Prothomalo:
2025-11-02@13:17:03 GMT

ইংলিশ টিচার

Published: 29th, July 2025 GMT

আমি ইংরেজিতে অত ভালো না। এইটে উঠলাম সবে। জানুয়ারি মাস। বাসায় কথা হইতেছিল, আমার একজন ইংরেজির স্যার রাখার ব্যাপারে। বছর শুরু, তাই ঢিলেঢালাভাবেই শুরু হইছে। স্পেশাল চাইল্ডদের জন্য জাপানি এনজিওর একটা স্কুলের টিচার আম্মু। ডিউটির পরে স্কুলের সঙ্গে চলা আরেকটা প্রোগ্রামের ডিউটি থাকে সপ্তাহে তিন দিন। যাদের শ্রবণশক্তির সমস্যা হয়, তাদের সাধারণত হিয়ারিং এইড পরতে হয়। তো এই জন্য একটা টেস্ট করতে হয়—কত পাওয়ারের হিয়ারিং এইড দরকার। এই টেস্টটা ওই স্কুলে হইত, হিয়ারিং এইডও ওখান থেকে কেনা যাইত। আম্মু এই সব দায়িত্বে থাকত।

আম্মু একদিন অফিস থেকে একজন লোক নিয়ে এল। সামনের রুমে বসছে সে। আম্মু কথাবার্তা বলতেছে। আমার কথাই বলতেছে—পড়াশোনায় ভালো, আমাকে পড়ার জন্য বলতে হয় না। আম্মু চাকরির জন্য আমাকে তেমন সময় দিতে পারে না বলতে বলতে আমাকে ডাকল।

‘ইনিসী। এবার এইটে উঠল। সদর গার্লস, মর্নিং শিফট।’

আম্মুর ইনট্রোডাকশন শেষ হওয়ার পর আমি লোকটাকে সালাম দিলাম।

সোফায় আম্মুর পাশে বসলাম।

আম্মু বলল, উনি আমাকে ইংরেজি পড়াবে। কখন আসলে ভালো হয়, তা বলতে বলল।

আমি ইতস্ততভাবে কথা শুরু করতে যাচ্ছি, তখন, ‘আমি নিজাম। তোমাকে কয়েকটা প্রশ্ন করি?’

বিব্রত হয়ে ঠোঁট যতখানি প্রশস্ত করা যায়, ততখানিই করে ওনাকে বললাম, ‘অবশ্যই!’

‘ইউ শুড ভিজিট ময়নামতি। ইট’স.

..সিটি।

অপশন ওয়ান. আ হিস্টোরিক্যাল অ্যান্ড ইন্টারেস্টিং

টু. আ হিস্টোরিক্যাল ইন্টারেস্টিং

থ্রি. অ্যান ইন্টারেস্টিং হিস্টোরিক্যাল

আমি আম্মুর দিকে তাকায়ে বললাম, ‘অপশন এ।’

আম্মুই উৎসুক হয়ে জানতে চাইল, ‘স্যার, পারছে?’

‘হ্যাঁ। আচ্ছা আপা, তাইলে কখন আসব আমি?’

‘সন্ধ্যার পর। শনি, সোম, বুধ।’ আমি একনিশ্বাসে বললাম। রাগ লাগতেছিল। প্রশ্ন করছে এ জন্য না, বরং প্রশ্ন করার ধরনটা খুব বাজে লাগছে—যেন আমি কিছু জানি না, এ উনি জেনে এসেছেন। উত্তর দেওয়ার পরেও কেমন ভাবলেশহীন।

ভালো সান্ধ্যনাশতা শেষে নিজাম স্যার চলে গেলেন। আম্মু শাড়ি ছেড়ে এসে আমাকে ঘটনা সবিস্তার বলতে শুরু করল।

নিজাম স্যার আম্মুর আজকের একজন পেশেন্ট। ডাক্তার মাহবুব কবিরের রেফার করা পেশেন্ট। সিরিয়াস অবস্থা। দুই বছরের মেয়ে আছে ওনার একটা, তার কাছ থেকে বিনা অনুমতিতে মুড়ি খাওয়ায়, সে পিতার কান বরাবর চড় বসায়। কানের পর্দা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হইছে। আজকে হিয়ারিং এইড কিনে নিয়ে গেছে।

কিনে আসলে নিয়ে যাইতে পারে নাই, তাই সমস্যা তৈরি হইছে। হিয়ারিং এইডের দাম ২৫০০ টাকার মতো। তারপর টেস্টে খরচ আছে। ডাক্তারের ফি আছে। উনি টেস্ট আর হিয়ারিং এইডের টাকা দিতে পারতেছিলেন না। আম্মু ওনার দায়িত্বে ছিল। টাকা না দিতে পারায়, আম্মুর ঊর্ধ্বতন ম্যাডামকে জানানো হয়। সে এবং আম্মু নিজাম স্যারের সঙ্গে কথা বলে। কথায় কথায় জানা যায়, নিজাম ইংরেজিতে অনার্স-মাস্টার্স করছে, একটা কিন্ডারগার্টেনে পড়াইত, সম্প্রতি সেই চাকরিও নাই। বউবাচ্চা নিয়ে খুব খারাপ আছে। একটা টিউশনি আছে এখন শুধু।

আম্মু এবং আম্মুর বসের কাছে, সে একরকম চাকরিই চেয়ে বসে বিল পরিশোধের পরিবর্তে। কান্নাকাটিও করে। শাহিনা আন্টি, আম্মুর বস, নিজাম স্যারকে জানায়, তার একটা ছেলে আছে, সিক্সে পড়ে। তাকে সে পড়াইতে পারবে কি না। এ ছাড়া স্কুলে কোনো ব্যবস্থা করা তার পক্ষে সম্ভব না।

‘পারব আপা। ইংরেজি নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না আমি পড়াইলে।’

ঠিক এই সময়, আম্মুর মনে পড়ে যায় আমার কথা। আম্মুও শাহিনা আন্টির সঙ্গে যুক্ত হয়।

‘আমার বড় মেয়ে এইটে পড়ে। আমি ওর জন্য একজন ইংলিশ টিচার খুঁজতেছি। আপনি পারলে ওকেও পড়ান। আমাদের বাসা পাশাপাশি। আপনার আলাদা যাতায়াত খরচ লাগবে না।’

এইভাবে নিজাম স্যার আমাকে পড়াইতে নিযুক্ত হয়। প্রথম মাস ফ্রি পড়াবে—দুজনকেই। কারণ, ওনার টেস্ট আর হিয়ারিং এইডের ফি আম্মু এবং শাহিনা আন্টি পে করছে।

স্যার আসার আগে আম্মু আমাকে জানায়ে গেল। আমি গ্রামার বইটা নেড়েচেড়ে দেখতেছি। কী জিজ্ঞেস করবে আবার, উত্তর দিতে না পারলে ইজ্জত থাকবে না।

প্রথম দিন বেশ ভালো পড়াইল, অন্যান্য সাবজেক্টে সমস্যা থাকলে তা-ও দেখাইতে বলল। আমি তা না দেখানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। বললাম, ‘ইংরেজিটাই দেখতে বলছে আম্মু।’

আম্মুর সিদ্ধান্ত, এক মাস দেখব কেমন পড়ায়, এই মাসে তো আর টাকা দিতে হচ্ছে না। ভালো না লাগলে বাদ পরের মাস থেকে। আমিও সম্মতি দিলাম।

নিজাম স্যার নিয়মিত আসেন। নাশতা যা দেওয়া হয়, সবটাই খান সাধারণত। আম্মুর নির্দেশমতো একটু ভালো নাশতাই দেওয়া হয়। পড়ানোর সময় আমার দাদি তার রুম থেকে সোজা এদিকে দৃষ্টি রাখেন। ফলে নিজাম স্যার পড়ানোর বাইরে তেমন কথা বলতে পারেন না।

আমি নানাবাড়ি যাওয়াতে মাঝে এক দিন স্যারকে ফোন করে আসতে নিষেধ করে দিছিলাম। পরে আবার যথারীতি এলেন। হাতে অনেক কাগজ। টেবিলে রেখে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার নানাবাড়ি কই?’

‘ভাটিখানা, আমানতগঞ্জ।’

‘আমার বাসাও তো আমানতগঞ্জ!’

‘কোন দিকে?’

‘পুলের ওপারে।’

‘আমার নানাবাড়ি পুলের এপারে। মুন্সিবাড়ি।’

‘দাঁড়াও দাঁড়াও, তোমার আম্মুর নাম কী?’

‘ঝর্ণা।’

‘মুন্সিবাড়ির ছোট মেয়ে যে, মারা গেছে?’

‘হ্যাঁ।’

‘তাইলে উনি?’

‘বাবা বিয়ে করছে পরে। উনিও মা।’

‘আমি বুঝতেই পারি নাই, উনি তোমার সৎমা। চেহারাতেও মিল আছে তোমাদের। তা ছাড়া উনি তোমার ব্যাপারে বেশ কনশাস। আমার একবারও মনে হয় নাই।’

‘হুম।’

‘তাইলে দোলা তো তোমার খালাতো বোন?’

‘হ্যাঁ।’

‘আমি দোলার ক্লাসমেট ছিলাম।’

‘ভালো।’

নিজাম স্যার আম্মুর আর আমার যা জেনে ফেলছে, এগুলো অপ্রয়োজনীয় মনে করে আম্মুকে আমি আর কিছু বলি নাই। তবু আম্মুর এক্সপ্রেশন একটু সতর্কভাবে দেখতেছিলাম—কোনো পরিবর্তন হইল কি না।

আম্মু রাতে ভাত খেয়ে আমাকে রুমে ডাকল। আমি অযথা একটা ভারসহ যেন পেটেব্যথা টের পাইলাম।

রুমে ঢুকতেই আম্মু বলা শুরু করল, ‘জানো আজকে স্কুলে কী হইছে, চিনু আপা তার মেয়েরে পড়ানোর জন্য স্যারকে স্কুলে ডাকছে। সেইখানে চিনু আপার সঙ্গে অনেক কথা ওনার, চিনু আপা তো বোঝোই, গল্প করতে পারলে কাউরে ছাড়তে চায় না। পরে কথায় কথায় জানা গেল, উনি হাত দেখতে পারে।’

আমি ভারমুক্ত এবং পেটব্যথামুক্ত হয়ে বললাম, ‘তারপর?’

‘তোমার আব্বুকে বলবা না, আমিও হাত দেখাইছি।’

এই বলে আম্মু হাসি আর থামাইতে পারতেছিল না।

‘কী বললেন উনি হাত দেখে?’

‘বিশ্বাসযোগ্য কিছু না। তোমারে বলতে পারব না। বলতে পারলে ভালো হইত। তুমি ব্যাপারটা বুঝতা।’

‘আমিও তাইলে কালকে হাত দেখাই?’

‘তোমার দাদি আর আব্বু যেন না জানে।’

‘জানবে না। কী হইল বলব পরে তোমারে।’

আমি পরদিন সিস্টেম করে দাদিকে দোতলার আরেক বৃদ্ধার কাছে পাঠায়ে দিই। বাসায় আমার বোনেরা এবং কাজের লোক, এরা কেউ বলবে না বিশ্বাস রেখে স্যার আসামাত্রই বললাম, ‘স্যার আমার হাত দেখে দেন। আপনি নাকি স্কুলে আন্টিদের হাত দেখছেন।’

‘চিনু আপার মেয়েটাকে পড়ানো শুরু করছি। ওই বাসায় প্রথম দিনই এত লোক হাত দেখাইতে চলে আসছে, পড়াইতেই পারলাম না।’

‘আমার হাত দেখে দিয়েন আজকে।’

স্যার দাদির রুমের দিকে তাকাইলেন। আমি বললাম, দাদি নাই তাই আজকেই দেখে দিতে হবে।

‘তোমার আম্মু জানে?’

‘হ্যাঁ, বলছি।’

স্যার বাঁ হাত সামনে দিতে বললেন। অনেকক্ষণ খুঁটে খুঁটে দেখলেন। কলম দিয়ে হাতের রেখার হিসাব মেলাচ্ছিলেন মনে হইল।

আম্মুর কথা অনুযায়ী, ওনার বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য হবে না। উনি কীভাবে ব্রিফ করবেন ভবিষ্যদ্বাণীসমূহ, আমি আসলে তাই দেখতে চাইতেছি। আবার আম্মু আমাকে বলে নাই, স্যার তার হাত দেখে কী বলছে, তাই খানিক আগ্রহও কাজ করতেছে।

তেমন ইন্টারেস্টিং কিছু বললেন না। অনেক দিন হায়াৎ পাব দিয়ে শুরু করে একদম প্রেডিক্টেবল সিনেমার মতো বলে গেছেন।

আম্মুকে হতাশ হয়ে সব বললাম। তা-ও সে হাসতে থাকল, আগের দিনের কাহিনি মনে করে।

‘চিনু আন্টির মেয়েকেও পড়ানো শুরু করছেন উনি।’

‘কিন্তু শাহিনা আপা তো আর রাখবেন না। তুমি কী বলো? মাস প্রায় শেষ। ওনাকে জানায়ে দিতে হবে।’

‘একটু অন্য রকম করে পড়ায় অবশ্য, কিছু শিট দিছিল। গতানুগতিক না। ভালো কোনো গ্রামার বইয়ের ফটোকপি হয়তো। ফটোকপির টাকাটা দিয়ে দিয়ো। আর আগামী মাস থেকে আসতে হবে না।’

‘হুম। তোমার আব্বু একজন টিচারের কথা বলতেছিলেন, দেখি কী হয়।’

নিজাম স্যারকে মাস শেষ হওয়ার আগেই জানায়ে দেওয়া হইছিল। উনি তবু ফেব্রুয়ারিতে আরও এক দিন পড়াইছিলেন।

তারপর নতুন স্যার রাখা হইছিল। বছরখানেক নিজাম স্যারের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ ছিল না।

আমি নাইনে উঠলাম।

দোলা আপুর বাবা, আমার খালু, সেই বছর মার্চে মারা গেলেন। খবর পাওয়ামাত্র আমি, আম্মু, আব্বু তিনজনই গেলাম।

খালামণির অবস্থা আম্মু মারা যাওয়ার পর থেকেই খারাপ, এখন সর্বোচ্চ খারাপ হইল মনে হইতেছে। খালু চাকরি থেকে রিটায়ার্ড করার পর, একটা মুদিদোকান দিছিলেন। বিকেলে খালু মুদিদোকানে যাওয়ার আগে, আমি কী কী লাগবে বলে দিতাম। খালু নিয়ে আসত। খালামণির কাছে শুনছি, আম্মুর বিয়ের আগে কোনো দরকার হইলে সে সোজা খালুর অফিসে গিয়ে হাজির হইত। খালু আম্মুকে খুবই স্নেহ করত।

সেই খালুর প্রতি আমারও আলাদা ভালোবাসা আছে। আমি ওদের কাউকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা না করে থ হয়ে বসে রইলাম।

‘ইনিসী একটু আসো তো, তোমার স্যার দেখা করতে আসছেন।’

আম্মু ডেকে বলল।

এখন, এখানে কোনো স্যার আসতে পারে, আমি তা ভেবে পাচ্ছি না।

‘আসতেছি।’

আমি চোখ মুছে গিয়ে দেখি, নিজাম স্যার। কানে হিয়ারিং এইড আছে। শীতে মাফলার প্যাঁচানো থাকত তাই বুঝতাম না।

‘কেমন আছেন?’

‘আছি। দোলা কোথায়? কেমন আছে?’

‘আছে, কান্নাকাটি করতেছে।’

‘দোলার জামাই আসছে?’

‘হ্যাঁ। আপুকে ডাকব? কথা বলবেন?’

‘না, আজকে যাই।’

‘পরশু মিলাদ। আইসেন।’

নিজাম স্যারের বাসা এখানেই, খবর পেয়ে আসছে। আমি ওনাকে দেখে পর আর আশ্চর্য হই নাই।

দোলা আপু বা খালামণির সঙ্গে স্যারের ব্যাপারে কথা হয় নাই। ওদের যে রকম অবস্থা, তাতে বলার মতো সুযোগ না পেয়ে আমি ভুলে গেছি পুরো ব্যাপারটা।

খালু মারা যাওয়ার এক মাস মতো পর, দোলা আপু তার স্কুলের কথা কী যেন বলায় হঠাৎ জিজ্ঞেস করলাম, ‘নিজাম নামে তোমার কোনো ক্লাসমেট ছিল?’

‘আমি গার্লস স্কুলে পড়ছি ছাগল।’

‘ও হ্যাঁ, তাই তো। কাউকে চেনো এই নামে? নিজাম স্যার আমাকে এক মাস ইংরেজি পড়াইছিলেন, বলছিল, সে তোমার ক্লাসমেট।’

‘পুলের ওপারের?’

‘হ।’

দোলা আপু নিজাম স্যারের বিস্তারিত বললেন। ভয়ংকর ইভটিজার, মাস্তান হিসেবেই তাকে সবাই চেনে। পড়াশোনা শেষ করে নাই। ম্যাট্রিক দুইবার ফেল।

আমি ঘটনার আকস্মিকতায় হা করে আছি। খালামণি ছুটে এসে বলতে শুরু করল, ‘নিজাইম্ম্যা আইছিল নাকি? তোর খালু অর মায়রে ডাইকা আইনা নালিশ দিছিল। এর পরপরই উনি হার্ট অ্যাটাক করছিলেন। নিজামের মা-য় মরার পর ও তো ফেরার হইয়া আছিল।’

আমি ফোনে নিজাম স্যারের নাম্বার খুঁজে ফোন করলাম। বন্ধ বলার পরেও তিনবার ট্রাই করলাম।

দোলা আপু হাসি থামায়ে হঠাৎ সিরিয়াস হইয়া আমাকে বলল, ‘কী ইংলিশ পড়াইল তোরে এখন একটু শুনি। বল।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন জ ম স য র আম ইন ট র স ট খ ল মণ আম ম র র জন য র আম ম স য রক বলল ম বলল ন

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি

‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে ‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।

এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’

‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন

‎জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।

‎তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

‎কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।

‎পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”

‎গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”

‎অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, ‎যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ