হাবিব ও সজীবের জল্লারপাড় লেকে জমজমাট মাদক বানিজ্য
Published: 29th, July 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৭ নং ওয়ার্ডের জল্লারপাড় এলাকায় হাবিব ওরফে পিচ্চি হাবিব (মাদকসহ ৫/৭টি মামলার আসামি), একটা খুনি পরিবার থেকে বেড়ে ওঠা ভয়ংকর সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গাং লিডার।
বাবা মৃত কমল মিয়া এক সময় পুলিশের সোর্স ছিলেন যে কিনা খুন হয় নিজ সৎ ছেলের হাতে। হাবিবের বড় ভাই মানিক এলাকার জনি নামের এক ছেলেকে খুন করে যাবজ্জীবন সাজায় জেল খাটছে।
হাবিব ৫ই আগস্ট এর আগে আজমীর ওসমানেরক্যাডার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য ছিলো। গণঅভ্যূত্থানের আগে এলাকায় বড় করে ১৫ আগস্ট পালন ও নাসিম ওসমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন এবং ওসমান পরিবারের পালিত ক্যাডারদের দাওয়াত করে মহড়া দেয়ার ছবি ও বিভিন্ন মিছিল মিটিং এর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল।
ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর সে যোগ দেয় বিএনপিতে। এলাকার বিএনপি'র বিভিন্ন নেতা ও দেওভোগের অনেক নেতার দেখা মিলে হাবিবের অফিসে ও আড্ডায়। অনেকেই আসে হোন্ডার বহর নিয়ে যার ফলে এলাকার মানুষ ভয়ে মুখ খুলেনা। মানুষকে আতঙ্কে রাখতে হাবিবকে দেখা যায় নিজে বড় বড় ছুড়ি নিয়ে মহড়া দিতে।
হাবিবকে শেন্টার দিচ্ছে বিএনপি'র ক্যাডার গাল কাটা জাকিরের ছোট ভাই ডাকাত সজিব। ডিস বাবুর নির্দেশে ডাকাতি করতে যাওয়া সজিব ডাকাতি মামলায় ৯বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি, হাইকোর্ট থেকে আপিল করে জামিনে আছে। সদর থানায় ৪/৫ টির বেশি মাদকসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। হাবিব ও সজীব নারায়ণগঞ্জে আজমির ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে পরিচিত।
৫ আগস্টের পর সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদাররা এলাকা ছাড়লেও হাবিব ও সজীব এলাকায় আছে বহাল তবিয়তে। এর কারণ হাবিবের মাদক ব্যবসার অডেল টাকা ও তাদের দুজনের ক্ষমতা। মাদকের টাকায় হাবিব করেছে এলাকায় আলিশান দুইতালা বাড়ি। হাবিব ও সজীবের আয়ের উৎস হল তারা পাইকারি হিরোইন ইয়াবা ও গাজা ব্যবসায়ী।
এক নং বাবুরাইল, ২ নং বাবুরাইল, জিমখানা, পাইকপাড়া, নলুয়াপাড়া, ঋষিপাড়া সব জায়গায় হাবিব ও সজীবের মাদক বিক্রি হয়। হাবিবের দখলকৃত সবচেয়ে বড় স্পট হলো জিমখানা পানির টাংকি যা ফাইম ও সায়েম দেখে। এসব স্পটে দৈনিক লাখ লাখ টাকার নেশা বিক্রি হয়।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, এখান থেকে মাসোহারা পৌঁছে যায় কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তার পকেটে সেই সাথে নামধারী সাংবাদিকদের কাছে মাসোহারা পৌছে। জনশ্রুতি রয়েছে, এসব অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও কথিত সাংবাদিকদের দাপটে হাবিব ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
হাবিবের প্রধান সেলসম্যান মিলন ও মাসুম ওরা একাধিকবার ডিবির কাছে গ্রেফতার হয় পরে বিশাল অংকের টাকা দিয়ে ছাড়া পায়। ওদের দুজনকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসবে বিভিন্ন তথ্য।
এলাকায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা হলেও হাবিবকে ধরতে পারছে না প্রশাসন এর কারণ পুরো এলাকা বিভিন্ন সিসি ক্যামেরা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা জল্লারপাড় মসজিদের সামনে বিভিন্ন দোকানদার তাকে ফোন করে জানিয়ে দেয় এলাকায় পুলিশ আসছে, প্রশাসন ঢোকার আগেই হাবিব সটকে পড়ে। এলাকা ঘনবসতি হওয়ায় লুকিয়ে যায় অন্য কারো ঘরে এজন্য প্রশাসন ধরতে না পড়ে চলে আসে।
এলাকার সবাই রাতে যখন ঘুমায় তখন তার বিচরণ দেখা যায় বিভিন্ন অলিতে গলিতে। গভীর রাতে সঙ্গী সহ অনেক পাওয়ারের টর্চ লাইট ও দেশি অস্ত্রশস্ত্র সাথে থাকে ডাকাত সজিব ও কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা। হাবিব ও সজীবের বিরুদ্ধে রয়েছে অন্যের জায়গা দখলে নেওয়ার অভিযোগও।
একাধিক বাড়ির মালিক তাদের বাড়ির কাজ করতে পারছে না তাদের দুজনের জন্য। চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ। চাঁদা দিয়ে মীমাংসা করলেই বাড়ির কাজ করতে পারছেন। অন্যের কেনা বাড়িতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিচ্ছে তারা দুজন জায়গার দাবি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
এলাকাবাসী এখন হাবিব ও সজীবের হাতে জিম্মি। সবাই এর থেকে মুক্তি চায়। হাবিব এতটাই ধুরন্দর যে প্রশাসনে হাত থেকে বাঁচার জন্য ৫ ই আগস্ট এর পর এলাকায় ওয়াইফাই ব্যবসা দিয়েছে, তার সেলসম্যান মাসুম এই ব্যবসার ম্যানেজার সে সম্পূর্ণ ব্যবসা দেখাশোনা করছে। মাসুমেরও বিভিন্ন ছবি আছে আজমির ওসমানের মিছিলে ও ১৫ ই আগস্টের খিচুড়ির বিতরনের অনুষ্ঠানে।
ছাত্র আন্দোলনের সময় হাবিব, সজীব ও মাসুম তাদের সবারই ওসমান পরিবারের পক্ষে ছিল নজর কাড়া ভূমিকা। মোট কথা এলাকাবাসী এখন সম্পূর্ণ জিম্মি হাবিব ও সজীবের কাছে।
নারায়ণগঞ্জের সব মাদকের স্পটে অভিযান হলেও জল্লারপাড়ায় হাবিবের মাদকের স্পটে কেন অভিযান হচ্ছে না এ নিয়ে এলাকাবাসীর মনে বিভিন্ন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। এলাকাবাসী দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে তারা হাবিব ও সজীবের জিম্মি থেকে মুক্তি হতে চায়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ওসম ন এল ক ব স ওসম ন র এল ক র এল ক য় ব যবস আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লার দুই দশকের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশাসনের কাজ শুরু
গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন কর্মসূচির আওতায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকার প্রায় দুই দশক ধরে চলে আসা জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে ফতুল্লার কাইয়ুম এলাকার একটি খাল পরিষ্কার কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রায় ৯২ কিলোমিটার খাল রয়েছে। তার মধ্যে ১৭ কিলোমিটার অবৈধ দখলসহ নানা কারণে একেবারে ব্লক হয়ে গেছে।
পানি প্রবাহ বন্ধ হয়েছে। আর এই ১৭ কিলোমিটার খালের পানি প্রবাহ সচল রাখার লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ৯টি খালের ৫৬টি স্পটে প্রায় ১১ কিলোমিটার খাল উদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ শহরের যতগুলো বড় সমস্যা রয়েছে তার মধ্যে দুই দশকের সমস্যা হচ্ছে জলাবদ্ধতা। দীর্ঘদিন যাবত এই শহরের মানুষ জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত।
আমাদের কাছে এই অভিযোগ আসার পর আমার সহকর্মীদের নিয়ে পূর্ব লালপুর থেকে শুরু করে পাইওনিয়ার মসজিদ এবং ডিএনডির বাঁধগুলো পরিদর্শন করেছি।’
তিনি আরো বলেন, পরিদর্শনের পর একটি কমিটি গঠন করেছিলাম। তারা প্রতিবেদন দেওয়ার পর আমরা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছিলাম। সেই সঙ্গে আমরা মন্ত্রণালয়কে বোঝাতে সক্ষম হই এবং আমাদের প্রকল্প অনুমোদন করে।
আমরা ব্লক থাকা ১৭ কিলোমিটার খাল উদ্ধার করব। পাশাপাশি খালগুলোকে পরিষ্কার করে মাছের অভয়ারণ্য করার পরিকল্পনা রয়েছে। তারই অংশ হিসেবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ৯টি খালের ৫৬টি স্পটে প্রায় ১১ কিলোমিটার খাল উদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে।
আমাদের অঙ্গীকার ছিল এই শহরের জলাবদ্ধতা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসব। নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে আমার অনুরোধ খালগুলো উদ্ধারের পর ঘরের আসবাবপত্র ফেলে ভরাট করব না।
’এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী, ফতুল্লা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদিয়া আক্তার, সিদ্ধিরগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবযানি করসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা।