নিয়ে চালক ও কারখানার নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চালককে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর ওই চালক অন্য চালকদের একত্র করে সন্ধ্যা সাতটায় মহাসড়কে কাভার্ড ভ্যান আড়াআড়ি করে রেখে অবরোধ করেন। সাড়ে আটটার দিকে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
রাত পৌনে ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, থানা ও হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা যানজট নিরসনে কাজ করছেন। আন্দোলনকারী চালকেরা টার্মিনালের কনটেইনার ডিপোর ভেতরে অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা তখনো ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। মহাসড়কে যানবাহনগুলো স্থবির হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবরোধ চলাকালে এক অ্যাম্বুলেন্স চালক মুমূর্ষু রোগী নিয়ে আটকে পড়েন। চালকদের কাছে সড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে চালকদের ধাওয়া দেন। পরে চালকেরা কনটেইনার ডিপোর ভেতরে আশ্রয় নেন এবং তাঁদের মধ্যে একজনকে ধরে আনা হলে তিনি মহাসড়কে দাঁড় করানো কাভার্ড ভ্যানগুলো সরিয়ে দেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মহাসড়কে ডাবল লাইনে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে চলাচলে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি হচ্ছিল। আজকের ঘটনা শুরু হয় বিকেলে রোলিং মিলের সামনে পার্কিং নিয়ে বিরোধের জেরে। পরে তা বড় আকার নেয়।’
ঘটনাস্থলে থাকা সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লাবিব আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘চালকদের অভিযোগ শুনে আমরা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা তাৎক্ষণিক সমাধান না পেয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এর মধ্যে এক অ্যাম্বুলেন্স চালককে মারধরের অভিযোগ আসে। পরে স্থানীয় লোকজন চালকদের ধাওয়া দিলে তাঁরা সরে যান। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অ য ম ব ল ন স চ লক চ লকদ র চ লকক ম রধর অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে
৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।
প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।
আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।
প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।
পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।
আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’
আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫