বার্সেলোনায় আরেক ১৭ বছর বয়সী বিস্ময়বালক মনে করাচ্ছেন ইনিয়েস্তাকে
Published: 28th, July 2025 GMT
বয়স মাত্র ১৭, কিন্তু দেখতে মনে হচ্ছিল আরও কম। বার্সেলোনা ও ভিসেল কোবের অন্য ফুটবলারদের ভিড়ে তাঁকে নিতান্ত শিশুর মতো দেখাচ্ছিল। ওয়ান অন ওয়ান পরিস্থিতিতে শরীরে আঘাত পেতে পারেন, সেই দুশ্চিন্তাও হতে পারে। কিন্তু কিছু সময় খেলা দেখার পর নিজের ভুলটা ভাঙে। বয়স যত কমই হোক কিংবা দেখতে যত ছোটই লাগুক, পেদ্রো ফার্নান্দেজ সারমিনেতোর পায়ে বল গেলেই যেন অন্য রকম এক মানুষ। মানসিক পরিপক্বতায় অন্য অনেকের চেয়ে এগিয়ে থাকা কেউ!
বার্সেলোনার খেলোয়াড় তৈরি আঁতুড়ঘর লা মাসিয়া নিয়মিতই ফুটবল বিশ্বকে নতুন নতুন খেলোয়াড় উপহার দিয়ে চলেছে। যেখান থেকে বেরিয়ে আসা সর্বশেষ বড় তারকা লামিনে ইয়ামাল। বয়স ১৭ পেরোনোর আগেই যাঁর নামের পাশে যুক্ত হয়েছে অসামান্য সব সাফল্য।
এবার সেই ইয়ামালের পথ ধরেই এবার আবির্ভূত হতে চলেছেন পেদ্রো ফার্নান্দেজ, যাঁকে আদর করে সবাই ডাকেন দ্রো ফার্নান্দেজ বলে। আগামী দিনে হয়তো এই নামেই নিজেকে চেনাবেন তিনি। তবে এই নামের পেছনেও আছে মজার গল্প।
আরও পড়ুনরাশফোর্ডকে কেন ‘লুকিয়ে রেখেছে’ বার্সেলোনা২৩ জুলাই ২০২৫‘পেদ্রো’ নামের সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে ‘দ্রো’—এই নামে ডাকতেন তাঁর ভাই। পরিবারের আপত্তি ছিল না; কারণ, এভাবে তাঁর বাবার নাম থেকে তাঁকে আলাদা করা যায়। বাবার নামও ছিল পেদ্রো। কিন্তু ভাইয়ের দেওয়া নামটা তাঁর সঙ্গে বার্সেলোনায়ও দারুণভাবে মানিয়ে গেছে। কারণ, একই সময়ে বার্সায় আরও দুজন ‘পেদ্রো’ নামের খেলোয়াড় ছিলেন। একজন হচ্ছেন পেদ্রো ভিয়া (১৭) আর অন্যজন পেদ্রো রদ্রিগেজ (১৭)। দ্রো নামটা তাঁকে এ দুজনের চেয়েও আলাদা করেছে।
গতকাল প্রাক্–মৌসুম প্রস্তুতিতে জাপানি ক্লাব ভিসেল কোবের বিপক্ষে ৭৯ মিনিটে মার্কাস রাশফোর্ডের বদলে দ্রোকে মাঠে নামান বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিক। মাঠে নামার ৮ মিনিট পর নিজের প্রথম গোলও করেন এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক শটে গোল করেন দ্রো।
আরও পড়ুনমাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনা: বার্সেলোনার পর শোক জানাল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড২৬ জুলাই ২০২৫শুধু গোল করে নয়, যেটুকু সময় মাঠে ছিলেন নিজের প্রতিভার ঝলক দেখিয়েছেন এই কিশোর। নিখুঁত পাসিং, গতিময়তা, ওয়ান টাচ এবং ড্রিবলিং জাদুতে মুগ্ধ করেছেন সবাইকে। এই ম্যাচে যদি শেষ পর্যন্ত গোল যদি না–ও পেতেন, তবু দ্রোকে আলাদা করে চেনানোর প্রয়োজন হতো না। অল্প সময়ের মধ্যে ‘আগামী দিনের তারকা’ খেতাবটাও নিজের করে নিয়েছেন দ্রো। এমনকি কেউ কেউ তাঁর খেলায় বার্সেলোনা ও স্পেন কিংবদন্তি আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার ছায়াও দেখতে পেতে শুরু করেছেন।
গ্যালিসিয়ান বাবা এবং ফিলিপিনো মায়ের সন্তান দ্রোর জন্ম ২০০৮ সালে নিগরান শহরে। এরপর প্রতিভার জোরে একপর্যায়ে ঠাঁই করে নেন লা মাসিয়াতে। সেখানেই নিজের প্রতিভা ও মেধার বিকাশ ঘটান এই কিশোর। আর ফ্লিকের হাত ধরে গতকাল মূল দলের হয়ে মাঠেও নেমে গেলেন তিনি। দ্রো মূলত অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হলেও তাঁকে ফরোয়ার্ড, লেফট উইংগার এবং ফলস নাইন হিসেবেও খেলতে পারেন। এককথায় দ্রো রীতিমতো বৈচিত্র্যময়তার আধার।
যা ঘটেছে দ্রোর নিজেরই যেন বিশ্বাস হচ্ছে না.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।
আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগেএ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।
সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।
এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।
আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে