গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে তীব্র অপুষ্টির শিকার শিশুদের জন্য যে ওয়ার্ড, সেখানে গোলাপি রঙের দেয়ালে কার্টুন আঁকা। সেই ছবিতে শিশুরা দৌড়াচ্ছে, হাসছে এবং ফুল ও বেলুন নিয়ে খেলছে।

ছবিগুলোর নিচে গাজার কয়েকজন ফিলিস্তিনি মা তাঁদের সন্তানদের দিকে উদ্বেগের চোখে তাকিয়ে আছেন। শিশুগুলো হাসপাতালের বিছানায় নিথর হয়ে পড়ে আছে। ভীষণ ক্ষুধা আর ক্লান্তিতে বেশির ভাগ শিশু কাঁদতে পর্যন্ত পারছে না।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে চিকিৎসকেরা বলেন, সবচেয়ে বেশি অপুষ্টিতে ভোগা রোগীদের যেখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, সেখানে সাধারণত এমন নীরবতাই দেখতে পাওয়া যায়। এটা শরীর ক্রমশ নিস্তেজ ও অসাড় হয়ে পড়ার লক্ষণ।

গত সপ্তাহে রয়টার্সের সাংবাদিকেরা নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে পাঁচ দিন কাটিয়েছেন। গাজায় অনাহারে থাকা শিশুদের যে চারটি মাত্র চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর একটি নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স।

ওই স্থানে থাকা এক শিশুর মা জেইনা রাদওয়ান বলেন, ‘সে সব সময় এমন অবসন্ন হয়ে থাকে, এভাবেই শুয়ে থাকে…আপনি তার কোনো সাড়া পাবেন না।’ জেইনা তাঁর ১০ মাস বয়সী মেয়ে মারিয়া সুহাইব রাদওয়ানকে নিয়ে এ কথা বলছিলেন।

এই মা বলেন, তিনি তাঁর মেয়ের জন্য দুধ বা পর্যাপ্ত খাবার জোগাড় করতে পারেননি। সে বুকের দুধও পাচ্ছে না। কারণ, জেইনা নিজেও দিনে মাত্র একবেলা খেয়ে কোনোমতে বেঁচে আছেন। তিনি বলেন, ‘পুষ্টি না পেলে আমার মেয়ে আর আমি—কেউই বাঁচব না।’

গত সপ্তাহে রয়টার্সের সাংবাদিকেরা নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে পাঁচ দিন কাটিয়েছেন। গাজায় ভীষণ রকমের অনাহারে থাকা শিশুদের যে চারটি মাত্র চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর একটি নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স। রয়টার্সের সাংবাদিকেরা সেখানে থাকার সময় তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত ৫৩ শিশুকে ভর্তি করা হয়।

নাসের হাসপাতালে তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা এক শিশুকে দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করছেন তার মা। ২৪ জুলাই.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন স র ম ড ক ল কমপ ল ক স রয়ট র স র স

এছাড়াও পড়ুন:

গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার

রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।

চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই  তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।

ঢাকা/এমআর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ