ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের
Published: 31st, July 2025 GMT
ব্রাজিলের ওপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি এ নিয়ে হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন তিনি। কার্যকর আলোচনা না হওয়ায় স্থানীয় সময় বুধবার নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) হোয়াইট হাউজের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, ব্রাজিল সরকার গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, যা দেশটির আইনের শাসনকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
চলতি মাসের শুরুতে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভাকে ট্রাম্প যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন সেখানে উল্লেখ ছিল, বর্তমান সরকার যদি দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ডানপন্থী নেতা জইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ না করে তাহলে এই উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হবে।
ব্রাজিলের গণমাধ্যম দ্য রিও টাইমস বলছে, ব্রাজিলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বাণিজ্য নীতি মার্কিন স্বার্থের বিরুদ্ধে যাওয়ার উদ্বেগ থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্পের মিত্র হিসেবে পরিচিত ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো। বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের চেষ্টার অভিযোগে তার বিচার চলছে। ট্রাম্প প্রকাশ্যে এই বিচার প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করেছেন। শুল্ক সংক্রান্ত আদেশে উল্লেখ করেছেন, বলসোনারোর বিচার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
বুধবার মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা বিধিবহির্ভূত ‘বিচারের আগেই আটকের’ অনুমোদন এবং ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা’ দমন করার অভিযোগে ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করবেন।
বিচারক মোরেস ব্রাজিলের সাবেক ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ২০২২ সালের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর বলসোনারো ও তার সহযোগীরা অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র করেছিলেন অভিযোগে এই তদন্ত চলছে।
বলসোনারো এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বিচারক মোরেসকে ‘স্বৈরাচারী’ বলে অভিহিত করেছেন। মোরেসের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পরপরই ব্রাজিলের ওপর শুল্ক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর আদেশে সই করেন ট্রাম্প।
চীনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্রাজিলের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার, তাই এই শুল্ক বৃদ্ধি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র বলস ন র কর ছ ন র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
দোয়ার ফজিলত ও আদব
দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)
আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)
মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)
‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)
নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)
নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। ‘পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)
দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।
হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]