ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে ২,৮৪০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন
Published: 30th, July 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) থেকে ২ হাজার ৮৪০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে শতবর্ষী এ শিক্ষায়তনের চেহারা পাল্টে যাবে।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল ক্লাসরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি প্রতিষ্ঠান, জাতিকে যার একাডেমিক দিক থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিগত সময়ে আমাদেরকে সে সুযোগ দেওয়া হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা আশা করি, এবার সে বঞ্চনার অবসান ঘটবে।’
গত রোববার একনেক সভায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প’ অনুমোদন করা হয়। ২০৩০ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি একাডেমিক ভবন, ২ হাজার ৬০০ ছাত্রের জন্য ৪টি এবং ৫ হাজার ১০০ ছাত্রীর জন্য ৫টি আবাসিক হল নির্মাণ করা হবে। শিক্ষকদের জন্য দুটি ও কর্মকর্তাদের জন্য আরও দুটি আবাসিক ভবন এবং পাঁচটি প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, প্রকল্পের আওতায় জলাধার ও সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি বিদ্যমান সার্ভিসলাইন মেরামত ও একটি খেলার মাঠের উন্নয়ন করা হবে। সবুজায়নে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ছয় কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও ৮ শতাংশ জায়গা বাড়বে বলে জানান তিনি।
উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘এই টাকা জনগণের করের টাকা। আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি। এটি শুধু অবকাঠামোর জন্য নয়, একাডেমিক পরিবেশকে দৃঢ় করতেও কাজে লাগবে।’
নিয়াজ আহমেদ খান আরও বলেন, ‘আমাদের বর্তমানে মাত্র ৪০ শতাংশ আবাসন আছে। এটি বাস্তবায়িত হলে আরও ১৮ শতাংশ যোগ হবে। এরপরও আবাসনসংকট থাকবে, তাই ভবিষ্যতে আবারও প্রস্তাব জানানো হবে।’
প্রকল্পে নির্মিতব্য স্থাপনাগুলো হলো কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশের ভবন ভেঙে ১২ তলা ও ৬ তলা দুটি ভবন, আইএসআরটি ও ফার্মেসি বিভাগের জন্য ১০ তলা ভবন, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে ৩ তলা ভবন, চারুকলা অনুষদের পুরোনো ভবন ভেঙে ৫ তলা একাডেমিক ভবন, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদে ১০ তলা এমবিএ টাওয়ার, প্রেস বিল্ডিং ও নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ি ভেঙে দুটি একাডেমিক ভবন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক, সূর্যসেন, শহীদুল্লাহ, মুহসীন ও কুদরাত-ই-খুদা হলে সম্প্রসারণ ভবন, ছাত্রীদের জন্য শাহনেওয়াজ, শামসুন নাহার, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে ১০-১৫ তলা ভবন, প্রতিটি হলে ২০টি ফ্ল্যাটসহ ১১তলা শিক্ষক কোয়ার্টার, সহ-উপাচার্যের বাংলো, ১৫ তলা আবাসিক ভবন, ডাকসু মাল্টিপারপাস ভবন, প্রশাসনিক ভবনের উত্তর-পশ্চিমে ২০ তলা এবং দক্ষিণ-পূর্বে ৪ তলা ভবন, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে গ্যালারি, বাস পার্কিং, অফিস, ডরমিটরি, ডা.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এক ড ম ক প রকল প র জন য ক ভবন
এছাড়াও পড়ুন:
যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখান করে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা শিক্ষার্থীদের
বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশন (বাহা) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অনুষদের যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন অনুষদটির শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে চলমান যৌক্তিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অনুষদের শিক্ষার্থীদের কতিপয় বিপথগামী বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিকেলে অনুষদীয় চত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা করেন।
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে বাকৃবি শিক্ষক কমপ্লেক্সে বাহা’র নেতৃবৃন্দ ও অনুষদের ডিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অনুষদের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ক্লাস-পরীক্ষাসহ অনুষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটার অভিযোগ তুলে মতামত দেন।
আরো পড়ুন:
গোবিপ্রবিতে ২ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, প্রক্টর-প্রাধ্যক্ষসহ আহত ১৫
ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে বিদায়
আলোচনা সভা শেষে বাহা ও ওই অনুষদ একটি যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন। যেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের এহেন কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন ও শান্তি-শৃঙ্খলা পরিপন্থি। এই কার্যক্রমে অনুষদের সব শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নেই। অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্রফেশনকে নিশ্চিহ্ন ও হেয় করতে একটি বিশেষ মহলের প্ররোচনায় কতিপয় বিপথগামী শিক্ষার্থী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপচেষ্টায় লিপ্ত।
বিবৃতিতে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানানো হয় এবং প্রফেশনের বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধানে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্বান্ত গৃহীত হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এই বিবৃতির তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আজকের সমাবেশে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা সর্বসম্মতভাবে বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাসবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনকে বয়কটের ঘোষণা দিচ্ছে। আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে।
এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী শিবলী বলেন, “আমরা পশুপালন অনুষদের বিভিন্ন লেভেলের কয়েক’শ গত ১ সপ্তাহ ধরে আমাদের যৌক্তিক দাবি কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে যাচ্ছি। যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করলে যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপদগামী বলে সম্বোধন করছেন, তাদের আমরা এ অনুষদ চত্বর থেকে লালকার্ড দেখাই। কোনো বিবৃতি বা হুমকি দিয়ে এই যৌক্তিক আন্দোলনকে থামানো যাবে না।”
আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী হিমেল বলেন, “বাকৃবিতে চলমান যৌক্তিক কম্বাইন্ড ডিগ্রি আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বাহা’র মহাসচিব ক্যাম্পাসে উপস্থিত হন। আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করা হলেও, তার পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর সাড়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে এক বিবৃতিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিপথগামী বলা হয়। এছাড়া আমাদের সম্মিলিত আন্দোলনকে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর আন্দোলন হিসেবে দেখানোর অপচেষ্টা করা হয়, যা মিথ্যা, অপমানজনক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
ঢাকা/লিখন/মেহেদী