জুলাই বিপ্লব কোনো নির্দিষ্ট দলের আন্দোলন নয়, বরং সর্বজনীন গণঅভ্যুত্থান ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লব ২০২৪’ ও ‘বৈষম্যহীন বাংলাদেশ (সুযোগ–সমস্যা–উত্তরণ)’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক রইছ উদ্দিন বলেন, “বৈষম্য থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। কিন্তু স্বাধীনতার পরও একটি ব্যক্তি ও একটি রাজনৈতিক দল পুরো কৃতিত্ব নিজেদের নামে নিয়ে নিয়েছিল, যা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সেই দল ও নেতৃত্বের বৈষম্যমূলক নীতির কারণে জুলাই বিপ্লব ২০২৪ সংঘটিত হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

আলজাজিরার অনুসন্ধান: ‘হাসিনা– জুলাইয়ের ৩৬ দিন’ সম্প্রচার আজ

চবির শাটল থেকে পাথরসহ ১৯ শিশু-কিশোর আটক

তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লব শুধু একটি কোটা ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ছিল না, বরং এটি ছিল সর্বজনীন গণঅভ্যুত্থান। দল, মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণে এই বিপ্লব সফল হয়েছে। জুলাইয়ে শহীদদের স্মরণে আমাদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে হবে এবং ‘জুলাই চেতনা’ ধারণ করে বৈষম্যহীন বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।”

সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড.

মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসের মূল ভিত্তি ভাষা ও স্বাধীনতা। ২০২৪ সালের বিপ্লব ছিল আদর্শ ও চিন্তার পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই পরিবর্তনের প্রতিফলন আমাদের সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনে ঘটাতে হবে।”

আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শারমীন আখতারের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, আইন অনুষদের ডিন খ্রীষ্টিন রিচার্ডসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক।

আলোচনায় অংশ নেন নির্বাচন তদন্ত কমিশন ও জুডিশিয়াল রিফর্ম কমিশনের সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅভ য ত থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

শাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর সেমিনার

জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের করা তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশের ওপর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

আরো পড়ুন:

শাকসুর নির্বাচন কমিশন ঘোষণা

শাকসুর রোডম্যাপের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) এবং সহযোগিতায় ছিলেন ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটরস অফিস (ইউএনআরসিও)।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএম সরওয়ার উদ্দিন চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইসমাইল হোসেন, রাজনৈতিক অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাবুল হক ও অধ্যাপক ড. দিলারা রহমান।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস অফিসার জাহিদুল হোসেন।

তিনি বলেন, “ইউএন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে মোট ৪৩টি সুপারিশ করেছি। এ সুপারিশগুলো সবার পড়া উচিত। পহেলা জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যা ঘটেছে, জাতিসংঘ সেটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা এই আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ে করছি, কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই রাষ্ট্রের মস্তিষ্ক। রাষ্ট্র হলো শরীর, আর ছাত্ররা দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশের দুই ধরনের অপরাধ আছে— দেওয়ানী ও ফৌজদারি। ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির সংঘাত মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, কিন্তু রাষ্ট্র যখন জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালায়, তখনই মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটে। রাষ্ট্র যদি কোনো সিস্টেমকে দমন বা হরণ করে, তখন তা মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হয়।”

জাহিদুল হোসেন আরও বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হেলমেট বাহিনী যে সহিংসতা ঘটিয়েছে, তা ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়, কারণ রাষ্ট্র তাদেরকে সহযোগিতা দিয়েছে। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট আকাশ থেকে পড়েনি—বাংলাদেশে যা ঘটেছে, সেটিই এখানে প্রতিফলিত হয়েছে। তাই এই রিপোর্ট সবাইকে পড়া উচিত।”

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এম. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশে এক অদ্ভুত ধরনের সরকারের বিরুদ্ধে এই বিপ্লব হয়েছিল— আয়নাঘর সরকার, রাতের ভোটের সরকার। যারা এ সরকারের পতনে ভূমিকা রেখেছেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। জুলাই চেতনা ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। শেখ হাসিনার ভুয়া ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে এসে সত্যিকার জনগণের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”

এছাড়া অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবে শহীদ নয়া দিগন্তের সিলেট ব্যুরো প্রধান তুরাবের বড় ভাই আবদুল জাবের উপস্থিত থেকে স্মৃতিচারণ ও বক্তব্য রাখেন।

সেমিনার শেষে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টভিত্তিক প্রকাশনা, মানবাধিকার সংক্রান্ত বই, নীতিমালা ও স্মারক টি-শার্ট বিতরণ করা হয়।

ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রূপগঞ্জে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে লিফলেট বিতরণ 
  • ১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
  • শাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর সেমিনার