টাঙ্গাইলে ট্রেনের যাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩
Published: 26th, July 2025 GMT
টাঙ্গাইলে রেলস্টেশনে এক নারী যাত্রীকে ট্রেন থেকে নামিয়ে বাগানে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) দিনগত রাতে রেলস্টেশনের ঘারিন্দা এলাকায় তাকে ধর্ষণ করা হয়। শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। পরে সদর থানায় তাদের হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, রেলস্টেশনের ঘারিন্দা এলাকার সজিব, দুলাল ও নুপুর। নুপুর সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক। ওই নারী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার বাসিন্দা। তিনি বিভিন্ন বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে ওই নারী যাত্রী ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াগামী ট্রেনে না উঠে ভুলক্রমে উত্তরবঙ্গগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন। টাঙ্গাইল রেলস্টেশনে আসার পর ট্রেনের যাত্রীদের কাছে জানতে পারেন, তিনি ভুল ট্রেনে উঠেছেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি এই স্টেশনে নেমে পড়েন। এ সময় স্টেশনে থাকা পুলিশের কাছে ঢাকা যাওয়ার বিষয়ে জানার পর পুলিশ তাকে জানায় যমুনা সেতু পূর্ব ইব্রাহিমবাদ রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে ঢাকায় যাওয়া যাবে। পরে পুলিশ ওই নারীকে ট্রেনে উঠিয়ে দেয়। এ সময় কৌশলে তিন যুবক ওই নারী যাত্রীকে ট্রেন থেকে নামিয়ে রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় কাঠ বাগানে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। এরপর নুপুরের বাড়িতে নিয়ে দ্বিতীয়বার ধর্ষণ করা হয়। শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে ওই নারী টাঙ্গাইল রেলস্টেশনে গিয়ে পুলিশকে ঘটনার বিস্তারিত জানান। পরে রেলওয়ে পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী টাঙ্গাইল সদর থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
আরো পড়ুন:
স্কুলছাত্রী ধর্ষণে জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবিতে সাজেকে মিছিল
কলেজছাত্রীকে অপহরণ, মুক্তিপণ না পেয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
টাঙ্গাইল রেলস্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘‘ওই নারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করা হয়। পরে সদর থানা পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়েছে। আটকের পর তারা ধর্ষণের ঘটনা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন।’’
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানবীর আহাম্মেদ বলেন, ‘‘অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।’’
ঢাকা/কাওছার/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সদর থ ন ত নজনক ওই ন র ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী
রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।
৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগেতবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।