ভারতীয় বাংলা সিনেমার গুণী নির্মাতা সৃজিত মুখার্জি। নায়িকা সুস্মিতা চ্যাটার্জির সঙ্গে তোলা তার একটি সেলফি নিয়ে তোলপাড় চলছে অন্তর্জালে। দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে নেটিজেনদের দাবি—“পরকীয়া প্রেমে জড়িয়েছেন সৃজিত।” 

এ গুঞ্জন নিয়ে তোলপাড় হওয়ার মাঝে নীরবতা ভাঙেন সৃজিত মুখার্জি। কেবল সৃজিত নন, একরাশ বিরক্তি নিয়ে নায়িকা সুস্মিতাও মুখ খুলেন। তবে এই গুঞ্জন, সত্য নয় বলেই তাদের মত। 

 

আরো পড়ুন:

প্রাক্তন প্রেমিকার প্রশংসায় দেব, জবাবে যা বললেন শুভশ্রী

আমাকে হাতি, জলহস্তি বলতেন: অরিজিতা

১৯৯৭ সালের ৮ জুলাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে জন্মগ্রহণ করেন সুস্মিতা চ্যাটার্জি। সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে কলকাতায় পাড়ি জমান তিনি। কলকাতার একটি কলেজ থেকে ইলেকট্রনিক্স বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ইঞ্জিনিয়ার হলেও বিনোদন দুনিয়ার প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন সুস্মিতা। সেখান থেকেই মডেলিং শুরু করেন। মডেলিংয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন এই অভিনেত্রী।

 


  
২০১৯ সালে সুস্মিতা চ্যাটার্জি মডেল হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। অল্প সময়ের মধ্যে ফ্যাশন দুনিয়ায় নিজের পরিচিতি তৈরি করেন। নিজেকে একজন চাহিদাসম্পন্ন মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

 

২০২১ সালে চলচ্চিত্রে পা রাখেন সুস্মিতা চ্যাটার্জি। রোমান্টিক-ড্রামা ঘরানার ‘প্রেম টেম’ তার অভিষেক চলচ্চিত্র। এতে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন। এটি পরিচালনা করেন অনিন্দ্য চ্যাটার্জি। সিনেমাটি মুক্তির পর দর্শক-সমালোচকদের প্রশংসা কুড়ান এই অভিনেত্রী। 

 

বড় পর্দায় অভিষেকের বছরই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে পা রাখেন সুস্মিতা চ্যাটার্জি। ‘ম্যারাডোনার জুতো’ সুস্মিতার প্রথম ওয়েব সিরিজ। এটি মুক্তি পায় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইয়ে। পরের বছরই পরপর তিনটি সিনেমায় অভিনয় করেন এই অভিনেত্রী। 

 

২০২২ সালে সুস্মিতা অভিনীত তিনটি সিনেমা মুক্তি পায়। এগুলো হলো—‘পাকা দেখা’, ‘কাছের মানুষ’, ‘খেলা যখন’। পরের বছর চারটি সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। এগুলো হলো, ‘জয় কালী কলকাত্তাওয়ালি’, ‘চেঙ্গিজ’, ‘শিবপুর’, ‘মানুষ’। এসব সিনেমায় সহশিল্পী হিসেবে পান জিৎ, পরমব্রত, স্বস্তিকা চ্যাটার্জির মতো তারকাদের। ‘চেঙ্গিজ’ সিনেমা সুস্মিতাকে ব্যাপক জনপ্রিয়তার দিকে নিয়ে যায়।  

 

চলতি বছরে মুক্তি পায় ‘মৃগয়া’ সিনেমা। অভিরূপ ঘোষ নির্মিত এ সিনেমার আইটেম গানে পারফর্ম করেন সুস্মিতা। ‘শোর মচা’ শিরোনামের গানে পান্না সবুজ রঙের সিক্যুইন ব্রালেট আর লম্বা ঝুলের স্কার্টে মাত করেন দর্শকদের।

 

সৃজিত মুখার্জি নির্মাণ করছেন ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ সিনেমা। এতে শুভশ্রী গাঙ্গুলি অভিনয় করছেন। সিনেমাটিতে দেখা যাবে সুস্মিতা চ্যাটার্জিকেও। এ সিনেমার শুটিংয়ের ফাঁকে এক ফ্রেমে ধরা দেন সুস্মিতা-সৃজিত। সেই ছবিকে কেন্দ্র করে তাদের প্রেমের গুঞ্জন চাউর হয়।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অ্যাপে পরিচয়-প্রেম, বিয়ে করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলেন চীনের যুবক

ভাষা, সংস্কৃতি ও হাজার মাইলের দূরত্বকে হার মানিয়েছে ভালোবাসা। ভালোবাসার টানে এক তরুণীকে বিয়ে করতে বাংলাদেশে এসেছেন চীনের এক যুবক। গত শুক্রবার রাতে চীন থেকে ঢাকায় পৌঁছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক তরুণীর বাসায় আসেন তিনি। আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে তাঁরা বিয়ে সম্পন্ন করবেন।

চীনের যুবকের নাম ওয়াং তাও (৩৬)। চীনের হোয়ানান প্রদেশের ওয়াং ইচাং চাওয়ের ছেলে তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের তাহের মিয়ার মেয়ে সুরমা আক্তারের (২২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে তাঁর। সুরমা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং ঢাকার লালবাগে থাকেন। আজ রোববার তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলে তরুণীর পরিবার জানিয়েছে।

জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছান চীনের যুবক ওয়াং তাও। বিমানবন্দর থেকে চীনের যুবককে আতিথেয়তা দিয়ে নিজ বাড়ি নাসিরনগরের কুন্ডার কোনাপাড়ায় নিয়ে আসেন তরুণী সুরমাসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।

স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও তরুণীর পরিবারের দাবি, দেড় থেকে দুই মাস আগে ডেটিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে সুরমার পরিচয় হয়। তাঁরা নিয়মিত চ্যাটে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। বিষয়টি চীনের যুবক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণী নিজ নিজ পরিবারকে জানান। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা একে অপরকে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। পরে চীনের যুবক বাংলাদেশ ও চীনের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে দুপুরের পর থেকে চীনের যুবককে দেখার জন্য সুরমার বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন।

সুরমা স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘ওয়ার্ল্ড টক’ অ্যাপের মাধ্যমে চীনের যুবক ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে চ্যাট করতেন। একপর্যায়ে তাঁরা পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্তে পৌঁছান।

সুরমার মা নুরেনা বলেন, ‘আমার মেয়ের ভালোবাসা পেতে চীন থেকে যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে চলে এসেছে। ওই যুবক কোনো ধর্মই বিশ্বাস করে না। মেয়েকে বিয়ে করতে প্রয়োজনে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। আগামীকাল (আজ) রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মুসলিম রীতি মেনে সুরমাকে বিয়ে করবে চীনের যুবক। এতে দুই পরিবারের সম্মতি আছে। আমরা এই বিয়েতে আনন্দিত। মেয়ের খুশিই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

নাসিরনগর থানার কুন্ডা বিট উপপরিদর্শক (এসআই) জাহান-ই-আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে কুন্ডা গ্রামে যাই। পাসপোর্ট দেখে নিশ্চিত হলাম যে যুবক চীনের নাগরিক। ওই তরুণী ঢাকার লালবাগে থাকেন। ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপসের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয়। একপর্যায়ে তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। চীনের যুবক ইংরেজি বোঝেন না। তাই কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে কথা বলতেন। তরুণী ও তাঁর পরিবার জানিয়েছে, রোববার হলফনামার মাধ্যমে চীনের যুবক মুসলিম হবেন। তারপর তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।’ তরুণীর বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, চীনের যুবক এক থেকে দেড় মাস থাকবেন। যাওয়ার সময় হয় ওই তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন বা পরে নিয়ে যাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ