‘আব্বুর সঙ্গে তিন ভাইয়ের সব গল্প শেয়ার কইর’
Published: 29th, July 2025 GMT
রক ব্যান্ড ‘ওন্ড’-এর ভোকালিস্ট, বেজিস্ট ও শব্দপ্রকৌশলী এ কে রাতুল মারা গেছেন রোববার। তিনি চিত্রনায়ক জসীমের মেজো ছেলে। সংগীতাঙ্গন থেকে চলচ্চিত্রজগৎ—সবখানেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রিয়জনকে হারিয়ে যখন চারপাশ নিস্তব্ধ, তখন সেই শূন্যতা শব্দে পূর্ণ করেছেন ছোট ভাই রাহুল। তাঁর এক ফেসবুক পোস্টে উঠে এসেছে দুই ভাইয়ের না-বলা অনেক গল্প।
রাতুলের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যেন হয়ে উঠেছিল শোকবই। পরিচিত–অপিরিচিত অনেক মানুষের আবেগ ছুঁয়ে গিয়েছিল রাতুলের মৃত্যু। ফেসবুক পোস্টে রাহুল লিখেছেন, ‘স্ক্রল করি আর ভাইটার জন্য আপনাদের ভালোবাসা দেখি। ভেঙে পড়ছি অনেক। আমার ভাইকে নিয়ে প্রতিদিন অনেক কিছু বলব, কেউ কিছু মনে নেবেন না। ধন্যবাদ আপনাদের। রাতুলকে আমরা সবাই বাঁচিয়ে রাখি।’
পোস্টে রাহুল আরও লিখেছেন, ‘পৃথিবীতে একটা এ কে রাতুল ছিল, এ রকম মানুষ আর কোনো দিন আসবেও না। ভাই রে, প্রতিজ্ঞা করছি—যা করি, সেটা করে যাব। প্রতি শোয়ের পর তুমি আমার গিটার টোন গুঁতাইতে চাইতে, এখন কেউ নাই গুঁতানোর। কিন্তু তা–ও করে যাব তোমার জন্য। ওপর থেকে দেখে হাসিটা দিও।’
দুই ভাইয়ের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মুহূর্তগুলো তুলে ধরে রাহুল লিখেছেন, ‘রেসলিং নিয়ে কী হচ্ছে আপডেট দেবোনে, কেমনে দেব জানি না। তোমার জন সিনা বেশি দিন তো রেসলিং করবে না, দেখি কী হয়। বলছিলে জিটিএ-৬ আসলেই প্রি-অর্ডার করতে চাও, মন খারাপ হয়ছিল যখন পিছিয়ে গেছে। তোমার কনসোলেই ওইটা শেষ করব আমি।’
সোমবার সকালে বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন রাতুল। বাবা জসীমের কবরেই সমাহিত করা হয়েছে তাঁকে। বাবা আর ভাইয়ের উদ্দেশে রাহুল লিখেছেন, ‘আব্বুর সঙ্গে সব স্টোরি শেয়ার কইর, তিন ভাই মিলে কী আকামগুলা করছি। হালকা ফিল্টার কইর।’
প্রয়াত চিত্রনায়ক জসীমের তিন ছেলে—এ কে সামী, এ কে রাতুল ও এ কে রাহুল। শৈশবে বাবাকে হারানো তিন ভাই একে অন্যের হাত ধরে বড় হয়েছেন। বাবার মতো চলচ্চিত্রে নয়, তিনজনই বেছে নেন সংগীতের পথ। রোববার (২৭ জুলাই) হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় রাতুলের।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।
আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগেএ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।
সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।
এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।
আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে