অন্তর্বর্তী সরকারের ঘনিষ্ঠজনেরাই এখন এই সরকারের অধীন নির্বাচন দেওয়ার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বলে মনে করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের)।

আজ সোমবার এক বিবৃতিতে জি এম কাদের বলেন, ‘এখন সরকারের ঘনিষ্ঠরাই বলছেন, এই সরকারের মধ্যেই আরেকটা সরকার আছে। সরকার ঘনিষ্ঠরাই বলছে, এই সরকারের নির্বাচন দেওয়ার সক্ষমতা নেই। তারাই বলছে বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ নয়।’

প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাসদস্যদের সহায়তায় একটি দল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে অভিযোগ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের মতো নিবন্ধিত দলকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা দেওয়া হচ্ছে। যদি তা–ই হয়, তাহলে এই সরকার কীভাবে দলনিরপেক্ষ হয়? তাই অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনা ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।’

দেশের বেকারত্ব, বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা, পোশাকশিল্পে সংকটসহ বিভিন্ন সংকট থেকে উত্তরণে সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত হতে হবে। সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে কোনো সরকারি দল থাকতে পারবে না।

জি এম কাদের অভিযোগ করে বলেন, সরকারের সমালোচনা করায় তাঁর নামে একের পর এক মামলা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে, পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে না। জুলাই আন্দোলনের পর মিথ্যা মামলায় জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে জামিন দেওয়া হচ্ছে না।

বিবৃতিতে সরকারের বিরুদ্ধে কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করলেই তাঁকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ বলে ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। মাইলস্টোন স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে কয়েকজন উপদেষ্টার জনরোষে পড়ার ঘটনা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেশের অধিকাংশ মানুষকে ফ্যাসিবাদের দোসর বানিয়ে সরকার বিপদে পড়ছে মনে হচ্ছে।’

সরকার জাতীয় পার্টির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘আমাদের রাজনীতি করতে দিবে কি না বা নির্বাচন করতে দিবে কি না, তা নিয়ে সরকার চিন্তাভাবনা করছে। জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করা যেহেতু এ প্রেক্ষাপটে দেশে–বিদেশে গ্রহণযোগ্য করা যাচ্ছে না, সে কারণে জি এম কাদেরবিহীন জাতীয় পার্টি তৈরির অপচেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই সরক র র এম ক দ র র ই বলছ র ঘন ষ

এছাড়াও পড়ুন:

সব দলের সঙ্গে আলোচনা না করে নির্বাচন দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না: এনসিপি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সরকারকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দিকে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা না করে সরকার নির্বাচনের দিকে যদি অগ্রসর হয়, সেটা যে গ্রহণযোগ্য হবে না।

রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার ১৯তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এনসিপির সদস্যসচিব এ কথাগুলো বলেন।

রাজনৈতিক দলগুলো যদি দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সামগ্রিক রাষ্ট্রীয় স্বার্থ এবং বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে যায়, তাহলে জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদ প্রণয়ন করা সম্ভব বলেও মনে করেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি।’

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে, এ রকম একটা টাইমলাইন অনেক আগেই বলছে। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে বিচার-সংস্কারকে দৃশ্যমান পর্যায়ে উন্নীত করা, জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা, নির্বাচনের জন্য মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং একই সঙ্গে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের ঘোষণার দিকে যেতে হবে। অবশ্যই জুলাই সনদ এবং জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের পরে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা যেতে পারে।’

আখতার হোসেন বলেন, ‘এর আগে প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে বসে যখন একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন, তখন আমরা তার প্রতিবাদ করেছিলাম। যদি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা না করে সরকার নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হয়, সেটা যে গ্রহণযোগ্য হবে না, তা বলার অবকাশ রাখে না।’

এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, ‘যাঁরা বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, যাঁরা বাংলাদেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, এই ফ্যাসিবাদবিরোধী পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই যদি সরকার নির্বাচনের মতো বিষয়কে খোলাসা ও সুনির্দিষ্ট করতে শুরু করে, তাহলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার বিষয়টি আমরা পুনর্বিবেচনা করব।’

রোববারের আলোচনায় অংশ নেয় বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।

আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, মো. আইয়ুব মিয়া। সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩৫ বছর পর রাকসু তফসিল নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়
  • সব দলের সঙ্গে আলোচনা না করে নির্বাচন দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না: এনসিপি
  • এক্সের কমিউনিটি নোটসে পরিবর্তন আসছে