ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেহাল মহাসড়কের গর্তে বৃষ্টির পানি জমে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এ জেলায় ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের ৩৪ কিলোমিটারে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে এই অবস্থা চলছে। আজ শুক্রবারও যানজটে ভোগান্তি অব্যাহত আছে।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ২১০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩৪ কিলোমিটার অংশ পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে খড়িয়ালা সরাইল উপজেলার বেড়তলা, সরাইল বিশ্বরোড মোড় ও কুট্টাপাড়া মোড়, শাহবাজপুর হয়ে ৩৪ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটারে যানজট ছিল। গতকাল রাত আটটার পর বৃষ্টি হয়। এর পর যানজট বাড়তে বাড়তে। আজ সকাল সাড়ে আটটা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ওই ৩৪ কিলোমিটার এলাকায় যানজট ছিল।

সড়ক ও জনপথ, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ ধীরগতিতে চলছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভারতীয় ঋণে চলমান প্রকল্পের কাজের গতি আরও কমে যায়। একাধিকবার কাজ বন্ধও হয়ে যায়। কাজটি করছে ভারতীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।

আজ সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বর এলাকায় ছোটবড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গত তিন-চার মাসে ইটবালু দিয়ে এসব গর্ত একাধিকবার ভরাট করা হলেও টেকেনি। বৃষ্টি হলেই এ গর্ত বড় আকার ধারণ করে। আর রোদে ধুলাবালুতে একাকার হয়ে পড়ে। এ ছাড়া সরাইল উপজেলা শান্তিনগর ও আশুগঞ্জ উপজেলার খড়িয়ালা এলাকায় নতুন করে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ ধীরগতিতে চলছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভারতীয় ঋণে চলমান প্রকল্পের কাজের গতি আরও কমে যায়।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দীর্ঘ যানজটের কারণে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার যানবাহনের হাজারো মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী পণ্যবাহী ট্রাকচালক এমরান হোসেন আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন ঘণ্টায় মাধবপুর থেকে এই এলাকায় (সরাইল উপজেলা ইসলামাবাদ) আইছি। আর কত সময় যানজটে থাকুম জানি না।’

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী যাত্রীবাহী বিলাসবহুল বাসের চালক বেলাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভৈরব থেকে এইখানে (সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া) আসতে ৪ ঘণ্টা সময় লাগছে। এই এলাকায় আসলে আমাদের তেল ফুরাইয়া যায় রাস্তা ফুরায় না। সামান্য অংশের গর্তের জন্য আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভোগান্তি পোহাতে হয়।’

মহাসড়কে আজ যাত্রীবাহী বাস ও প্রাইভেট কার কম আছে। মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মাঠে রয়েছেন।

সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সজীব মিয়া বলেন, ‘রাতের বৃষ্টিতে সরাইল বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বর এবং আশুগঞ্জ গোলচত্বর এলাকা যানচলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে সড়কে সবাই যার যার মতো করে চলতে চান। আজ সকালেও নতুন নতুন গর্তে ইটবালু ফেলা হয়েছে। আমাদের জনবল ও যানবাহনের সংকট রয়েছে। দিনরাত কাজ করেও কোনো  সমাধান পাচ্ছি না। মহাসড়কের কাজ দ্রুত শেষ না করা পর্যন্ত এ যানজট দূর করা কঠিন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ৩৪ ক ল ম ট র এল ক য় র এল ক য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।

আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগে

এ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।

সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ