রূপগঞ্জের ঐতিহাসিক মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির পুকুর যেন এক মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। শুক্রবার সকালে আবারও ঘটলো এক লোমহর্ষক দুর্ঘটনা যা গত বছরের অনুরূপ, বরং আরও বিভীষিকাময়।

শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটায় রাজধানী ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা চার বন্ধু ঐ জমিদার বাড়ির পুকুরে গোসল করতে নামে। কিছুক্ষণ পরেই এক বন্ধু শাহিন (২২) নিখোঁজ হয়ে যায়। বন্ধুরা প্রথমে ভেবেছিল সে মজা করছে। কিন্তু কয়েক মিনিট পর যখন কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি, তখন শুরু হয় দিশেহারা খোঁজাখুঁজি।

স্থানীয়দের সহায়তায় খবর দেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিসকে। ঘণ্টাখানেক পর ডুবুরি দল এসে পুকুরে অভিযান চালায় এবং প্রায় দুই ঘণ্টা পরে শাহিনের নিথর দেহ উদ্ধার করে পুকুরের গভীর তলদেশ থেকে।

নিহত শাহীন গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার চোয়ারীখোলা এলাকার ইদ্রিছ আলীর ছেলে। তিনি ঢাকার মুগদা এলাকায় কেবল অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন।

ঠিক এক বছর আগেও একই পুকুরে গোসল করতে নেমে ঢাকার নয় বন্ধুর একজন নিখোঁজ হয়েছিলেন। সেবারও পুকুরের তলদেশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এমন টানা দুই বছর একই ধাঁচের দুর্ঘটনা জনমনে সৃষ্টি করেছে নানা প্রশ্ন ও ভীতি।

স্থানীয় প্রবীণরা মনে করেন, পুকুরটিতে অলৌকিক কিছু রয়েছে। তাদের ভাষায়, “এই পুকুর কেউ অবমাননা করলে বা নিয়ম না মেনে নামে, তাকে পুকুর ‘ফিরিয়ে’ দেয় না।

রূপগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, পুকুরটি অস্বাভাবিক রকম গভীর এবং কিছু জায়গায় তলদেশে কাদা ও শ্যাওলার স্তর রয়েছে। ফলে কেউ নিচে গেলে উপরে ভেসে আসতে দেরি হয়।

তবে এত মৃত্যু কি কেবল দুর্ঘটনা? এমন প্রশ্ন এখন স্থানীয়দের কৌতূহল ও ভয়ের কারণ। বিশেষ করে যখন একই ধরনের ঘটনা প্রতি বছর ঘটে চলছে, তখন সাধারণ মানুষ এটিকে রহস্যজনক বা অতিপ্রাকৃত বলে ভাবতেই বাধ্য।

শাহিনের মৃত্যুর পর আবারও আলোচনায় মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির সেই পুকুর। ইতিহাস, জনশ্রুতি ও বাস্তব ঘটনা মিলিয়ে যেন এক অমীমাংসিত রহস্য হয়ে উঠেছে এই পুকুর—যা ভবিষ্যতে গবেষকদের গবেষণার বিষয় হতেই পারে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।

আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগে

এ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।

সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ