নড়াইল সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামে মাধবী বিশ্বাস (৩৫) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর পর থেকে স্বামী হীরামণ বিশ্বাস ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী সুদেবী বিশ্বাস পলাতক আছেন। 

বুধবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মাধবী বিশ্বাসের মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ। তিনি হীরামণ বিশ্বাসের প্রথম স্ত্রী ও কালিয়া উপজেলার শুক্ত গ্রামের অরবিন্দু বিশ্বাসের মেয়ে। 

এলাকাবাসী ও স্বজনরা জানিয়েছেন, ১৮ বছর আগে কালিয়া উপজেলার শুক্ত গ্রামের মাধবী বিশ্বাসের সঙ্গে বিয়ে হয় সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের হীরামণ বিশ্বাসের। সেই সংসারে দুটি সন্তান আছে। সাত-আট মাস আগে সুদেবী বিশ্বাস নামের এক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে তাকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন হীরামণ বিশ্বাস। এ নিয়ে সংসারে ঝামেলা চলছিল। বুধবার দুপুরে তাদের বাড়িতে আবার ঝামেলা হয়।

হীরামণ বিশ্বাস তার চাচাত ভাই মিঠুন বিশ্বাসকে ফোন করে জানান, তিনি ছোট বউকে তার বাবার বাড়িতে দিতে এসেছেন। আসার আগে বড় বউকে মারপিট করেছেন। মিঠুন যেন বাড়িতে গিয়ে দেখেন প্রথম স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়েছেন কি না? সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মাধবী বিশ্বাসের মরদেহ দেখতে পেয়ে স্বজনরা পুলিশে খবর দেন। 

মাধবী বিশ্বাসের ফুফাত ভাই শ্মশান বিশ্বাস বলেছেন, ‘আমার বোনকে নিয়মিত মারধর করত হীরামণ। সে দ্বিতীয় বিয়ে করে আনার পর থেকে আমার বোনের ওপর অত্যাচার বাড়িয়ে দেয়। আমার বোনকে মেরে সে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়েছে।” 

নড়াইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (২৪জুলাই) সকালে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বুধবার রাতেই মাধবী বিশ্বাসের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

ঢাকা/শরিফুল/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ র মণ ব শ ব স উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। 

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার

নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল। 

আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’ 

নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।

অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’ 

আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’ 

নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে। 

বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঢাকা/মাসুম/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা