মাইলস্টোনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনা নিয়ে ভিউ ব্যবসায়ীরা গল্প ফাঁদছেন
Published: 31st, July 2025 GMT
মাইলস্টোন স্কুলে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম, স্কুলটির কো–অর্ডিনেটর মাহরীন চৌধুরী, শিক্ষক মাসুকা বেগম। তবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই দিয়ে বানানো বিভিন্ন রিলসে তৌকির ইসলাম স্যুট–টাই পরে নিজেই বলছেন, তিনি অনেক চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু দুর্ঘটনাটা এড়াতে পারেননি। একইভাবে মাহরীন চৌধুরী ও মাসুকা বেগমও সুন্দর শাড়ি পরে হাসি হাসি মুখ করে নিজেদের পরিচয় দিয়ে বলছেন, দগ্ধ বাচ্চাদের সেখান থেকে বের করতে গিয়ে নিজেরা দগ্ধ হন এবং পরে মারা যান। অর্থাৎ মারা যাওয়ার পরও তাঁরা কথা বলছেন।
ফেসবুকে ভিউ ব্যবসার জন্য বানানো এসব রিলস দেখে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, বিষয়টি অমানবিক।
২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত শিশুসহ মারা নিহত হয়েছেন ৩৪ জন।
ঘটনার দিন আগুনে দগ্ধ হয়ে স্কুলের ভেতর থেকে যখন অনেক বাচ্চা বের হয়ে আসছিল, তখন অনেকে তাদের বাঁচানোর চেষ্টা না করে ভিডিও করছিলেন। এ নিয়ে ক্ষোভ আছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের। তাঁরা বলছেন, মানুষ সেই সময় ভিডিও না করে বাচ্চাগুলোকে একটু বাঁচানোর চেষ্টা করলে হয়তো দু-একজন বেঁচেও যেত। আর ঘটনার পর ওই সব ভিডিও এবং এআই দিয়ে বানানো ছবি ও ভিডিও দিয়ে এখন শুরু হয়েছে নতুন যন্ত্রণা। পাইলট তৌকির মারা যাওয়ার দুই মিনিট আগে কী করছিলেন, বিমানটা কীভাবে বিধ্বস্ত হয়েছিল, মারা যাওয়ার আগে স্কুলের শিক্ষকেরা কী বলেছিলেন—এমন রিলসও বানানো হয়েছে। চটকদার শিরোনাম দেখে অনেকে বিভ্রান্তও হচ্ছেন।
মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এক মায়ের ‘তিন সন্তান মারা গেছে’। ফেসবুকে ‘জুনায়নাস ড্রিমস’ নামের পেজে এমন পোস্ট দেখে সবার মধ্যে এক হাহাকার তৈরি হয়। অনেকে পোস্টের নিজে মন্তব্য করেন। এই পেজ শামীমা মমতাজের। ৩০ জুলাই বুধবার এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শামীমা বললেন, ‘আমার বাচ্চা না। কপি-পেস্ট করেছি।’ কপি-পেস্ট করেছেন তা পোস্টের কোথাও উল্লেখ করেননি কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাহলে পোস্টটি ডিলিট করে দিচ্ছি।’
এখন পর্যন্ত দুটি পরিবারে একাধিক শিশু মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তাহমিনা আক্তার-আশরাফুল ইসলাম দম্পতির মেয়ে তাহিয়া আশরাফ নাজিয়া মাইলস্টোন স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। আর এই দম্পতির ছেলে আরিয়ান আশরাফ নাফি ছিল তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এই দুই ভাই–বোন এক দিন আগে-পরে মারা গেছে। রাজধানীর কামারপাড়ায় রাজাবাড়ি দক্ষিণপাড়া কবরস্থানে এই ভাই-বোনকে পাশাপাশি কবর দেওয়া হয়েছে।
উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনীর বিধ্বস্ত যুদ্ধবিমান।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ইলস ট ন স ক ল ব ম ন ব ধ বস ত বলছ ন ঘটন য় র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।
আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগেএ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।
সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।
এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।
আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে