মানসিক ভারসাম্যহীন নারী মা হলেন, বাবা হয়নি কেউ
Published: 29th, July 2025 GMT
খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী মা হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পৌর সদরের প্রধান সড়কের পাশে একটি দোকানের সিড়ির উপর সন্তান প্রসব করেন ওই নারী। রাস্তার উপর ফুটফুটে ২ কেজি ৬ গ্রাম ওজনের সন্তান ভূমিষ্ঠ হলো চিকিৎসক কিংবা ধাত্রী ছাড়াই। তবে নবজাতকের বাবা কে তা জানা যায়নি।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিসের সামনে পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডে প্রধান সড়কের পাশে এস এম সাউন্ডের দোকানের সিড়ির উপর সন্তানটি ভূমিষ্ঠ হয়। এ সময় তার পাশে কেউ ছিল না। তবে সন্তান প্রসবের সময় ওই নারীর চিৎকার ও ছটফটানি দেখে কাছে যায় স্থানীয় দোকানদার লাবু। এ সময় পথচারী উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আব্দুল হালিম সানা সদ্যভূমিষ্ঠ কন্যা শিশু ও মাকে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। তবে হাসপাতালের বেডে একসঙ্গে মা ও সন্তানকে রাখলে ওই নারী শিশুটিকে বারবার চেপে ধরার চেষ্টা করছেন। এতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মা ও শিশুকে আলাদা জায়গায় রাখছে।
মানসিক ভারসাম্যহীন এই নারীর পরিচয় জানা যায়নি। তিনি পথে পথে ঘুরে বেড়ান। ওই শিশুর বাবা কে তাও জানা যাচ্ছে না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শাকিলা আফরোজ জানান, মা ও শিশু সুস্থ আছে।
আরো পড়ুন:
মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলের হাতে সেই বৃদ্ধা খুন
বাজারে সন্তানকে ২৫০০ টাকায় বিক্রি করলেন মা
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অনাথ কুমার বিশ্বাস জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন জানান, মানসিক ভারসম্যহীন নারীর পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। সেটা সম্ভব না হলে সরকারিভাবে যা করা যায়, সেই জন্য সমাজসেবা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।